অ্যান্টিক সংগ্রহ যাদের নেশা!
ব্রিটিশদের দুইশ' বছরের শাসন, কিংবা তারও আগে এ উপমহাদেশে ছিল সুলতানি, মোগল শাসনামল, পুরো সময় জুড়েই বাংলা ছিল কখনও স্বাধীন, কখনও নবাবদের অধীনে, আবার অঞ্চলভেদে জমিদারি শাসনও ছিল প্রচুর। ব্রিটিশ শাসনামল শেষ হয়েছে সেই কবেই, নিয়ে গেছে এদেশের অজস্র অমূল্য রত্নভান্ডার। এসব কথা অজানা নয় কারোরই। এমনকি, ৫০ বা ৬০ বছর কিংবা নিতান্তই ২০ থেকে ৩০ বছর আগেও নিত্যদিনের ব্যবহার্য যেসব আসবাব বা তৈজসপত্র শোভা পেতো ঘরের কোণে, আধুনিক ও পরাধুনিকতার এই যুগে এসে সেসব জিনিসপত্রের অস্তিত্বও আর দেখা যায় না বললেই চলে।
হারিয়ে যাওয়া পুরোনো সেইসব দিনগুলোর টুকরো টুকরো স্মৃতিচিহ্ন বেশিরভাগই জায়গা করে নিয়েছে জাদুঘরে। তবে হারিয়ে যাওয়া অনেক স্মৃতি আবার বেশ বহাল তবিয়তে শোভা পাচ্ছে সৌখিন সংগ্রহকারীদের ঘরে।
অ্যান্টিকস, ভিন্টেজেস, কালেকটিবেলস ক্যাফে বাংলাদেশ নামে এমনই এক অ্যান্টিক ও ভিন্টেজ সংগ্রহকারী একটি গ্রুপের কথা জানাবো আজ। তুলে ধরবো, ফেসবুকে গড়ে ওঠা চার হাজার সদস্যের সেই গ্রুপটির সংগ্রহকারী ও তাদের সংগ্রহের পেছনের নানা গল্পও।
সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় কী, দাম কেমন!
অ্যান্টিক গ্রুপটি ঘুরলেই দেখা মিলবে ডাকটিকিট, পয়সা থেকে শুরু করে রুপা, তামা ও পিতলের তৈজসপত্র। কারুকার্য করা ফুলদানি, বাটি, গ্লাস, গ্রামোফোন কিংবা ১৯ শতকের পুরোনো ক্যাসেট প্লেয়ারেরও দেখা মেলে অহরহ। সঙ্গে দেশি-বিদেশি কয়েন ও মুদ্রা তো রয়েছেই। এ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে যেসব পণ্য, তার ভেতর ঐতিহাসিক মূল্য প্রচুর, এমন সংখ্যাও কিন্তু কম নয়।
বেলি রুপা বা জার্মান সিলভারে কারুকার্য করা কাঁটাচামচের সেটের কথা না বললেই নয়। সাড়ে ৭ ইঞ্চি লম্বা, মোট ১২টি চামচের এ সেটটি ব্রিটিশ পিরিয়ডে অভিজাত পরিবারগুলোতে ব্যবহৃত হতো, যার একেকটিরই ওজন ৫১ গ্রাম বলে জানালেন গ্রুপটির অ্যাডমিন মোহাম্মদ মিনহাজুল ইসলাম।
কয়েন বা মুদ্রা-দেশীয় মুদ্রা বা কয়েনের দাম কিছুটা কম। তবে ব্রিটিশ আমল বা পাকিস্তান আমলের মুদ্রার দাম স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা বেশি। তবে মুদ্রার দাম কত হবে তা অনেকাংশেই নির্ভর করে বিক্রেতার জানাশোনার অপর।
ইরাক, ইরান, উজবেকিস্তান, তুর্কেমেনিস্তান, সিরিয়া, জাপান, আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের কয়েন ও টাকা পাওয়া যায় গ্রুপটিতে। ৭০ টাকা থেকে শুরু ১৫শ' টাকাও হাঁকানো হয়েছে মুদ্রাগুলোর দাম।
