ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২: গ্রুপ পর্বের যতো বড় পরাজয়
এবারের বিশ্বকাপ জন্ম দিয়েছে বেশকিছু ঐতিহাসিক মুহূর্তের। শক্তিশালী দলগুলোর পাশাপাশি এবার কম শক্তিশালী দলগুলো ফুটবল দুনিয়াকে আনন্দ দিয়েছে, উচ্ছ্বাসিত করেছে; বিমোহিত করেছে। যাদের কাছে দর্শকদের প্রত্যাশা অনেক কম ছিলো তারাও বীরদর্পে খেলেছে। বিশ্বকাপের আসরে যে কোনো দল-ই অপরাজেয় নয় এটাই প্রমাণ করেছে কাতার বিশ্বকাপ।
এবারের টুর্নামেন্টে প্রথম পর্বের খেলায় জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার মত দলগুলোকে সবচেয়ে কম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দল হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, ফুটবল বোদ্ধাদের ধারণাকে বদলে দিয়েছে দলগুলো।
কাতার বিশ্বকাপে ফেভারিট দল হয়েও দ্বিতীয় পর্বে যাওয়ার লড়াইয়ে যেসব দল ব্যর্থ হয়ে দর্শক ও সমর্থকদের হতাশ করেছে তাদের কথা উঠে এসেছে মার্কার এক প্রতিবেদনে।
জার্মানি
প্রতি বিশ্বকাপে যে দলগুলো বিশ্বকাপের ফেভারিট দল হয়ে উঠে, জার্মানি তাদের মধ্যে অন্যতম। দৃঢ় মানসিক শক্তি সম্পন্ন জার্মান দলের মনোবল বুলেটও ভেদ করতে পারে না বলে মন্তব্য করা হয়; আর এ মনোবলই তাদের চারটি বিশ্বকাপ জিততে সাহায্য করেছে।
কিন্তু সবসময় শীর্ষে থাকা সম্ভব নয় কোনো দলের পক্ষেই। ২০১৪ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে জার্মানদের ভাগ্য সহায় হয়নি। সেবার তারা এতটাই খারাপ খেলে যে গ্রুপ পর্বই পেরোতে পারেনি। জিততে অভ্যস্ত একটি দলের জন্য এটা ছিলো কঠিন ধাক্কা।
এবারও কাতার বিশ্বকাপে শক্তিশালী দল নিয়ে হাজির হয়েছিলো জার্মানি। গ্রুপ ই-তে স্পেন, জাপান এবং কোস্টারিকার সাথে খেলেছিলো ইউরোপের দলটি।
তবে, গ্রুপ ফেভারিট হিসেবে স্পেন ও জার্মানি থাকলেও উভয় দলকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের পর্বে কোয়ালিফাই করেছে জাপান। ম্যাচের শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করেও রাউন্ড অব সিক্সটিনে যেতে পারেনি চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। এক জয়, এক হার, এবং এক ড্র নিয়ে গ্রুপের তৃতীয় অবস্থানে বিশ্বকাপ ছাড়তে হয়েছে তাদের।
কাতার
বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ কাতারের অবস্থা ছিলো সবচেয়ে শোচনীয়। যদিও কাতার বিশ্বকাপ জিতবে বলে কেউ আশা করেনি। কিন্তু তারা আশা করেছিলো অন্তত একটি ম্যাচ হলেও জিতে উৎযাপনের সুযোগ পাবে।
কিন্তু সে আশা পূর্ণ হয়নি দলটির। গ্রুপ এ তে নেদারল্যান্ডস, সেনেগাল এবং ইকুয়েডরের সাথে খেলে প্রায় সব ম্যাচ হেরেছে আরবের দেশটি। শূন্য পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শেষ স্থানে বিশ্বকাপ শেষ করেছে তারা।
বেলজিয়াম
রাশিয়া বিশ্বকাপে একটি তরুণ দল নিয়ে এসে বিশ্বকাপের সেমিফাইনলে হেরে সেকেন্ড রানার্স আপ হয় বেলজিয়াম। এবারে সেই দলটি তুলনামূলক পরিপক্ক। আশা করা হচ্ছিলো তারা বিশ্বকাপের ফাইনাল পর্যন্ত যেতে পারবে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত আশ্চর্যজনকভাবে গ্রুপ এফ-এ চ্যাম্পিয়ন হয় মরক্কো এবং রানার্স আপ হয় ক্রোয়েশিয়া। এক জয়, এক হার এবং এক ড্র নিয়ে বিশ্বকাপ ছাড়তে হয় বেলজিয়ামকে।
উরুগুয়ে
এবার শক্তিশালী দল নিয়েও ধরাশয়ী হয়েছে উরুগুয়ে। প্রথম দুই ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়া ও পর্তুগালের বিপক্ষে শূন্য গোল ছিলো উরুগুয়ের। মাত্র এক পয়েন্ট নিয়ে ঘানার বিপক্ষে তৃতীয় খেলায় নামে তারা। পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য জয়ের বিকল্প ছিলো না। সাথে চাপ ছিল বেশ কয়েকটি গোল করার।
শেষ পর্যন্ত, উরুগুয়ে দুটি গোল করেছে, ম্যাচও জিতেছে। কিন্তু কোরিয়ার সাথে পয়েন্ট সমান সমান হয়ে বাঁধে বিপত্তি। দুই দলের গোল ব্যবধান সমান। কিন্তু এশিয়ান দলটি উরুগুয়ের থেকে দুটি গোল বেশি করায় তারা গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে পর্তুগালের সাথে উঠে এসেছে দ্বিতীয় পর্বে।