ফারদিন হত্যা মামলায় রিমান্ডে বান্ধবী, সিসিটিভি পর্যালোচনা করছে ডিবি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ হত্যা মামলায় তার বান্ধবী আয়াতুল্লাহ বুশরাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এছাড়া অপরাধীদের ধরতে নগরীর বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই-বাছাই করছে তারা।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, 'এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে পারিবারিক, সামাজিক কোনো ঝামেলা ছিল কি না, তা খোঁজ করা হচ্ছে। ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে, আমরা এখনই বলতে পারছি না, একটু সময় লাগবে। আমাদের দুই-তিনটি টিম কাজ করছে। পারিপার্শ্বিক বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত করা হচ্ছে।'
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন বাদী হয়ে ওই তরুণীসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সকালে মামলার এজাহার আদালতে পৌঁছালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান এজাহারটি গ্রহণ করে রামপুরা থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ গোলাম মউলাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। পরে মামলাটির তদন্ত ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এছাড়াও মামলাটি তদন্ত করে আগামী ১২ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত ৪ নভেম্বর রাতে বান্ধবী বুশরাকে রামপুরা ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে নামিয়ে দেন ফারদিন। এরপর থেকে ফারদিনের আর কোনো হদিস না পায়নি তার পরিবার। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ৫ নভেম্বর রামপুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন। পরে সোমবার সন্ধ্যার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, গত চার বছর ধরে ওই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে ফারদিনের। পাশাপাশি তারা একটি ডিবেট ক্লাবেরও সদস্য। ওই তরুণী ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। ৪ নভেম্বর দুজনে একসঙ্গে ঘোরার পর রাত সোয়া ১০টায় ওই তরুণী বাসায় ফেরেন বলে পুলিশকে তথ্য দিয়েছেন তিনি।
তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, 'সিসিটিভি ফুটেজে আমরা ৪ তারিখ ফারদিনকে বনশ্রীতে বান্ধবী বুশরার মেসের দিকে যেতে দেখেছিলাম। কিন্তু ওই এলাকা ছেড়ে যাওয়ার কোনো ফুটেজ এখনো খুঁজে পাইনি। আমরা কাছাকাছি এলাকার ফুটেজ সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। মামলায় বুশরাকে আসামি করার অন্যতম কারণ এটা।'
এদিকে এ ঘটনাকে 'হত্যাকাণ্ড' ধরেই তদন্ত কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, 'বুয়েটের যে শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তার সবশেষ লোকেশন আমরা গাজীপুর পেয়েছিলাম। গাজীপুর থেকে পরবর্তীতে কীভাবে লাশ শীতলক্ষ্যায় এল, এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'
তিনি বলেন, এটি একটি হত্যাকাণ্ড এবং সে বিষয়টি সামনে রেখে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট পেলে পরবর্তীতে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।