হিন্ডেনবার্গ বিতর্ক: এবার বিক্রি হওয়া এফপিও প্রত্যাহার করে নিলো আদানি এন্টারপ্রাইজ
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের ধাক্কায় একেবারে বেসামাল আদানি গ্রুপ। সেই ধাক্কার জেরে এবার ফলো-অন পাবলিক (এফপিও) তুলে নিল আদানি এন্টারপ্রাইজ।
আদানি এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এফপিওতে বিনিয়োগকারীদের পুরো টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তারা আরো জানিয়েছে, আদানি এন্টারপ্রাইজের 'অবস্থা' ভালো আছে।
এফপিও হলো এমন এক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানি বাজারে অতিরিক্ত শেয়ার ছেড়ে অর্থ তোলে।
গতকাল (বুধবার) আদানি এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "পুরোপুরি সাবস্ক্রাইব হয়ে যাওয়া ফলো-অন পাবলিক অফার তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড। অভাবনীয় পরিস্থিতি এবং বর্তমানে বাজারের উত্থান-পতনের মধ্যে বিনিয়োগকারী গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করতে চায় কোম্পানি।"
সেইসঙ্গে আদানি গ্রুপ জানিয়েছে, বিনিয়োগকারীদের পুরো টাকা ফিরিয়ে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে আদানি এন্টারপ্রাইজের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি বলেছেন, "আমাদের এফপিওকে সমর্থন করার জন্য এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকার জন্য সকল বিনিয়োগকারীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে বোর্ড। মঙ্গলবার এফপিও সাবস্ক্রিপশন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।"
"গত সপ্তাহে শেয়ারে উত্থান-পতন সত্ত্বেও সংস্থা, সংস্থার ব্যবসা এবং কর্তৃপক্ষের উপর যে আস্থা রেখেছেন, তা অত্যন্ত আনন্দজনক।"
মঙ্গলবার আদানি এন্টারপ্রাইজের এফপিওয়ের শেষদিন ছিল। টালমাটাল পরিস্থিতি সত্ত্বেও প্রায় পুরোটার জন্যই আবেদন জমা পড়েছিল। ৪.৫৫ কোটির অফারের মধ্যে ৪.৬২ কোটি শেয়ারের জন্য জন্য আবেদন জমা পড়েছিল।
বিএসইয়ের তথ্য অনুযায়ী, অপ্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য যেখানে ৯৬.১৬ লাখ শেয়ার সংরক্ষিত ছিল, সেখানে তিনগুণের বেশি আবেদন আসে। প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতাদের জন্য সংরক্ষিত ১.২৮ কোটি শেয়ারের প্রায় পুরোটার জন্য আবেদন জমা পড়েছিল। তবে খুচরা লগ্নিকারী ও সংস্থার কর্মীদের প্রতিক্রিয়া তেমন আশাব্যঞ্জক ছিল না।
এরইমধ্যে বুধবার আদানি বলেছেন, "এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতির জেরে সংস্থার বোর্ড মনে করছে যে এফপিও জারি রাখা নৈতিকভাবে ঠিক হবে না। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কোনো সম্ভাব্য আর্থিক ক্ষতি থেকে তাদের রক্ষা করতে বোর্ড সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে এফপিও তুলে নেওয়া হবে।"
উল্লেখ্য, গত ২৪ জানুয়ারি মার্কিন কোম্পানি হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরে আদানির শেয়ার হুড়মুড়িয়ে কমছে।
আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং কারচুপির অভিযোগ তুলেছে কোম্পানিটি। যদিও সেই অভিযোগ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে আদানি গ্রুপ।
তাতে অবশ্য শেয়ার বাজারে ধস আটকায়নি। শেষ পাঁচটি সেশনে মোট সাত লাখ কোটি টাকা খুইয়েছে আদানি গ্রুপের সাতটি শেয়ার!