পিতলের তৈজসপত্র-বছর ত্রিশেক আগেও প্রায় প্রত্যেক ঘরে ঘরেই শোভা পেতো পিতলের তৈরি ফুলদানি থেকে শুরু করে বিভিন্ন শোপিস। শুধু কী শোপিস, প্লেট, গ্লাস, পাতিল, গোলাপদানি, পান তৈরির সরঞ্জামসহ আরও কতকিছু যে রয়েছে এ তালিকায়, এখন যার চল নেই বললেই চলে।
বরং সংগ্রহকারীদেরই বেশি আগ্রহ এসব জিনিসের প্রতি। এর নমুনা মিলল অ্যান্টিকসের গ্রুপটিতেই। ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে বেশিরভাগ পণ্যই বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকার ভেতর। বেশিরভাগই ভিন্টেজ আমলের (১০০ বছরের কম, ৪০ মতানুক্রমে ৪০ বছরের বেশি) হওয়ায় এগুলোর চাহিদা খুব একটা নয়। চাহিদার তুলনায় বিক্রির আগ্রহই বেশি।
ক্যামেরা-গ্রুপটিতে ক্যামেরা সংগ্রাহকদের বেশ শক্ত একটি অবস্থান রয়েছে। এরমধ্যে যে সবগুলো বিক্রির জন্য তা নয়।
দাউদ করিম ডেভিড নামে এক সংগ্রাহক এক ফেসবুক পোস্টে জানান, তার সংগ্রহে রয়েছে ১৯২৭ সালের জাইস আইকন ক্যামেরা, ১৯৬৩ সালের ইয়াশিকা লিন্সক রেঞ্জ ফাইন্ডার ক্যামেরা, পঞ্চাশের দশকের আগফা ক্ল্যাক ক্যামেরা।
এছাড়া পৃথিবীর প্রথম কমার্শিয়াল এস এল আর, পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট এস এল আর ক্যামেরা, এমঙ্কি ২য় মহাযুদ্ধে আমেরিকা জেতার পর ওয়ার ট্রফি হিসাবে দেশে নিয়ে যাওয়া ১৯৪৫ এর রোলিফ্লেক্স ক্যামেরাও রয়েছে তার কাছে। তবে এগুলোর কোনোটাই বিক্রয়ের জন্য নয় বলেও জানান তিনি। পেশায় ফটোগ্রাফার হলেও ক্যামেরা সংগ্রহকারী হিসেবে তার অবদান কোনো অংশেই কম নয়।
দেবব্রত দাস নামে গ্রুপটির আরও এক সংগ্রাহক জানালেন, তার সংগ্রহে রয়েছে একশটিরও বেশি ক্যামেরা, তবে সেগুলোও বিক্রির উদ্দেশ্যে নয়।
দেব-দেবতাদের মূর্তি- গ্রুপটিতে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বেশকিছু মূর্তিও দেখা যায়। ৬ থেকে ৭ ইঞ্চির এসব মূর্তিগুলোর ভেতর সনাতন ও বৌদ্ধধর্মের দেব-দেবতাদের সংখ্যাই বেশি। ৩শ' থেকে শুরু করে ২ হাজারের ভেতর এসব মূর্তিগুলো বিক্রি হতে দেখা যায়।
কথা হচ্ছিল গ্রুপটির আরেক প্রতিষ্ঠাতা ইরফান মাহিমের সঙ্গে। অ্যান্টিকস, ভিন্টেজেস, কালেকটিবেলস ক্যাফে বাংলাদেশ নামে গ্রুপটি খোলেন প্রায় ২ বছর আগে এক সংগ্রহকারী বন্ধু মিলে। বর্তমানে প্রায় ৪ হাজার সদস্য রয়েছে। কোনটা অ্যান্টিক ও কোনটা ভিন্টেজ, একই সঙ্গে কালেকটিবলসের সঙ্গে পার্থক্য বোঝানোর জন্য এ ধরনের নাম রাখেন গ্রুপটির।
কোনোকিছু যদি ১০০ বছরের পুরোনো হয়, তবে সেক্ষেত্রে তাকে অ্যান্টিক বলা হয়। তবে ভিনটেজ নিয়ে রয়েছে বিতর্ক, কেউ বলেন ২০ বছর, কেউ বলেন ভিন্টেজ হতে হলে কমপক্ষে হতে হবে ৪০ বছর। এমনটি জানাচ্ছিলেন তিনি।
গ্রুপটি যেন ফিরিয়ে নেবে সেই ছোটবেলায়!
