হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন নয়: বরিশালের বিভাগীয় সমাবেশে মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবারো বলেছেন যে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে হবে না।
শনিবার (৫ নভেম্বর) বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বর্গীর রূপ নিয়েছে। ভোটের অধিকার একবার নয়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই ভোট চুরি করে। তারা সন্ত্রাস করবে, চুরি করবে- এটা হয় না।
'এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়, আমাদের অবস্থান একদম স্পষ্ট। এই সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে; পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে। এরপর নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হবে, আর তাদের অধীনেই নির্বাচন হবে'।
ফখরুল বলেন, বিএনপি যতদিন ক্ষমতায় ছিল ততদিন দেশে উন্নয়ন হয়েছে। এই বরিশালেও অনেক উন্নয়ন হয়েছে বিএনপির আমলে। আওয়ামী লীগ বিএনপির সব অর্জনকে ধ্বংস করেছে।
'আমরা দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলাম; যা আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে এক দলীয় শাসন কায়েম করেছে'।
তিনি দাবি করেন,আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে, আবার আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেই মামলা দেওয়া হচ্ছে।
সরকার উন্নয়নের কথা বলে বাহাদুরি দেখায়, অথচ এখন দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ চরম দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করছে। 'আজকে দেশে বুদ্ধিজীবীদের গ্রেপ্তার করা হয়, কেউ নিরাপদ নয়। কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের নামে আওয়ামী লীগ হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে'- বলেন বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন করতে হবে। এখন উন্নয়ন ছাড়া কিছুই দেখা যায় না! কিন্তু বাস্তবে গেলে কোনো কিছুতেই হাত দেওয়া যায় না। আমরা মুক্তি চাই, এ থেকে পরিত্রাণ চাই। আমাদের এই আন্দোলন বিএনপির জন্য নয়; খালেদা জিয়ার জন্য নয়; তারেক রহমানের জন্য নয় কিংবা আমাদের নেতাদের জন্য নয়। এ আন্দোলন জাতি ও দেশের প্রয়োজনে সমগ্র জাতিকে রক্ষা করার জন্য।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, 'বরিশাল মিটিং-মিছিলের শহর। সারাদেশ আজ জেগে উঠেছে। আমি নেটওয়ার্ক খুঁজে পাচ্ছি না। মিটিং সম্প্রচারের কোন ফ্রিকোয়েন্সি নেই। সভা সম্প্রচার না করতে সব টেলিভিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চলমান সভাকে কেন্দ্র করে আমাদের সকল নেতাকে দ্রুত গ্রেফতার করা হচ্ছে'।
"দেশ এখন যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে- তা আমরা চাই না। কোথায় গেল আপনার উৎপাদিত বিদ্যুৎ। দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা আয় করেছেন। এমন কোনো জায়গা নাই– যেখান থেকে আওয়ামী লীগ টাকা লুট বা চুরি করে না'।
এদিকে নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা আগেই ১১টার দিকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত শেষে বরিশালের সমাবেশ শুরু হয়।
বরিশালের ছয়টি জেলার সকল উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা এই সভায় অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানায় বিএনপির বরিশাল মহানগরের আহবায়ক কমিটি।
বিএনপি নেতারা ধারণা করছেন, সমাবেশে কমপক্ষে ২ লাখ নেতাকর্মী ও সমর্থক যোগ দিয়েছে।