রাশিয়ার তেল বাদ দিতে পারছে না ইউরোপ, ডিজেল আমদানি ২৩ শতাংশ বাড়িয়েছে
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের সঙ্গে আছে পশ্চিমারা। দিয়েছে রাশিয়ার জ্বালানি তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা। আর তাতেই হয়েছে উল্টো-বিপদ। এখন ইউরোপে জ্বালানি সংকট হয়েছে তীব্র। ফলে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কম হওয়া দূর; বেড়েছে মস্কোর কাছ থেকে ডিজেল আমদানি।
গত মাসে (জুলাইয়ে) ইউরোপের দেশগুলির রাশিয়ান উৎসের ডিজেল আমদানি ১৩ শতাংশ বেড়েছে (মাসিক হিসাবে)।
জ্বালানি পণ্যের লেনদেন অনুসরণকারী সংস্থা- ভরটেক্সা মঙ্গলবার (২ আগস্ট) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটির মতে, জুলাইয়ে ইউরোপ বিপুল রাশিয়ান ডিজেল আমদানি করে। এমনকী তাদের রাশিয়ান ডিজেল আমদানি- অন্য উৎসের ডিজেল আমদানির চেয়ে বেশি হয়েছে দৈনিক প্রায় ২ লাখ ব্যারেল।
সার্বিকভাবে ২০২১ সালের জুলাইয়ের চেয়ে যা ২৩ শতাংশের মতো উচ্চহারে বেড়েছে (বার্ষিক হিসাবে)।
ইইউ চেয়েছিল রাশিয়ার জ্বালানি রাজস্বে ধস নামাতে। কিন্তু, তাদের সদস্য দেশগুলির রাশিয়ান তেল কেনার এই বুভুক্ষ চাহিদা প্রমাণ করে–মস্কোকে শায়েস্তা করার ওই পরিকল্পনা কত বড় ভুল ছিল।
এর আগে ২০২২ সালের শেষ নাগাদ ৯০ শতাংশ রাশিয়ান অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড) আমদানি কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয় ইইউ সদস্যরা। তবে বিশ্ববাজারে জ্বালানির চড়া মূল্য এবং অন্য তেল-রপ্তানিকারক দেশের উৎপাদনে সীমাবদ্ধতা থাকায়–ইউরোপকে নিজস্ব চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে শুরু থেকেই।
ডিজেলের মূল্য বাড়তে থাকায়- জ্বালানি পরিশোধনাগারগুলিও চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে উৎপাদন করতে কূল পাচ্ছে না। ভরটেক্সার প্রধান অর্থনীতিবিদ ডেভিড ওয়েলশ বলেন, 'ইইউ (রাশিয়ান) ডিজেল আমদানিতে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে–তা পুরোপুরি মেনে চলতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে'।
এদিকে ইউরোপের সিংহভাগ ডিজেল আসে মহাদেশটির বিভিন্ন রিফাইনারিতে পরিশোধিত ক্রুড থেকে। করোনা মহামারির শুরুতে চাহিদায় ধস নামলে, লোকসান কমাতে তখন অনেক রিফাইনারির সক্ষমতা হ্রাস করা হয়। সেই হ্রাস করা সক্ষমতা এই মুহূর্তে আবার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে চাহিদা অনুযায়ী ক্রুড পরিশোধন করাটা হয়ে পড়েছে চ্যালেঞ্জিং।
তার ওপর আবার ইউরোপ বর্তমান ব্যবহারের পাশাপাশি আসন্ন শীত উপলক্ষেও জ্বালানি মজুদ করছে। সেজন্যও বেড়েছে ডিজেলের চাহিদা।
- সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার