সাফের রানি সাবিনা
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতেছে বাংলার অদম্য মেয়েরা। দেশের ফুটবল ইতিহাস নতুন করে লেখার মিশনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি হিসেবে প্রায় সব পুরস্কার উঠেছে বাংলাদেশের এই গোল মেশিনের হাতেই।
দলনেতা তিনি, উদযাপনের প্রথম ক্ষণে তার হাতেই ওঠে শিরোপা। অধিনায়ক হিসেবে এরচেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কি-ই বা হতে পারে। উৎসবের ক্ষণে একক পুরস্কারেও সাবিনার হাত ভরে গেছে। দুটি হ্যাটট্রিকসহ ৮ গোলে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
কেবল সর্বোচ্চ গোলদাতাই নন, টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও আদায় করে নিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। সাবিনার স্বপ্নের টুর্নামেন্টে দুর্বার ছিলেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা। পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে বাংলাদেশের জাল সুরক্ষিত রাখা রুপনা মাত্র একটি গোল হজম করেছেন।
দারুণ পারফরম্যান্সে টুর্নামেন্ট সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জিতেছেন তিনি। এবারের আসরে ৫ ম্যাচে ২৩টি গোল করেছে বাংলাদেশ, নিজেদের জালে বল জড়িয়েছে মাত্র একবার। সেটাও ফাইনালে এসে। যদিও গোল হজম না করার পেছনে বেশি অবদান ছিল বাংলাদেশের দারুণ রক্ষণভাগের। তবে দারুণ কিছু সেভ করে নিজেদের জাল সুরক্ষিত রাখার কাজটি ভালোভাবেই পালন করেছেন রুপনা।
সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতা সাবিনা ফাইনালে গোল পাননি। শিরোপার লড়াইয়ে জোড়া গোল করেছেন কৃষ্ণা রানী সরকার, একটি গোল করেন শাসসুনন্নাহার। তবে আগের চার মাচের তিনটিতে দুর্বার ছিলেন সাবিনা, করেন ৮ গোল। প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে ৩-০ গোলের সাবিনা করেন দুই গোল।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬-০ গোলে জেতার ম্যাচে সাবিনা করেন হ্যাটট্রিক। ভারতের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে গোল পাননি সাবিনা। সেমি-ফাইনালে ভুটানের বিপক্ষে ৮-০ গোলের জয়ে টুর্নামেন্টে নিজের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক করেন তিনি। ঢাকা ছাড়ার আগে সাবিনা বলেছিলেন, শিরোপা নিয়ে ফিরতে পারলে নিজেকে সুখী ভাববেন। সেদিক থেকে সাবিনা হয়তো এখন পৃথিবীরই সবচেয়ে সুখী মানুষ।