সব ফেলে খেলা দেখতে বসেছিলেন বুয়েনোস আইরিসের বাসিন্দারা, ভগ্নহৃদয়ে ফিরলেন নিত্যকার কাজে
কাতার বিশ্বকাপ ২০২২-এ আর্জেন্টিনার প্রথম ম্যাচ দেখার জন্য মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) সব কাজকর্ম ফেলে উৎসাহ নিয়ে বসেছিলেন আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনোস আইরিসের বাসিন্দারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লিওনেল মেসিরা ভক্তদের হৃদয়ভঙ্গ করলেন। খবর এএফপি'র।
'এটা কেউই আশা করেনি। প্রথম তিনটা ম্যাচ আমাদের খুব সহজেই জেতার কথা ছিল। কিন্তু পুরো ব্যাপারটা জটিল হয়ে গেল,' এএফপিকে বলেন রাজধানীর এক ক্যাফেতে বিষণ্ণ মনে টেলিভিশনের সামনে বসে থাকা কার্লোস কুয়েরা। খেলা শেষ হওয়ার পর খাঁখাঁ করছিল ক্যাফেটি।
'এটা আঘাতের মতো এসে লেগেছে। এখন শনিবারে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে ম্যাচটির জন্য আরও বেশি চাপ অনুভূত হচ্ছে,' বলেন এ ভগ্নহৃদয় ভক্ত।
আর্জেন্টিনার সময় সকাল সাতটায় সৌদি আরব- আর্জেন্টিনার খেলা শুরু হয়েছিল। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে অবশ্য নিয়মিত দৃশ্যে ফিরে গেছে রাজধানী শহরের ব্যস্ততা।
বিশ্বকাপ উপলক্ষে বুয়েনোস আইরিসে আর্জেন্টিনার পতাকায় বর্ণিল হয়ে উঠেছে। খেলা উপলক্ষে শহরের মেয়রের দপ্তর শহরের স্মৃতিস্তম্ভের সামনে একটি দানবাকৃতির বল স্থাপন করেছে।
সেন্ট্রাল কোরিয়েন্টেস সড়কে একটি ক্যাফে খেলা দেখার জন্য বড় পর্দার ব্যবস্থা করেছে। সেখানে খেলা দেখেছেন ডেলিভারি ড্রাইভার, ট্যাক্সি ড্রাইভার ও বাস ড্রাইভারেরা। সড়কে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে একটি গোলের দেখা পাওয়ার জন্য মুখিয়ে ছিলেন তারা।
মেসির প্রথম গোলের পর ক্যাফেটির কর্মী, বিক্রয়কর্মী, ও ক্রেতারা লাফিয়ে উঠে উদযাপন করেছিলেন। তবে ভিআর ব্যবস্থাকে গালি দিতেও ছাড়েননি তারা।
'আর্জেন্টিনা বেশি আত্মবিশ্বাসী ছিল। অন্যদিকে বিপক্ষদল জানত তারা বড় একটি দলের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছে। সেজন্য তারা তাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে খেলেছে। আর তার ফলটাও পেয়েছে তারা,' মন্তব্য করেন আরেক ভক্ত নর্বেত্তো প্রোজম্যান।
৭৫ বছর বয়সী গুস্তাভো লিল বলেন, 'আমাদের দল প্রথমার্ধে দারুণ খেলেছে। কিন্তু ভিআর আমাদের বিপক্ষে ছিল। প্রযুক্তির সঙ্গে যখন ফুটবলকে জুড়ে দেওয়া হয়, তখন সেটা আর ফুটবল থাকে না। এ বিশ্বকাপ দিয়েগো ম্যারাডোনার অভাব টের পাচ্ছে।'
তবে হারলেও এখনো আশাবাদী এ আর্জেন্টাইন ভক্ত। তিনি জানান, প্রথম ম্যাচ শেষ ম্যাচের মতোই কঠিন এবং তার এখনো কোচের ওপর ভরসা আছে।