‘বৈশ্বিক মন্দার সময়ে ঢাকা অ্যাপারেল এক্সপোর আয়োজন একটি সাহসী উদ্যোগ’
পোশাক খাতের বৈশ্বিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তাদের এক ছাদের নীচে নিয়ে এসেছে তৈরী পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। দেশের পোশাক খাতের টেকসই প্রবৃদ্ধি আর ইতিবাচক ভাবমূর্তি বাড়াতে এই উদ্যোগ হলেও সংশ্লিষ্টরা বলেন, বৈশ্বিক মন্দার এই সময়ে বিশ্বের বড় বড় উদ্যোক্তাদের নিয়ে এই আয়োজন অনেক বড় সাহসী উদ্যোগ। বাংলাদেশ এক সময় সেলাই আর জাহাজীকরণ করলেও এখন উদ্ভাবনেও যে কাজ করছে তাই দেখে যাবেন ক্রেতারা।
তারা বলেন, বৈশ্বিক মন্দায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের একই ছাদের নীচে নিয়ে এসেছে এ উদ্যোগ। ফলে সংকট সম্ভাবনায় পরিণত হবে এমন আশা 'ঢাকা অ্যাপারেল এক্সপো ২০২২'তে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের।
সোমবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) সপ্তাহব্যাপী 'মেড ইন বাংলাদেশ উইক' এর তৃতীয় দিনে এমনটাই দেখা গেছে। বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের (বিএই) সহযোগিতায় তৈরী পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ প্রদর্শনীসহ এই মেগা ইভেন্টের আয়োজন করছে। ১২ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই ইভেন্ট। এতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিশ্বের প্রায় ৫৫০ ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিনিধিকে। এদের অধিকাংশই ঢাকায় এসেছেন। পোশাক খাতকে টেকসই করতে নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে হাজির হয়েছেন তারা। এতে বাদ পড়েনি নকশা, জ্বালানী সাশ্রয়ী আর পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি।
আয়োজনটি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এপিক গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান রঞ্জন মাহতানি বলেন, '১৯৮৫ সাল থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসায় আছি। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ভালো করছে বাংলাদেশ। ভবিষ্যত সম্ভাবনাও বেশ ভালো। মন্দায় বৈশ্বিক উদ্যোক্তাদের একই ছাদের নিচে নিয়ে আসার এই আয়োজন সময়ের সাহসী উদ্যোগ।'
রঞ্জন মাহতানি বলেন, 'এই আয়োজনে উপস্থিত হয়েছে বিশ্বের বড় বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠান। এ সাফল্যের পথ ধরে মন্দা মোকাবেলা করে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। ২০৩১ সালে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্য অর্জনও সম্ভব বলে আশা করছি। তবে এজন্য ছোট ছোট পদক্ষেপ নিতে হবে। মৌলিক পোশাক থেকে বের হয়ে উচ্চমূল্যের পোশাকে রপ্তানিতে যেতে হবে। সেই সম্ভাবনাও আছে। এজন্য ভিয়েতনাম-চীনের ঘাটতি পূরণ করা গেলে সহজেই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারে বাংলাদেশ।'
গতকাল দুপুরে ঢাকা অ্যাপারেল এক্সপোর উদ্বোধন করেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। এই আয়োজনকে বৈশ্বিক ক্রেতাদের মহাসম্মেলন উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'দেশের অর্থনীতিতে ডলার সংকট মোকাবেলায় অবদান রাখবে এই আয়োজন। এছাড়া বৈশ্বিক মন্দা মোকাবেলা করতে প্রচলিত বাজারের পাশাপাশি অপ্রচলিত বাজার নিয়ে কাজ করছে বিজিএমইএ। এছাড়া বিশ্ববাজারে বর্তমান হিস্যা দ্বিগুণ করার পথ নকশা নিয়ে কাজ করছি।' তবে এ জন্য সরকারের নীতিসহায়তা চেয়েছেন ফারুক হাসান।
বাংলাদেশ এক সময় সেলাই আর জাহাজীকরণ করলেও বর্তমানে উদ্ভাবনেও কাজ করছে উল্লেখ করে ডার্ড গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার বিশাল কুমার বলেন, প্রকৃতি থেকে নেওয়া নকশা নিয়ে তৈরী করা পরিবেশবান্ধব পোশাক তৈরী করে তার প্রতিষ্ঠান। তাদের এসব নকশা ক্রেতারা স্ক্যান করে ব্যবহার করতে পারে। এর ফলে কম সময়ে দ্রুত নকশা পেয়ে যায় ক্রেতা। অর্ডার এবং পোশাক সরবরাহে সময় সাশ্রয়ী হয় বলে জানান বিশাল।
ডার্ডের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, তার প্রতিষ্ঠান উচ্চমূল্যের পণ্য তৈরী ও উদ্ভাবনে প্রতিবছর ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করছে।