চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে আমদানি পণ্য খালাসে সময় লাগে ১১ দিনের বেশি
আমদানি পণ্যবাহী জাহাজ বন্দরে আসার পর তা খালাস করা পর্যন্ত চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে গড়ে ১১ দিন ৬ ঘণ্টা সময় লাগে।
ঢাকা কাস্টমস হাউজে তা সাড়ে সাত দিন এবং বেনাপোল কাস্টমস হাউজে সময় লাগে ১০ দিনের বেশি।
ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ (এনবিআর)-এর এক স্টাডিতে এসব তথ্য উঠে এসেছে। কম্প্রিহেনসভ টাইম রিলিজ স্টাডি (টিআরএস)- শীর্ষক ওই জরিপ গত মে মাসে তিনটি কাস্টমস হাউজের বিভিন্ন অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে করা হয়।
রবিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে টিআরএস রিপোর্ট ডিসেমিনেশন প্রোগ্রামে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের একটি রেকর্ডেড বক্তব্য প্রচার করা হয়।
মূলত বন্দরে পণ্যবাহী জাহাজ আসার পর ওই পণ্য বন্দর থেকে ছাড় করা পর্যন্ত কত সময় লাগে - সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য গবেষণাটি করা হয়। এতে সহযোগিতা করে ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশন (ডব্লিউসিও)।
দেশের মোট আমদানি-রপ্তানির ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের মাধ্যমে। গবেষণায় উঠে এসেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্য ক্লিয়ার করতে যে সময় লাগে, তার প্রায় তিন-চতুর্থাংশ সময় লাগে আমদানিকারক ও তাদের প্রতিনিধি (সিএন্ডএফ এজেন্ট)-দের কারণে।
১৪ শতাংশ সময় লাগে পোর্ট অথরিটির এবং ৮ শতাংশ সময় লাগে কাস্টমস সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে।
এর আগে ২০১৫ সালে এনবিআর একটি টিআরএস করেছিলো তিনটি কাস্টমস হাউজের পারফর্মেন্স মূল্যায়ন করার জন্য। এই টিআরএস-এর ফলাফল অনুযায়ী, তখন আমদানি পণ্য ছাড় করতে সময় লাগতো গড়ে ১১ দিন ৯ ঘণ্টা আর রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে প্রায় ৫ দিন।
সেই বিবেচনায় গত সাত বছরে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে পণ্য ক্লিয়ারেন্সের ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রগতি হয়নি। অবশ্য ওই টিআরএস ডব্লিওসিওতে গৃহীত হয়নি।
এবারের টিআরএস সংস্থাটির নিয়ম মেনে কম্প্রিহেনসিভ ওয়েতে করা হয় এবং তা গৃহীত হয় বলে এনবিআরের একজন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান।
তবে এবারের টিআরএস আমদানি পণ্যের জন্য করা হলেও রপ্তানি পণ্যের ছাড় করার ক্ষেত্রে কত সময় লাগে, সে স্টাডি করা হয়নি।
এ সময় বলা হয়, আমদানি পণ্যবাহী জাহাজ বন্দরে আসার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের হার্ডকপি সাবমিট করার শর্ত রয়েছে, যাতে অনেক সময় ব্যয় করে আমদানিকারকের প্রতিনিধি তথা সিএন্ডএফ এজেন্টরা।
টিআরএস সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন এনবিআর- টিআরএস সেন্ট্রাল কমিটির আহ্বায়ক আবদুল হাকিম এবং চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের জয়েন্ট কমিশনার মো. তোফায়েল আহমেদ।
তবে নিএন্ডএফ এজেন্ট প্রতিনিধিরা কাস্টমস প্রসিডিউরে দেরি হওয়ার জন্য কাস্টমস হাউজগুলোতে সার্ভার সঠিকভাবে কাজ না করাকে দায়ী করেন।
তবে মোট সময়ের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ সময় কেন আমদানিকারক ও ব্রোকারদের (মূলত সিএন্ডএফ এজেন্ট) কারণে লাগছে, তার কারণ অনুসন্ধান করার আহবান জানান ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তান্তিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-র পরিচালক আসিফ আশরাফ। তিনি এ লক্ষ্যে আরেকটি গবেষণা করার জন্য এনবিআরের প্রতি আহ্বান জানান।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে এনবিআরের সিনিয়র কর্মকর্তা ছাড়াও আমদানি রপ্তানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্টএবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।