কাতারে আফ্রিকার গর্জন, ইকুয়েডরকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় সেনেগাল
কাতারে আফ্রিকার আশার বাতিঘর হিসেবে এসেছিল সেনেগাল। আফ্রিকান কাপ অফ নেশন্সের চ্যাম্পিয়নরা সেই প্রত্যাশা কী দুর্দান্তভাবেই না পূরণ করেছে! নক-আউট পর্বে যেতে হলে ইকুয়েডরের বিপক্ষে জয় ছাড়া বিকল্প ছিল না সাদিও মানে বিহীন সেনেগালের সামনে।
ড্র করলেই নক-আউট নিশ্চিত হতো ইকুয়েডরের। প্রচন্ড চাপের মুখেও লাতিন আমেরিকানদের হারিয়ে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গী হিসেবে গ্রুপ রানার্স-আপ হয়ে শেষ ষোলোয় উঠে গেছে আলিউ সিসের সেনেগাল। এই নিয়ে মাত্র দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপের নক-আউট পর্বে উঠল তারা।
কাতারের খলিফা স্টেডিয়ামে জিততেই হবে এমন সমীকরণ সামনে নিয়ে ইকুয়েডরের বিপক্ষে খেলতে নামে সেনেগাল। ইকুয়েডরের জন্য ড্র হলেই নক-আউটে যাওয়ার জন্য সেটি যথেষ্ট হতো। তবে খেলার শুরু থেকেই দুই দলই গোলের খোঁজে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে।
জয়ের তাড়না সেনেগালেরই বেশি থাকায় আক্রমণ করার ক্ষেত্রে তারাই এগিয়ে ছিল। কিন্তু ইকুয়েডরের রক্ষণ দেয়াল ভাঙ্গতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল সিসের শিষ্যদের। অবশেষে প্রথমার্ধ শেষ হবার ১ মিনিট আগে পেনাল্টি পায় সেনেগাল।
বক্সের ভেতর ইসমালিয়া সারকে ফাউল করেন ইকুয়েডরের হিকাপিয়ে। পেনাল্টির বাঁশি বাজাতে কার্পণ্য করেননি রেফারি ক্লেমেন্ত তুরপিন। নিজের জেতা পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে দেন সার। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই অর্ধবিরতিতে যায় সেনেগাল।
গোল খেয়ে বাদ পড়ে যাওয়ার শংকায় থাকা ইকুয়েডর বিরতির পর খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে। ফলাফল, ৬৭ মিনিটে ম্যাচে সমতা ফেরান কাইসেদো। মাত্র ২১ বছর বয়সে গোল করে বিশ্বকাপে ইকুয়েডরের ইতিহাসে সবথেকেক কম বয়সী গোলদাতা বনে যান তিনি।
কিন্তু ইকুয়েডরের আনন্দ স্থায়ী হয় মাত্র ৩ মিনিট। সেট পিস ডেলিভারি থেকে দারুণ ভলিতে সেনেগালকে আবারও এগিয়ে দেন অধিনায়ক কুলিবালি। যেটি কিনা আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার প্রথম গোল!
সেই গোলেই শেষ পর্যন্ত ইকুয়েডরকে হারিয়ে নক-আউট পর্বে উঠে যায় বিশ্বকাপে আফ্রিকান আশার প্রদীপ সেনেগালিজরা।
ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে ইকুয়েডর অনেক এগিয়েই ছিল, কিন্তু ৬২% সময় বলের দখল রেখেও সেনেগালের ১৪ গোল প্রচেষ্টার বিপরীতে ইকুয়েডরের প্রচেষ্টা ছিল মাত্র ৯ টি।
এই ম্যাচ হেরে ৩ ম্যাচে ১ জয়, ১ পরাজয় এবং ১ ড্র নিয়ে ৪ পয়েন্ট পেয়ে 'এ' গ্রুপে তৃতীয় হয়ে বাড়ির পথ ধরতে হচ্ছে ইকুয়েডরকে। অপরদিকে ২ জয় এবং ১ হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নেদারল্যান্ডসের পেছনে শেষ করে নক-আউট নিশ্চিত করেছে সেনেগাল।
নক-আউট পর্বে সেনেগালের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান কিংবা ওয়েলসের যেকোনো এক দল।