মেসিদের বিশ্বকাপ জয়ে কতোটা প্রভাব পড়েছে আর্জেন্টিনার অর্থনীতিতে
আর্জেন্টিনার মতো একটি দেশ, যেখানে ফুটবলকে ধর্মের মতো দেখা হয়, সেই তারা ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয় করলে আনন্দের মাত্রাটা সীমা ছাড়ানোই স্বাভাবিক। আর্জেন্টিনার জনগণের বাঁধভাঙ্গা উদযাপনের দৃশ্য সেটিই প্রমাণ করে। তবে শুধু যে ফুটবলীয় দিক থেকেই অর্জন করেছে তারা সেটি নয়, অর্থনৈতিক দিক থেকেও বিশ্বকাপ জয় সাহায্য করেছে আর্জেন্টিনাকে।
বিশ্বকাপ জয়ের ফলে ৪৫০ কোটি টাকা পুরস্কার পেয়েছে আর্জেন্টিনা দল। যদিও এই অর্থের মালিক হবে তাদের ফুটবল ফেডারেশন। কিন্তু সামগ্রিকভাবেও আর্জেন্টিনার কিছুটা অর্থনৈতিক উন্নতি চোখে পড়েছে বিশ্বকাপ জয়ের পরপরই।
এমনিতেই আর্জেন্টিনার অর্থনৈতিক অবস্থা খুব একটা ভালো পর্যায়ে নেই। তাদের মুদ্রা পেসোর মান বেশ পড়ে গিয়েছে। বিশ্বকাপ জয়ের ফলে যে খুব বেশি উন্নতি হয়েছে তেমনটিও নয়। তবে কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে তাদের অর্থনীতিতে।
বিশ্বকাপ জয়ের ফলে যে অঙ্কের টাকা আর্জেন্টিনা দল পেয়েছে, তাতে তাদের দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে ০.২৫ শতাংশ সম্পদ যোগ হয়েছে। যা একেবারেই নগন্য। কিন্তু বিশ্বকাপ জয়ের পাশাপাশি বেশ কিছুদিন ধরেই আর্জেন্টিনার ভঙ্গুর অর্থনীতির একটু একটু করে উন্নতি চোখে পড়ছে।
যেমন, এই বছর শেষে আর্জেন্টিনার অর্থনীতিতে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত নভেম্বর মাসে পেসোর মান সবচেয়ে কম নেমেছে, যা এ বছরের ফেব্রুয়ারির পর সর্বনিম্ন। এছাড়াও, আর্জেন্টিনা সরকার ৪৪ বিলিয়ন ডলারের একটি কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছে, যার জন্য তারা আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএমএফ থেকে ঋণ বরাদ্দও পেয়েছে।
তবে এতকিছুর পরেও নিজেদের ভগ্নদশায় থাকা অর্থনীতিকে সঠিক ফিরিয়ে আনতে বেগ পেতে হবে সরকারকে। কারণ তাদের মুদ্রা পেসোর দাম পড়ে যাওয়ার হার এখনো ১০০%, সরকারের নেওয়া ঋণ
পরিশোধের ক্ষেত্রে সুদের হার ৭৫%। আর্জেন্টিনার মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪০% এখন দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে।
আগামী বছরের অক্টোবরেই আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেটিকে সামনে রেখেই বর্তমান সরকার তাদের অর্থনীতি চাঙ্গা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। মেসিদের বিশ্বকাপ জয়ের ফলে দেশের অর্থনীতি আরো বেগবান হবে বলে প্রত্যাশা সবার।