বারিধারার ৫০০ বাড়ির ৩৪২টির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে, মেয়র আতিকের ক্ষোভ
রাজধানীর অন্যতম অভিজাত এলাকা বারিধারার ৫৫০টি বাড়ির মধ্যে ৩৪২ বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেওয়া হয়েছে। মাত্র ৫টি বাড়ি নিয়ম মেনে পয়োবর্জ্যের সংযোগ দিয়েছে। এ বিষয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
বুধবার বারিধারা এলাকায় পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে, খালে বা লেকে দেওয়া বন্ধ করতে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। অভিযানের অংশ হিসেবে বারিধারা ১১ নম্বর রোডের চারটি বাড়ির সামনে ড্রেনে কলাগাছ দিয়ে সারফেস ড্রেন থেকে পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাড়ির মালিকরা অনতিবিলম্বে নিজ থেকে এসব সংযোগ বন্ধ না করলে স্থায়ীভাবে বন্ধ করারও হুঁশিয়ারি দেন ডিএনসিসি মেয়র।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, দেশের সবচেয়ে অভিজাত এলাকা হিসেবে খ্যাত বারিধারার ৫৫০টি বাড়ির মধ্যে ৩৪২ বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেওয়া হয়েছে। সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী বেঁধে দেওয়া আট স্তরের ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে বারিধারা এলাকার মাত্র ৫টি বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেওয়া হয়নি। এছাড়াও ২০৩টি বাড়ি আটটি শর্তের মধ্যে কিছু সংখ্যক শর্ত পূরণ করেছে। অন্যদিকে একদমই শর্ত পূরণ করেনি ৩৪২টি বাড়ি, যাদের বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে।
এ বিষয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'একটি অভিজাত এলাকায় যদি এমন চিত্র আমাদের দেখতে হয় তাহলে আমাদের আর কী করার আছে? অভিজাত এলাকায় পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ খুবই দুঃখজনক। বার বার বলছি সিটি কর্পোরেশনের সুয়ারেজ লাইনে পয়োবর্জ্যের সংযোগ দেওয়া যাবে না। ওয়াসার পৃথক লাইনে এসব বাড়ির বর্জ্য যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি নেই। যেখানে ওয়াসার লাইন নেই সেখানে নিজস্ব ব্যবস্থায় ইটিপি প্লান্ট বসিয়ে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে।'
এর আগে ৪ জানুয়ারী গুলশান ২ এর ১০৪ ও ১১২ নম্বর রোড এলাকায় পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ বন্ধে ডিএনসিসি প্রথমবার অভিযান পরিচালনা করে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, 'কোনোভাবেই পয়োবর্জ্য বা ব্ল্যাক ওয়াটার সিটি কর্পোরেশনের ড্রেনে, খালে, লেকে ঢুকতে পারবে না। অনেক আগে থেকেই এ বিষয়ে তাদের জানিয়ে আসছি, সচেতন করে আসছি। গণবিজ্ঞপ্তিও দিয়েছি, কিন্তু তারা কথা শুনেননি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা অভিযান শুরু করলাম। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে, এখানে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। বাসার সামনে গিয়ে ড্রেনগুলো আমরা কলাগাছ দিয়ে বন্ধ করে দিচ্ছি।'
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন তাদের নিজেদের জরিপের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে দেখেছে গুলশান, বারিধারা, বনানী, নিকেতন এলাকার ৩ হাজার ৮৩০টি বাড়ির মধ্যে ২ হাজার ২৬৫টির সুয়ারেজ লাইন লেক কিংবা ড্রেনে সংযোগ দেওয়া আছে।
বারিধারা সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ফিরোজ হাসান বলেন, 'বারিধারার ৫৫০টি বাড়ির মধ্যে ৩৪২ বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেওয়া হয়েছে এই বিষয়টি আসলেই খুবই দুঃখজনক। আমরা এ বিষয়ে সবার সঙ্গে বসে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উদ্যোগ গ্রহণ করব। কিছুটা সময় লাগবে তবে যত দ্রুত সম্ভব এটির সমাধান আমরা করে ফেলব।'