মার্চের বেতন দেবে বলেও দেয় নি; তাই লকডাউন ভেঙে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
গাজীপুরে মার্চ মাসের বেতনের দাবিতে বৃহস্পতিবার দিনভর বিক্ষোভ করেছে কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
সকাল থেকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার গেইটে অবস্থান নিয়ে ধর্মঘট শুরু করে। তবে বিকেলের দিকে পুলিশের মধ্যস্থতায় কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বেতন পাওয়ার আশ্বাস পেলে শ্রমিকরা কর্মসূচি থেকে সরে আসে।
আন্দোলনকারী শ্রমিকরা জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাশিমপুর সবুজ কানন এলাকার ডেল্টা গ্রপের ডেল্টা স্পিনিং মিলের শ্রমিকদের মার্চের বেতন বৃহস্পতিবার পরিশোধের কথা ছিল। শ্রমিকরা বেতন ভাতা গ্রহণের আশায় সকাল হতে কারখানার গেইটে জড়ো হন। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অবস্থানের পর বেতন ভাতা পরিশোধ না করায় শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা গেইটে অবস্থান নিয়ে ধর্মঘট ও বিক্ষোভ শুরু করেন।
এসময় কারখানার সামনের সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পড়ে বিকেলে পুলিশের মধ্যস্থতায় কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে কারখানা কর্তৃপক্ষ আগামী ৩০ এপ্রিল শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করে কারখানা এলাকা ত্যাগ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইসলাম হোসেন জানান, গাজীপুর মহানগরীর ছয়দানা হারিকেন এলাকার আমরিন সোয়েটার কারখানার শ্রমিকরা একইদিন মার্চ মাসের বেতন ভাতা পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। বৃহস্পতিবার তাদেরও বেতন ভাতা পরিশোধের পূর্ব নির্ধারিত দিন ছিল। তারা কারখানার সামনে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় বিকেলে শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নেয়।
এদিকে একইদিন গাজীপুর মহানগরীর নাওজোর এলাকার পলিব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানার শ্রমিকরা সকল হতে বিক্ষোভ করেছে। ফেব্রুয়ারি মাসের ওভারটাইম ভাতা ও মার্চ মাসের বেতন ভাতা পরিশোধের দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এখানেও পুলিশের মধ্যস্থতায় কারখানা কর্তৃপক্ষ আগামী ৩০ এপ্রিল শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান থেকে সরে যায়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গাজীপুরের অধিকাংশ কারখানা ছুটি ঘোষণা করে উৎপাদন বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। হঠাৎ করে ছুটি ঘোষণা করায় সৃষ্ট নানা জটিলতার কারণে বেশকিছু কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ পাওনাদি পরিশোধ করতে পারে নি কর্তৃপক্ষ। ফলে এসব কারখানার শ্রমিকরা গত কয়েকদিন ধরে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য ঘোষিত লকডাউন ভেঙ্গে মার্চ মাসসহ তাদের পাওনাদি পরিশোধের জন্য রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে আসছে। তারা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের কোন নিয়ম কানুনই মানছেনা। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের উদ্যোগে বেশ কিছু কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের ব্যবস্থা নিয়েছে।