হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট ভারতের উপর পরিকল্পিত আক্রমণ: আদানি গ্রুপের দাবি
আদানি গ্রুপকে নিয়ে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের করা কারচুপির রিপোর্ট প্রকাশের পর জলঘোলা কম হয়নি। এবার ৪১৩ পৃষ্ঠার দীর্ঘ বিবৃতিতে উল্টো মার্কিন এ সংস্থার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছে আদানি গ্রুপ। একইসঙ্গে গৌতম আদানির সংস্থার অভিযোগ, এ রিপোর্টে শুধু কোনও একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে 'অযাচিত হামলা' চালানো হয়নি, বরং ভারতের উপর পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ।
রবিবার রাতে আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি দেওয়া হয়। বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, যে সব সংস্থার সঙ্গে আদানি গ্রুপের আর্থিক লেনদেন হয়েছে, সেগুলির প্রতিটিই ভারতীয় আইন এবং সংশ্লিষ্ট নিয়ম মেনেই হয়েছে। গ্রুপটি সেই সংক্রান্ত তথ্যও উপযুক্তভাবে প্রকাশ করেছে।
একইসাথে আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়, 'এটা স্বার্থ সংঘাতের চরম উদাহরণ। সিকিউরিটিজের ক্ষেত্রে শুধু ভুয়া বাজার তৈরির উদ্দেশ্যে এই কাজটা করা হয়েছে। এর ফলে অসংখ্য বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে হিন্ডেনবার্গ অবৈধভাবে বড়সড় আর্থিক লাভ করতে পারে। যে সংস্থা নিজেরাই শর্ট সেলার।'
গত ২৪ জানুয়ারি মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে দাবি করা হয়, শেয়ার দরে আর্থিক প্রতারণা এবং কারচুপি করেছে আদানি গ্রুপ। শেয়ার বাজারে আদানি গ্রুপের যে সাতটি সংস্থা নথিভুক্ত আছে, সেগুলির মধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ নেতিবাচক প্রভাব আছে। তার ফলশ্রুতিতে গৌতম আদানির মালিকাধীন গ্রুপ 'আর্থিকভাবে স্পর্শকাতর' জায়গায় রয়েছে বলে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
এই নেতিবাচক রিপোর্টের কারণে শেয়ার বাজারে বড়সড় ধাক্কা খায় আদানি গ্রুপ। হুডমুড়িয়ে পড়তে থাকে আদানি গ্রুপের সাতটি শেয়ারের (আদানি ট্রান্সমিশন, আদানি টোটাল গ্যাস, আদানি এন্টারপ্রাইজ, আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন, আদানি পাওয়ার, আদানি গ্রিন এনার্জি এবং আদানি উইলমার) মূল্য। পরিস্থিতি এমনই হয় যে, মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকার তৃতীয় স্থান থেকে সপ্তম স্থানে নেমে আসেন আদানি।
তবে আদানি গ্রুপের দাবি, কোনও কারচুপি করা হয়নি। বরং একেবারে পরিকল্পিতভাবে সেই রিপোর্ট পেশ করেছে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। রবিবার প্রকাশিত বিবৃতিতে আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'এটা স্রেফ নির্দিষ্ট কোনও সংস্থার উপর অযাচিত আক্রমণ নয়, বরং ভারতের উপর পরিকল্পিত আক্রমণ। ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা, অখণ্ডতা ও গুণমান এবং ভারতের উন্নতি ও স্বপ্নের উপর হামলা এটা।'
শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন একটা সময় হিন্ডেনবার্গের তরফে ওই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে, যে সময় ২.৫ বিলিয়ন ডলার শেয়ার বিক্রির পথে হেঁটেছে আদানি গ্রুপ। যদিও রবিবার অপর একটি বিবৃতিতে আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, 'আমরা আত্মবিশ্বাসী যে এফপিও (ফলো-অন পাবলিক অফারিং) সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাবে।'