তবে অ্যান্টিক, ভিন্টেজ যাইহোক, গ্রুপটিতে ঢুকলেই ফিরে পাবেন হারিয়ে যাওয়া সেইসব দিনগুলো। ছোট্টবেলায় যেসব কয়েন, ডাকটিকিট নিয়ে খেলেছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা, সে শৈশবকে একঝলকে যেন ফিরে পাবেন মুহূর্তেই। ৯০ দশকে জন্ম নেওয়া টগবগে তরুণের যেমন এ গ্রুপে ঢুকে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে, একইভাবে ৬০ দশকে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরও রয়েছে নস্টালজিক হয়ে পড়ার সুবর্ণ সুযোগ।
গ্রুপটি খোলার পেছনে রয়েছে ব্যতিক্রমী একটি ভাবনা। অ্যান্টিক নিয়ে আগ্রহ রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের জন্য সম্প্রতি গ্রুপটিতে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সবার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ও সংগ্রহের নেপথ্য কাহিনী জানাতেই করা হয় সেই আয়োজন।
ফলে একদিক থেকে যেমন অন্যের সংগ্রহ সম্পর্কে জানার সুযোগ রয়েছে, তেমনি এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সংগ্রহের পেছনের গল্পও জানা যাবে বলে জানালেন গ্রুপটির অ্যাডমিন ইরফান।
তার মুখেই শুনলাম, এ পর্যন্ত ২০ হাজার টাকার কেনাবেচা হয়েছে গ্রুপটিতে।
অভিজ্ঞতার ঝুলি
কথা হলো এস কে দাস নামে গ্রুপটির এক সংগ্রহকারীর সঙ্গেও।
জানালেন সংগ্রহ করতে গিয়ে তার বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার কথা। তখন তেজগাঁ ফ্লাইওভারের নিচের এলাকায় ভাড়া থাকতেন। একদিন গলির চা দোকানে চা খাওয়ার সময় কথা বলছিলেন পুরোনো জিনিসপত্র সংগ্রহের বিষয়ে। হঠাৎ করে এক অপরিচিত ভদ্রলোক জানালেন, তাকে বেশ পুরোনো আমলের একটি গ্রামোফোন যোগাড় করে দিতে পারবেন, তবে সময় লাগবে।
শুনে বেশ আগ্রহী উঠলেন, রাজিও হয়ে গেলেন। যথাসময়ে গ্রামোফোন নিয়ে হাজির সেই ব্যক্তি। সাধের সেই গ্রামোফোন হাতে পাওয়ার পর জানলেন চৌর্যবৃত্তি নাকি ওই `ভদ্রলোকের' পার্ট টাইম জব!
সংগ্রহ করতে গিয়ে এরকম আরও অনেক মজার মজার অভিজ্ঞতার কথা জানালেন এস কে দাস। তার ভাষ্যমতে, মধুর অভিজ্ঞতা! জানালেন, প্রায় ১৪-১৫ বছর আগের কথা। গিয়েছিলেন বেড়াতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। সেখানে একটা অসাধারণ বার্মিজ কাঠের তৈরি যুগল ভাস্কর্য পেলেন; বিক্রেতা ৭০০০ টাকার মতো দাম চাইলো। দামাদামি শেষে ৫,৪০০ টাকায় যখন রফা হলো, সেসময় খাবার, হোটেল ভাড়া দেবার বা ফিরে আসার টাকাও ছিল না।
শেষ পর্যন্ত আত্মীয়দের সহায়তায় ফেরেন তিনি। ২০০৮ সালের দিকেও এরকম একটি ঘটনার মুখে পড়েন তিনি। খুলনা শহরের আদালত রোডে লেস-ফিতা বিক্রেতার কাছ থেকে পয়সা সংগ্রহ করে সেগুলোর দাম মিটাতে পারছিলেন না, তাই কলিগকে ডেকে এনে টাকা ধার নেওয়ায় সে তাকে পাগল ভাবছিল!
