ফারদিন হত্যা মামলা: ডিবির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বুশরাকে অব্যাহতি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের (২৪) মৃত্যুর তিন মাস পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) আদালতে তার হত্যা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফারদিনকে খুন করা হয়নি বরং সে আত্মহত্যা করেছে।
ফারদিন হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আমাতুল্লাহ বুশরাকে অব্যাহতি দিয়েও চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ডিবি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন সিকদার সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তবে ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা ডিবির চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার রাজীব আল মাসুদ বলেন, 'আমাদের তদন্তে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে যে ফারদিন ব্রিজের ওপর থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।'
ডিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের তদন্তে ফারদিনকে হত্যার কোনো সূত্র পাওয়া যায়নি।
এদিকে ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি এ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নো-কনফিডেন্স পিটিশন দায়ের করবেন।
বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফারদিন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কুতুবপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। গত ৪ নভেম্বর নিখোঁজ হন ফারদিন।
সেদিন বুয়েট ক্যাম্পাসের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হওয়ার পর ফারদিন বুশরার সঙ্গে কয়েক ঘণ্টা ছিলেন।
নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই দিনই ফারদিনের বাবা বাদী হয়ে রামপুরা থানায় ছেলে হত্যার মামলা করেন।
হত্যা মামলায় ফারদিনের বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে পুলিশের হেফাজতে রিমান্ডে নেওয়া হয়; পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
প্রথমে ঘটনাটিকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে দাবি করলেও গেল বছরের ১৪ ডিসেম্বর, ডিবি এবং র্যাব উভয়ই তদন্তের ভিত্তিতে জানায়, ফারদিন নূর পরশ আত্মহত্যা করেছেন।
ফারদিনের মৃত্যুতে বুশরার কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি বলেও জানায় এ দুই সংস্থা। ৬১ দিন কারাগারে থাকার পর এ বছরের ১০ জানুয়ারি বুশরা কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন।
তবে ছেলের আত্মহত্যার বিষয়ে পুলিশ ও র্যাবের বক্তব্য বরাবর অস্বীকার করে এসেছেন ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, 'আমি এখনও বিশ্বাস করি এটা আত্মহত্যা নয় বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড'।
তার দাবি, তদন্তকারী সংস্থাগুলো প্রভাবশালী মহল কর্তৃক প্রভাবিত, তাই তারা ঘটনার সঠিক তদন্ত করেনি।
'শুরু থেকেই ফারদিনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, ডিবির তদন্তে প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে গেছে,' বলেন নূর উদ্দিন।