বিশ্বজুড়ে টয়লেট পেপারে বিষাক্ত ‘ফরেভার কেমিক্যালসের’ সন্ধান মিলল
নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, টয়লেট পেপারে 'ফরেভার কেমিক্যালস' নামে পরিচিত বিষাক্ত পিএফএএস রাসায়নিক থাকে। টয়লেট ফ্ল্যাশ করলে টয়লেট পেপার পয়োনিষ্কাশন নালা দিয়ে বিভিন্ন পানির উৎসে পড়ে পানি দূষণের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হতে পারে। খবর দ্য গার্ডিয়ান-এর।
একবার পানির সঙ্গে মিশে গেলে এ রাসায়নিক শেষে গিয়ে আবাদি জমিতে মেশে, অনেকসময় জলপথেও ছড়িয়ে পড়ে।
ওই গবেষণার লেখকরা লিখেছেন, টয়লেট পেপারকে পানি দূষণের অন্যতম সম্ভাব্য উৎস হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।
পিএফএএস হলো প্রায় ১৪ হাজার রাসায়নিকের একটি শ্রেণি। যা অজস্র ভোক্তাপণ্য উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। এদেরকে 'ফরেভার কেমিক্যালস' বলার কারণ হলো, এরা সহজে ভাঙে না—এবং এরা ক্যানসার, লিভার ও কিডনির অসুখসহ অন্যান্য গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার সঙ্গে যুক্ত।
গবেষণাটিতে উত্তর আমেরিকা, পশ্চিম ইউরোপ, আফ্রিকা, মধ্য আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার ২১টি প্রধান ব্র্যান্ডের টয়লেট পেপার পরীক্ষা করা হয়। তবে ব্র্যান্ডগুলোর নাম জানানো হয়নি।
ইউনিভার্সিটি অভ ফ্লোরিডার পিয়ার-রিভিউড এই প্রতিবেদনে দূষিত টয়লেট পেপার ব্যবহার কীভাবে মানুষের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে, তা বিবেচনা করা হয়নি। ত্বকের মাধ্যমে শোষিত হয়ে পিএফএএফ শরীরে প্রবেশ করতে পারে। তবে টয়লেট পেপার দিয়ে মোছার সময়, পিএফএএফ কীভাবে দেহে প্রবেশ করে, তা নিয়ে কোনো গবেষণা হয়নি।
তবে জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ডেভিড অ্যান্ড্রুজ বলেছেন, নতুন এই গবেষণায় পাওয়া তথ্য খতিয়ে দেখা উচিত।
যেসব ব্র্যান্ড রিসাইকেল করা কাগজ ব্যবহার করেছে, সেগুলোতে রিসাইকেল না করা কাগজ ব্যবহার করা ব্রান্ডগুলোর সমান পিএফএএস পাওয়া গেছে। ওই গবেষণার মূল লেখক জেক থম্পসন বলেন, টয়লেট পেপারে পিএফএএস এড়ানো সম্ভব না-ও হতে পারে।
থম্পসন জানান, টয়লেট পেপার বানানোর সময় যন্ত্রপাতিতে লুব্রিক্যান্ট হিসেবে প্রায়ই পিএফএএস ব্যবহার করা হয়।
গবেষকরা টয়লেট পেপারে ছয়টি পিএফএএস যৌগ পেয়েছেন। যৌগগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। তবে অণ্ডকোষের সঙ্গে এসব যৌগের সংযোগ পাওয়া গেছে।
প্রতি বছর একজন আমেরিকান গড়ে ৫৭ পাউন্ড টয়লেট পেপার ব্যবহার করে। আর যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ১৯ বিলিয়ন পাউন্ডের বেশি টয়লেট পেপার ফ্ল্যাশ করা হয়।