কথায় কথায় জানালেন, চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানার একটি গ্রামে বেড়ে ওঠেন এসকে দাস। যেই গ্রামে বেড়ে উঠেছিলেন, সেখানে ছিল মস্ত এক জমিদার বাড়ি। গ্রামের ভেতরে হওয়ায় অবাধ যাতায়াত ছিল সেই জমিদার বাড়িতে। আর জমিদার বাড়ি মানেই সিংহ দরজা, পুরোনো চুন-সুড়কির দালান, পুরোনো দিনের আসবাবপত্র আর বাসন-কোসন।
তখন ছোট্ট সেই লিটনের মনে দাগ কেটে যায় আরাম কেদারায় বসে অভিজাত ভঙ্গিতে বসে জমিদার পরিবারের বাবু নরেশ চৌধুরীর ব্যবহৃত দারুণ কারুকাজ করা সেই হুক্কা বা গড়গড়ার লম্বা নল! বলে চললেন, নিজেদের বাড়িতেই পুরোনো বেশকিছু বাসনকোসন ভীষণ ভালো লাগত তার, তবে সেগুলো ব্যবহারের অনুমতি ছিল না মোটেই। হয়তো সেখান থেকে পুরোনো জিনিসপত্র সংগ্রহের শখটা ভেতরে রয়ে যায়!
এস কে দাসের পড়াশোনার শুরুটা ছিল গ্রামে– মাধ্যমিক পাশ করার পর কুমিল্লায় চলে যান, পরে ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক করেন। এরপর ঢাকায় চলে আসেন চাকরি নিয়ে, পাশাপাশি মার্কেটিংয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
কত পুরোনো সংগ্রহ!
`বই আর সংগ্রহ দুই ক্ষেত্রেই বাছ-বিচার ছাড়া সংগ্রহ করি। চোখে লাগলে–মনে ধরলে – আয়ত্বে থাকলেই হলো', এমনটি জানালেন তিনি। জানালেন, মৌর্য যুগের বা তার পুরোনো আমলের কিছু কয়েন আছে তার কাছে। তবে কার্বন টেস্টের সুযোগ না থাকায় কয়েনটির সঠিক সময় জানাতে পারলেন না তিনি।
তবে সংগ্রহে থাকা দুয়েকটি কয়েন ৫০০ থেকে ৭০০ বছরের পুরোনো হতে পারে বলেও ধারণা তার। লৌহ নির্মিত হায়দ্রাবাদের চার মিনারের প্রতিকৃতিটিও ৩০০-৪০০ বছরের পুরোনো হতে পারে। লাক্ষা দিয়ে তৈরি বুদ্ধ, ওপিয়াম পাইপ, কারুকাজ করা হুকোর মতো বেশকিছু সংগ্রহ রয়েছে তার, যেগুলো তুলনামূলক বেশি দাম দিয়ে কেনা আর সচরাচর পাওয়াও যায় না। তবে সাধারণত কোনোকিছু বিক্রি করেন না এস কে দাস।
সহস্রাধিক বইয়ের বিশাল সংগ্রহ!
বই সংগ্রহের ক্ষেত্রে অ্যান্টিক হতেই হবে, অথবা ভিনটেজ এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নাই। ভালো লাগলেই সংগ্রহ করেন এমনটি জানালেন এস.কে দাস। এ পর্যন্ত হাজারখানেক বা তারও বেশি। রয়েছে পুঁথি, ভাই গিরীশ চন্দ্র সেন অনুদিত কোরান শরীফের পুরোনো সংস্করণ, ঝিনুক পুস্তিকালয়ের রবীন্দ্র রচনাবলীর ২-৩ খণ্ড, রাহুল সাংকৃত্যায়নের "আমার জীবন যাত্রা-র পাঁচ খণ্ড"।
বাংলাদেশে বেশিরভাগ সংগ্রহের উৎস কী!
