মার্কিন তুলায় তৈরি আরএমজির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার চায় ঢাকা
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্ক হার কমানোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের তুলায় তৈরি হওয়া আরএমজি রপ্তানিতে দেশটির কাছে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়ে আগামী ৬ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠেয় ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিমেন্ট (টিকফা) কাউন্সিলের বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দেবে বাংলাদেশ।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশনের বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল প্রোডাক্ট রেজিস্ট্রেশনের প্রসিডিউর সহজ করার অনুরোধ করবে ঢাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে তুলা রপ্তানি বাড়াতে আগ্রহী। এজন্য টিকফার বৈঠকে বাংলাদেশের আরোপিত কটন ফিউমিগেশন প্রত্যাহারের বিষয়টি এজেন্ডায় রেখেছে ওয়াশিংটন।
এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ প্রোডাক্টশন শেয়ারিং অন কটন বেজড আরএমজি এজেন্ডা নির্ধারণ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা থেকে বাংলাদেশে তৈরি আরএমজি পণ্য রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র যাতে শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা দেয়, সে বিষয়ে জোরালো যুক্তি তুলে ধরবে ঢাকা।
টিকফার ৬ষ্ঠ বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল অংশ নেবে।
টিকফা সভায় যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (ডিএফসি) থেকে অর্থায়ন সুবিধা পাওয়ার প্রস্তাব করবে।
মার্কিন বাজারে জিএসপি (জেনারালাইজড সিস্টেম অফ প্রেফারেন্স) সুবিধা স্থগিত করায় বড় একটু সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে বাংলাদেশের। বেসরকারি খাতের জ্বালানি, স্বাস্থ্যসেবা, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং প্রযুক্তি প্রকল্পের জন্য ইউএস ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (ডিএফসি) এর ৬০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল অ্যাক্সেস করতে পারে না বাংলাদেশ।
রানা প্লাজা ভবন ধসের পর শ্রম অধিকার এবং কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তায় গুরুতর ত্রুটির বিষয়টি উল্লেখ করে ২০১৩ সালের জুন মাসে বাণিজ্য সুবিধা স্থগিত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এখনও সেই জিএসপি সুবিধা ফেরত না পাওয়ায় ডিএফসি এর ঋণ নিতে পারেনা বাংলাদেশ।
২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ডিএফসি উদীয়মান বাজারে চাকরির সুযোগের লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করা ছোট পরিসরের ব্যবসা ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়ন করে থাকে।
ডিএফসি'র বিনিয়োগগুলো উচ্চ মান মেনে চলে এবং পরিবেশ, মানবাধিকার এবং কর্মীদের অধিকারকে সম্মান করে।
অন্যদিকে, ট্রি নাট (ওয়ালনাট, আমন্ড) এর ট্যারিফ কমানো, এগ্রিকালচারাল বায়োটেকনোলজি এবং বাংলাদেশে বীজ রপ্তানি সুবিধা পেতে সিড এ্যাক্ট প্রভিশন নিয়ে আলোচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া, ড্রাফট ডাটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট, ড্রাফট রেগুলেশন ফর ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া, ওটিটি প্লাটফর্মস এবং অন্যান্য ডিজিটাল মেজার্সের মতো বিষয়গুলো এজেন্ডায় অন্তর্ভূক্ত করেছে দেশটি।
এছাড়া, শ্রমিক অধিকার নিয়ে বেশ কিছু এজেন্ডা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে রয়েছে ফ্রিডম অব অ্যাসোসিয়েশন এন্ড কালেক্টিভ বার্গেইনিং, সেইফ এন্ড হেলদি ওয়ার্কিং এনভায়রনমেন্ট, লেবার রাইটস ইন ইপিজেড এবং চাইল্ড লেবার এন্ড ফোর্সড লেবার।
এছাড়া, ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস নিয়ে আলোচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র।
অন্যদিকে, কোয়ালিটি সার্টিফিকেশন ইনফ্রাট্রাকচার বিল্ডিং এর ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের টেকনিক্যাল অ্যাসিসটেন্স চাবে বাংলাদেশ।