‘আন্দোলনকারীদের মনোবল ভেঙে দিতেই ফারদিনের নামে মাদক সংশ্লিষ্টতা আনা হয়েছে’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিহত শিক্ষার্থী ফারদিন নুর পরশের বাবা কাজী নুর উদ্দিন বলেছেন, তার হত্যার তদন্ত ও বিচার দাবিতে যারা মানববন্ধন ও আন্দোলন করছে, তাদের মনোবল, নৈতিক মূল্যবোধ ভেঙে দিতে ফারদিনের নামে মাদক সেবনের সংশ্লিষ্টতা আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, "আমার ছেলে মাদক তো দূরের কথা, সিগারেটের ধোঁয়াও সহ্য করতে পারতো না। আমার তিন ছেলের কেউই সিগারেট খায় না। আর তার সম্পর্কে বলা হচ্ছে সে নাকি ফেনসিডিল সেবন করতো। এটি কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য না।"
সোমবার (১৪ নভেম্বর) বুয়েট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফারদিন হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
প্রসঙ্গত, গত ৪ নভেম্বর নিখোঁজের পর ৭ নভেম্বর শীতলক্ষ্যা নদীতে ফারদিনের লাশ পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক, তার পরিবার ও সহপাঠীদের দাবি, ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে। শরীরে আঘাতের চিহ্নও পাওয়া গেছে। হত্যার প্রসঙ্গে পুলিশের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে তার মাদক সংশ্লিষ্টতার সংবাদ প্রকাশিত হয়।
মানববন্ধনে বুশরা ও আয়েশার সঙ্গে ফারদিনের সম্পর্কের বিষয়ে ফারদিনের বাবা বলেন, "তাদের আমরা বা আমাদের পরিবারের কেউ চিনতো না। বুশরার বিরুদ্ধে অভিযোগের কারণ, আমার ছেলে ঘর থেকে তার মাকে যা বলে বের হতো তার থেকে এক পয়েন্ট ভিন্ন কিছু করতো না। পরদিন তার পরীক্ষা ছিল। সে বলে বেরিয়েছে যে হলে গিয়ে গ্রুপ স্টাডি করবে। কিন্তু আমরা জানতে পারি সে নাকি রাত ১০টা পর্যন্ত বাইরে ওই মেয়ের সঙ্গে ছিল। তাই আমাদের সর্বশেষ সাসপেক্ট ছিল সে। সেজন্যই আমরা তার কথা বলেছি।"
তিনি আরও বলেন, "আমার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা থানায় জিডি করি। এরপর জিডি থেকে লাশ পাওয়া পর্যন্ত আমরা তদন্তের কোনও অগ্রগতি সম্পর্কে জানি না। এর মাঝে কী হয়েছে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। জিডির প্রেক্ষিতে যে তদন্ত তাতে আমরা সন্তষ্ট না।"
মানববন্ধনে পাঠ করা বিবৃতিতে বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, "ইতোমধ্যে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের সাতদিন অতিবাহিত হয়েছে। প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, এখন পর্যন্ত প্রকৃত হত্যাকারী চিহ্নিত হয়নি এবং হত্যার কারণ এখনও পরিপূর্ণরূপে উদঘাটিত হয়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তের ওপর আমরা আস্থাশীল।"
তারা আরও বলেন, "সত্যপ্রকাশে গণমাধ্যম বরাবর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। দুঃখজনকভাবে গত কয়েকদিন কিছু গণমাধ্যমে ফারদিনকে নিয়ে কিছু আপত্তিকর ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচারিত হয়েছে যা আমাদের হতাশ করেছে। বুয়েট সাংবাদিক সমিতির মাধ্যমে ইতোমধ্যে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি ও সত্য তুলে ধরেছি। আমরা আশা করবো ভবিষ্যতে গণমাধ্যমগুলো সংবাদ প্রকাশে সতর্ক হবে।"