২০ বছর পর মুক্তি পেলেন কিউবার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করা মার্কিন গোয়েন্দা বিশ্লেষক
কিউবার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে দোষী সাব্যস্ত সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা বিশ্লেষক অ্যানা বেলেন মন্টেস শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) টেক্সাসের একটি ফেডারেল কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ২০ বছরেরও বেশি সময় কারাভোগের পর মুক্তি পেলেন ৬৫ বছর বয়সী সাবেক এই গোয়েন্দা বিশ্লেষক। খবর বিবিসির।
ফেডারেল ব্যুরো অফ প্রিজন ওয়েবসাইট অনুসারে, মার্কিন ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিতে (ডিআইএ) বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করতেন মন্টেস।স্নায়ুযুদ্ধকালীন প্রায় দুই দশক ধরে 'ডাবল এজেন্ট' হয়ে কিউবার পক্ষেও গুপ্তচরবৃত্তি করে আসছিলেন তিনি।
এই অপরাধে তাকে ২০০১ সালে গ্রেপ্তার করা হয়। মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, তিনি কিউবায় মার্কিন গোয়েন্দা কার্যক্রমের প্রায় সম্পূর্ণটাই ফাঁস করে দিয়েছিলেন।
এক কর্মকর্তা বলেন, গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়া 'সবচেয়ে ক্ষতিকারক গুপ্তচরদের মধ্যে' মন্টেস ছিলেন একজন।
হাভানায় মার্কিন গোয়েন্দাদের পরিচয়সহ অন্যান্য তথ্য সরবরাহের জন্য ডিআইএ কর্মকর্তা হিসেবে নিজের অবস্থানের অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয় মন্টেসের বিরুদ্ধে। কিউবায় ৪ মার্কিন এজেন্টের পরিচয় ফাঁস করেছিলেন তিনি।
২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্রারের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তিমূলক ষড়যন্ত্রের দায়ে মন্টেস দোষী সাব্যস্ত হন। এই অপরাধে তাকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে ধরা পড়া অন্যান্য হাই-প্রোফাইল গুপ্তচরদের মতো ব্যক্তিগত স্বার্থে প্ররোচিত ছিলেন না মন্টেস, বরং মতাদর্শগত কারণেই কিউবার পক্ষে কাজ করেছিলেন। লাতিন আমেরিকায় তৎকালীন রিগ্যান প্রশাসনের কার্যকলাপের বিরোধী ছিলেন তিনি। মূলত এ কারণেই কিউবার গোয়েন্দাদের জন্য কাজ করতে সম্মত হয়েছিলেন।
এদিকে, ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও ২০ বছরের কিছু সময় পরেই মুক্তি দেওয়া হয়েছে মন্টেসকে। এ প্রসঙ্গে মার্কিন বিচারক রিকার্ডো উরবিনার আদেশ, আগামী পাঁচ বছর মন্টেসকের ইন্টারনেট ব্যবহার ও কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এর পাশাপাশি, সরকারি যেকোনো সংস্থাতেও তার যোগদানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
১৯৮৫ সালে ডিআইএ-তে যোগদান করেন মন্টেস; এর কিছু সময়ের মধ্যেই সংস্থাটির শীর্ষ কিউবা বিষয়ক বিশ্লেষক হওয়ার পদমর্যাদা লাভ করেন তিনি।