পার্টিতে নাচ-গানের ভিডিও ফাঁস, ব্যাপক সমালোচনার মুখে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
বন্ধুদের সাথে পার্টিতে নাচ-গানের ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর বিতর্কের মুখে পড়েছেন ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া ফুটেজে সানা মারিনকে তার কিছু বন্ধুর সাথে, যাদের মধ্যে ফিনল্যান্ডের কয়েকজন তারকাও রয়েছেন- পার্টিতে একসাথে গান গাইতে ও নাচতে দেখা গেছে।
ভিডিওটি প্রকাশের পর বিরোধী দলগুলোর কাছ থেকে তীব্র সমালোচনার তীর ধেয়ে এসেছে সানার দিকে। এমনকি একজন নেতা প্রধানমন্ত্রীর মাদক পরীক্ষা' করানোরও দাবি জানিয়েছেন।
তবে এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৩৬ বছর বয়সী সানা। তিনি জানিয়েছেন, তিনি শুধুমাত্র মদ্যপান করেছিলেন এবং বেশ 'উৎফুল্লতার সাথে' নেচেছিলেন।
সানা মারিন একসময় ছিলেন বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী; যদিও সেই খেতাব এখন চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বরিকের দখলে। তবে নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কখনোই রাখঢাক করেননি সানা। প্রায়ই বিভিন্ন পার্টি বা সঙ্গীত উৎসবে দেখা ক্যামেরাবন্দী হয়েছেন তিনি।
তবে গত বছর করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে আসার পরেও তিনি ক্লাবে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ এলে ক্ষমা চান সানা। গত সপ্তাহেই জার্মান সংবাদমাধ্যম 'বিল্ড' সানা মারিনকে 'বিশ্বের সবচেয়ে উৎফুল্ল-উদ্দীপনাসম্পন্ন প্রধানমন্ত্রী' হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
এদিকে ফাঁস হওয়া ভিডিওর ব্যাপারে বৃহস্পতিবার সানা মারিন বলেন, তিনি জানতেন তার ভিডিও করা হচ্ছে, কিন্তু সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ায় তার খারাপ লেগেছে।
"আমি গান গেয়েছি, নেচেছি, পার্টি করেছি- এগুলো সবই বৈধ কাজ। আমি কখনোই এমন পরিস্থিতিতে পড়িনি যেখানে মাদকের কারবার ছিল বা আমি মাদক সেবন করেছি", বলেন সানা মারিন।
কিন্তু বিরোধীদলীয় নেত্রী রিক্কা পুরা একথা মানতে নারাজ। তার দাবি, সানা মারিনের মাদক পরীক্ষা করানো হোক, কারণ তাকে নিয়ে সন্দেহের মেঘ জমে রয়েছে।
অন্য বিরোধী দলের সদস্যরাও এই প্রসঙ্গে সানাকে ছেড়ে কথা বলছেন না। তারা একই সঙ্গে যেমন প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করছেন, তেমনই দেশের সংবাদমাধ্যমকেও একহাত নিচ্ছেন। অনেকের ভাষ্যে, সংবাদমাধ্যম প্রধানমন্ত্রীর কোনো ভুলত্রুটি নিয়ে খবর প্রকাশ করে না।
তবে এসবের জবাবে প্রধানমন্ত্রী নিজে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, "আমার পরিবার আছে। কাজের জায়গা আছে। এছাড়া আমার নিজের মতো করে বন্ধুদের সঙ্গে কাটানোর মতো সময়ও আছে। আমার বয়সের অন্যদের যা যা থাকে, তার সবই আমারও আছে। সেটাই স্বাভাবিক।"
৩৬ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, তিনি মনে করেন না যে তার আচরণে পরিবর্তন আনা দরকার। "আমি আগেও যা ছিলাম, এখনও সেই মানুষটিই আছি। পরেও তাই থাকবো। আর সেটা সবাই মেনে নেবেন বলেই আমার প্রত্যাশা।
সানা মারিন ২০১৯ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন এবং দলের সমর্থন ধরে রেখেছেন।
সূত্র: বিবিসি