ভারতীয় এক গৃহবধূ এখন এশিয়ার সেরা ধনী নারী
চীনের ইয়াং হুইয়ানকে ছাড়িয়ে এশিয়ার সেরা ধনী নারী হয়েছেন গৃহিণী থেকে বিশাল ব্যবসায়ীক সাম্রাজ্যের দায়িত্বভার কাঁধে তুলে নেওয়া সাবিত্রী জিন্দাল। চীনে আবাসন খাতের সংকটে সম্পদমূল্য কমায় পিছিয়ে পড়েছেন ইয়াং, অন্যদিকে এগিয়ে গেছেন সাবিত্রী।
গত শুক্রবার প্রকাশিত ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুসারে, ভারতের ইস্পাত ও শক্তি খাতে অন্যতম বৃহৎ সংস্থা- জিন্দাল স্টিল ও পাওয়ারে অংশীদারিত্বের সুবাদে এখন তার মোট সম্পদমূল্য ১১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সে তুলনায় প্রায় অর্ধেক কমে ইয়াং এর সম্পদ দাঁড়িয়েছে ১১ বিলিয়ন ডলারে। তিনি স্বদেশী ফেং হংওয়েই এর থেকেও সম্পদে পিছিয়ে এশিয়ার তৃতীয় সেরা ধনী নারী হয়েছেন ব্লুমবার্গের সাম্প্রতিক তালিকায়।
জিন্দাল স্টিল ও পাওয়ারের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সাবিত্রীর স্বামী ওম প্রকাশ জিন্দাল।
২০০৫ সালে এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি। সাবিত্রী জিন্দালের বয়স তখন ৫৫ বছর। আর পাঁচটা মানুষ যে বয়সে অবসরের পরিকল্পনা করেন, সেই বয়সে এসে তিনি ব্যবসার মারপ্যাঁচ শিখতে শুরু করেন। আজ ৭২ বছর বয়সে সাবিত্রী এশিয়ার সেরা সম্পদশালী নারীর আসন দখল করেছেন।
১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারতে জিন্দাল গ্রুপ তৃতীয় বৃহৎ ইস্পাত উৎপাদক। পাশাপাশি বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সিমেন্ট ও অবকাঠামো খাতেরও বৃহৎ সংস্থা।
মহামারিকালে সাবিত্রী জিন্দালের সম্পদমূল্যে নাটকীয় হেরফের দেখা গেছে। যেমন মহামারির শুরুতে ২০২০ সালের এপ্রিলে তার সম্পদ নেমে আসে ৩২০ কোটি ডলার সমমানে। তবে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় ২০২২ সালের এপ্রিল নাগাদ তা উন্নীত হয় ১৫.৬ বিলিয়ন ডলারে।
গত দুই বছরে তার সম্পদ বেড়েছিল ১২ বিলিয়ন ডলার। এক পর্যায়ে যা দাঁড়ায় ১৮ বিলিয়নে। ফোর্বসের ভারতীয় ধনীদের ২০২১ সালের তালিকায় তিনি সপ্তম স্থান অধিকার করেন।
১৯৫০ সালে জন্ম নেওয়া সাবিত্রী বড় হয়েছেন আসামের তিনসুকিয়া শহরে। ১৯৭০ সালে ওম প্রকাশ জিন্দালের সঙ্গে তার বিয়ে হয়, তাদের ঘরে নয় সন্তান রয়েছে।
স্বামীর মৃত্যুর পর তার বিশাল ব্যবসার দায়িত্ব হাতে নেন সাবিত্রী। স্বামীর অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করার প্রতিজ্ঞা করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তার ছেলেমেয়ে এবং অনুগত কর্মীরাও। সব মিলিয়ে অল্প সময়ে ব্যবসার কাজটা বেশ ভালোই শিখে ফেলেন সাবিত্রী। এর পাশাপাশি রাজনীতিতেও সক্রিয় তিনি।
- সূত্র: ব্লুমবার্গ, হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টাইমস