ওয়েলসকে উড়িয়ে গ্রুপসেরা ইংল্যান্ড
৬৪ বছর পর বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ। উপলক্ষ্যটা স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিলেন গ্যারেথ বেলরা। কিন্তু সে পথে হাঁটা হলো না তাদের, শেষ হলো তাদের জয়হীন বিশ্বকাপ মিশন। ওয়েলসের শেষ ষোলোয় ওঠার সামান্যতম আশা গুঁড়িয়ে দিলো প্রতিবেশি দেশ ইংল্যান্ড। মার্কাস রাশফোর্ড, ফিল ফোডেনদের দিনে দাপুটে ফুটবলে বড় জয় তুলে নিয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে শেষ ষোলোয় উঠলো ইংলিশরা।
মঙ্গলবার আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে 'বি' গ্রুপের ম্যাচে ওয়েলসকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র সাক্ষাতটি দুঃসহ স্মৃতি হয়ে উঠলো ওয়েলসের। এই জয়ে ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলো হ্যারি কেইনের দল। এই গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোয় উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়েলস এবারের আসরে একটি ম্যাচে ড্র করেছে, বাকি দুই ম্যাচে হেরেছে।
পুরো ম্যাচে ওয়েলসকে শাসন করে খেলেছে ইংল্যান্ড। ৬৫ শতাংশ সময় বল নিজেদের পায়ে রেখে টানা আক্রমণ করে যাওয়া ইংল্যান্ড গোলমুখে ১৮টি শট নেয়, এর মধ্যে ৭টি ছিল লক্ষ্যে। ওয়েলসের নেওয়া ৭টি শটের একটি ছিল লক্ষ্যে।
প্রতিবেশি দুই দেশের লড়াইয়ের প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়। নক-আউট পর্বে যেতে এক পয়েন্ট পেলেই চলতো ইংল্যান্ডের, বড় ব্যবধানে জয় ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা খোলা ছিল না ওয়েলসের সামনে।
প্রথম ৪৫ মিনিটে নিজেদের শক্তিমত্তার পরিচয় দিলেও গোল পায়নি ইংল্যান্ড। অনেকটা খোলসের ভেতর বন্দী ছিল ওয়েলস। কেইন-ফোডেনদের কড়া মার্কিংয়ে রেখে নিজেদের ডি-বক্সের ভেতর খুব একটা ভিড়তে দেয়নি ওয়েলস, তাই ৭৫% সময় বলের দখল রেখেও গোলের দেখা পায়নি গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা।
প্রথমার্ধে ইংল্যান্ডের গোলমুখী প্রচেষ্টা ছিল ৯ টি, যার মধ্যে ২ টি লক্ষ্যে রাখতে পেরেছিল তারা, বিপরীতে ২ বারের প্রচেষ্টায় লক্ষ্য ইংল্যান্ডের গোলমুখে রাখতে পারেনি গ্যারেথ বেলের ওয়েলস।
প্রথমার্ধের ৩৮তম মিনিটে উল্লেখযোগ্য আক্রমণটি করে। জুড বেলিংহ্যাম ও জর্ডান হেন্ডারসন নিজেদের মধ্যে বেশ কয়েকবার বল আদান-প্রদান করেন ডি-বক্সের বাইরে। এরপর বেলিংহ্যাম খুঁজে নেন ফোডেনকে। ২০ গজ দূর থেকে ফোডেনের নেওয়া শট চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে।
বিরতি থেকে ফিরেই শাসন শুরু করে ইংলিশরা। ৫০তম মিনিটে ফ্রি-কিক পায় তারা। সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন মার্কাস রাশফোর্ড। ওয়েলস গোলরক্ষক ড্যানি ওয়ার্ডকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান তিনি। গোল হজম করে যেন খেই হারায় প্রথমার্ধে নিজেদের জাল অক্ষত রাখা ওয়েলস।
এক মিনিট পরই আরেক গোল হজম করে তারা। এবার ইংলিশদের গোলদাতা ফিল ফোডেন। প্রতিপক্ষের ভুলের ফায়দা তুলে অনায়াসে ফাঁকা গোলপোস্টে বল জালে জড়ান তিনি। ছোট বক্সে ফোডেনকে বলের যোগান দেন ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইন।
ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়া ইংল্যান্ড ৬৮তম মিনিটে তৃতীয় গোলের দেখা পায়। ক্যালভিন ফিলিপসের উঁচু করে বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নেন ক্ষীপ্রগতির ফুটবলার রাশফোর্ড। ডান প্রান্ত থেকে ডি-বক্সে ঢুকে ওয়ার্ডের পায়ের ফাঁক দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।