রাজধানীর সড়কে সাধারণ মানুষের ফোন, আইডি তল্লাশি করছে আওয়ামী লীগ কর্মীরা
আজ রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর সমাবেশকে ঘিরে রাস্তায় সাধারণ মানুষের ফোন ও আইডি তল্লাশি করতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কিছু কর্মীকে।
যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদেরকে লোকজনের পরিচয়পত্র ও ফোন পরীক্ষা করতে দেখা গেছে। আজ সকালে নীলক্ষেতে দেখা গেছে এ দৃশ্য।
এমনকি, কেউ সরকার বিরোধী কার্যকলাপের সাথে জড়িত কিনা তা জানতে পথচারীদের মোবাইল ফোন, ফেসবুক প্রোফাইল এবং মেসেঞ্জার চেক করতে দেখা গেছে। এ ধরণের কাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকে পুলিশের হাতেও তুলে দিতে দেখা গেছে তাদেরকে।
শাহিন নামের ২৫ বছর বয়সী এক যুবক আজিমপুরে যাচ্ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গেট এলাকায় ছাত্রলীগের কয়েকজন লোক তাকে থামিয়ে ফোন আনলক করতে বলে।
"আমাকে এবং আরও কয়েকজনকে রাস্তায় হয়রানি করা হয়েছে। তারা আমাদের মোবাইল ফোন দেখতে চায়, যা অযৌক্তিক। এমনকি ফোন দেখাতে না চাওয়ায় কয়েকজনকে তারা চড়-থাপ্পড়ও মারে। আমাকে সেখান থেকে চলে যেতে দিলেও গালিগালাক করেছে তারা," বলেন তিনি।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাজপথে নামে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
নগরীর প্রায় প্রতিটি এলাকায় রাস্তায় রাস্তায় বিপুল সংখ্যক জনসমাগম, মিছিল ও স্লোগান দিতে দেখা গেছে তাদের।
বিএনপির নেতাকর্মীরা যাতে জনসভায় যোগ দিতে না পারে সেজন্য পুলিশের পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে আওয়ামী লীগ কর্মীরা অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা শনিবারও রাজধানীতে তাদের সক্রিয় উপস্থিতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
শুক্রবার মহানগর নাট্যমঞ্চে পূর্বঘোষিত সমাবেশে অংশ নিতে ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী জড়ো হন। 'বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, নোংরা রাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের' প্রতিবাদে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অতীতের মতো বিএনপিকে কোনো ধরনের নমনীয়তা দেখানো হবে না।
কাদের বলেন, "বিএনপির আন্দোলনে সরকার ভীত নয়, বরং তারা (বিএনপি) তাদের আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে।"
এদিকে সমাবেশে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, কেউ যাতে রাস্তায় নামতে না পারে সেজন্য রাজধানীতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সতর্ক থাকবেন।
তিনি বলেন, "আজ থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে থাকবে এবং আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনা নির্বাচিত হলেই ঘরে ফিরবে।"
বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে শুক্রবার আওয়ামী লীগের ঢাকা উত্তর মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা প্রতিটি ওয়ার্ডে মিছিল করেন।
ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি বলেন, "শুক্রবার আমরা ঢাকা উত্তর সিটির গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছি। পরে ওয়ার্ডে বিএনপির নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে মিছিল করেছি। শনিবারও বিএনপির কোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে আমরা রাজপথে থাকব।"
এর আগে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় কেন্দ্রীয় নেতারা দলের অন্যান্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন, বিএনপির সমাবেশের আগে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও ওয়ার্ডে যেকোনো ধরনের হামলা থেকে যাতে তারা সতর্ক থাকেন।