পুরোনো দালান, জমিদার বাড়ি, সাধারণ পুরোনো বাড়ি থেকে শুরু করে তালা-চাবি, ভাঙারির দোকান যেকোনো কিছুই হতে পারে একজন সংগ্রাহকের সোর্স। সোর্স হিসেবে চোরের খ্যাতি নিয়ে তো আগেই বলা হয়েছে। তবে অনেক সংগ্রাহকের চোর হয়ে ওঠাও যে অস্বাভাবিক নয়, তা জানালেন ইরফান।
বরং বিচিত্র শখ পূরণ করতে গিয়ে বছরের পর বছর শ্রম দেওয়া কালেক্টরদের জীবনে এ ধরনের চোরের মুখোমুখি হতে হয় অহরহই। এমনটি জানাচ্ছিলেন পেশায় দন্ত চিকিৎসক ইরফান। তবে সংগ্রহকারী হিসেবে তিক্ত ঘটনা তার জীবনেও নেহায়েত কম নয়। একবার তো সংগ্রহ করতে গিয়ে চুরি নয়, রীতিমতো ছিনতাইয়ের শিকার হতে বসেছিলেন।
জানালেন, বছর চারেক আগে পুরোনো ঢাকায় এক সংগ্রাহকের কাছ থেকে সংগ্রহ শেষে ফিরছিলেন, পথের মধ্যে হুট করে বেশ কয়েকজন আটকে দিলো তাকে। কী করেন, পেশা কী, সবকিছু জানানোর পর তারা সর্বশেষ সংগ্রহের বস্তুটিই চেয়ে বসলেন। পরে জানা গেল, আরেক সংগ্রাহক তার এই অবস্থার জন্য দায়ী! শেষমেষ `জান বাঁচানো ফরজ' নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে সংগ্রহের জিনিসটি গচ্চা দিয়ে তবেই ছাড়া পেয়েছিলেন।
জানালেন, পুরোনো আমলের একটি সিলমোহর যোগাড় করতে এক সংগ্রহকারীর পেছনে ঘুরেছেন প্রায় চার বছর।
যখন হাতে পেলেন সিলমোহরটি, সেসময়ের অনুভূতির কথা ভাষায় প্রকাশের মতো নয় জানিয়ে তিনি বলেন, তবে বহু কষ্টে পাওয়া এ সিলমোহরটি কখনোই বিক্রি করবেন না তিনি।
বাংলাদেশি সংগ্রহকারীদের অবস্থা
বাংলাদেশে সংগ্রাহকদের অবস্থা নিয়ে কিছুটা যেন হতাশ এস কে দাস ও ইরফান মাহিম।
এস কে দাস জানালেন, আমাদের দেশে খুব কম পরিমাণে অ্যান্টিক পাওয়া যায়। কিন্তু ভিন্টেজ বা পুরোনো জিনিস যদি "অ্যান্টিক`` নামে বিক্রি বা শুভেচ্ছা মূল্যে হাতবদল হয় তাহলে বুঝতে হবে – এটা স্রেফ না বুঝে বা লোভে পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর সাথে এর সাথে জানাশোনা বা ভালোবাসার সম্পর্ক নেই।
ইরফান মাহিমের কণ্ঠেও একই সুর। তারমতে, সৌন্দর্যবোধ বা সৌখিনতা থেকে অনেকেই এসব সংগ্রহ করেন। তবে এসব বিষয়ে পড়াশোনা না থাকায়, কোন সময়ের জিনিস তা সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতে পারেন না। ফলে দেশীয় সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন সম্ভব হয় না। অন্যদিকে, সারা বিশ্বের সংগ্রহকারীরা নিজ নিজ দেশের সংস্কৃতি সভ্যতা সম্পর্কে পড়াশোনা করে এসব জিনিস সংরক্ষণ করেন।
তবে একটা সময় ঠিকই এদেশের মানুষ সঠিক ইতিহাস জেনে, পড়াশোনা করে এরপর সংগ্রহ করবেন এমনটি আশা তার। আর এ লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে তার সংগ্রহের গ্রুপটি।