আরাভ খানকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলে চিঠি পাঠিয়েছে পুলিশ
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি আরাভ খানকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।
শনিবার (১৮ মার্চ) বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) মনজুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, দুবাই থেকে আরাভকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় একটি খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'ইন্টারপোলের সহায়তায় তাকে (আরাভ) ফিরিয়ে আনার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। তাকে গ্রেপ্তারে ইতিমধ্যে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।'
ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান দুবাইয়ে তার গয়নার দোকানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুবাই যাচ্ছেন বলে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনের পর স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান আলোচনায় আসেন।
সাকিব আল হাসান বুধবার (১৫ মার্চ) দুবাইয়ে আরাভের গয়নার দোকান উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ফেসবুকে অরাভকে দেখে অনেকেই তাকে হত্যা মামলার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম বলে শনাক্ত করতে পারেন। একজন পলাতক আসামি কীভাবে দুবাইয়ে গিয়ে বিপুল টাকার মালিক হলেন, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
এর জেরে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাবেক এক সিনিয়র অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার আর্থিক সহায়তায় রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান দুবাইয়ে স্বর্ণব্যবসা শুরু করেন।
২০১৮ সালের ৮ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি বাসায় খুন হন এসবির পরিদর্শক মামুন ইমরান খান। পরদিন তার লাশ বস্তায় ভরে গাজীপুরের উলুখোলার একটি জঙ্গলে নিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
মামলাটি তদন্ত করে পরের বছরের এপ্রিলে অভিযোগপত্র দাখিল করে ডিবি। অভিযোগপত্রে পুলিশ উল্লেখ করে, রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে একটি চক্র ধনী ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করত।
২০১৯ সালের এপ্রিলে পুলিশ মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় রবিউলসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
অভিযোগপত্রে রবিউল ছাড়াও তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়াকেও আসামি করা হয়। মামলায় মামুনের বন্ধু রহমত উল্লাহ, স্বপন সরকার, দিদার পাঠান, মিজান শেখ, আতিক হাসান, সারোয়ার হোসেনসহ আরও দুই তরুণীকে আসামি করা হয়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, রবিউল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার আশুটিয়া গ্রামের মতিউর রহমান মোল্লা ও লাকী বেগমের ছেলে।
২০২০ সালের ২০ অক্টোবর মামুন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর রবিউল ইসলাম পরিচয় দিয়ে একজন ব্যক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। প্রায় ৯ মাস কারাভোগের পর ওই যুবক দাবি করেন, তিনি আসল রবিউল ইসলাম নন, তার প্রকৃত নাম আবু ইউসুফ। রবিউল ইসলামের কাছ থেকে মাসিক নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়ে আসামির পরিচয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
আদালত বিষয়টি তদন্ত করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিবিকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।