কর কমানোর তিন দিনের মধ্যেই জ্বালানি তেলের নতুন দাম: বিপিসি চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ বলেছেন, অগ্রিম কর এবং আমদানি শুল্ক কমানোর কারণে জ্বালানি তেলের দাম কতটুকু কমবে সেটা আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে জানা যাবে।
"তবে এই সুবিধা ভোক্তা পর্যায়ে কবে নাগাদ পৌঁছাবে তা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করবে", আজ (২৯ আগস্ট) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান বিপিসি চেয়ারম্যান।
রোববার (২৮ আগস্ট) ডিজেল ও চাল আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক কমিয়েছে সরকার।
হ্রাসের পর ডিজেলের আমদানি শুল্ক ২২.৭৫ শতাংশে নেমে এসেছে। আর চালের আমদানি শুল্ক নেমে এসেছে ১৫.২৫ শতাংশে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের সবচেয়ে আলোচিত ইস্যুগুলোর একটি জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি। এই মূল্যবৃদ্ধির ফলে ইতিমধ্যে মূল্যস্ফীতির হার আরও বেড়ে গেছে। এর জেরে মানুষ পড়েছে চরম দুর্ভোগে। মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার লক্ষ্যে ডিজেলের আমদানিতে সরকার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কর কমিয়েছে, পুরো জ্বালানি তেলের মধ্যে যার ব্যবহার প্রায় ৭৩ শতাংশ।
কর হ্রাসের ফলে ডিজেলনির্ভর পরিবহন, সেচসহ অন্যান্য সেবায় ব্যয় কমার সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে ডিজেলের দাম বাড়ায় ইতিমধ্যেই যেসব সেবা ও পণ্যের দাম বেড়েছে, তা কতটুকু কমবে কিংবা কমলেও তা আমদানি ব্যয় হ্রাসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কমবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
তবে পেট্রোল, অকটেনের মতো অন্যান্য জ্বালানি তেলের আমদানি কর কমানো হয়নি। সে কারণে পেট্রোল ও অকটেনচালিত গাড়ি কর হ্রাসের সুবিধা পাবে না।
গত ৬ আগস্ট সরকার জ্বালানি তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণে বাড়ানোর পর বিষয়টি নিয়ে দেশব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হলে সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে জ্বালানির দাম কমানোর আশ্বাস দেওয়া হয়। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীও বিশ্ববাজারে জ্বালাানির দাম কমলে দেশের বাজারে দাম কমানোর আশ্বাস দেন।
ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া গণপরিবহনসহ সব ধরনের পণ্যবাহী পরিবহন ডিজেল ব্যবহার করে পরিচালিত হয়। ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যে ওইসব পরিবহনের ভাড়া বেড়েছে। এর ফলে বেড়েছে প্রায় সব ধরনের পণ্যমূল্য।
সরকার প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, প্রতি লিটার অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা এবং প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা নির্ধারণ করেছে। কেরোসিনের দামও ৪২.৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে।
বর্তমানে তরল জ্বালানি আমদানিতে প্রায় ৩৪ শতাংশ কর আরোপ করা হয়। এছাড়া বিতরণ পর্যায়ে অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ এবং ব্যবসায়িক পর্যায়ে আরও ২.৫ শতাংশ আদায় করা হয়।
এই কর ব্যবস্থার আওতায় সরকার প্রতি বছর তরল জ্বালানি খাত থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা এবং এর চেয়েও বেশি রাজস্ব আয় করে।