বন থেকে পালিয়ে লোকালয়ে চিতা, গরু মেরে ১১ ঘণ্টা কাটিয়ে ফিরে গেল আবার
আফ্রিকার নামিবিয়া থেকে আনা চিতার দল ছাড়া হয়েছিল ভারতের মধ্য়প্রদেশের কুনো অভয়ারণ্যে। সেই দলেরই ওভান নামের একটি পুরুষ চিতা দলছুট হয়ে লোকালয়ে চলে যায়। গ্রামের পথেঘাটে, ক্ষেতে-খামারে ঘুরে প্রায় ১১ ঘণ্টা পর বনে ফিরে গেছে চিতাটি। খবর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
এই পুরোটা সময় চিতাটি যেন কারো প্রাণহানি না করে, আবার চিতার যাতে কোনও ক্ষতি না হয়- উভয় দিক নিশ্চিত করাই ছিল দেশটির বন অধিদপ্তরের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, কুনো অভয়ারণ্য়ে চিতাটি নিজের ছন্দেই ছিল। তার গলায় রেডিও কলারও রয়েছে। তার মাধ্যমেই চিতার গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে সব সময়। কিন্তু রোববার ভোরে আচমকাই সেটি ন্যাশনাল পার্ক সংলগ্ন গোলিপুরা ও ঝার বারোদা গ্রামে ঢুকে পড়ে। এই দুই গ্রামের বাসিন্দারা ঘুম ভেঙ্গেই দেখতে পায় তাদের গ্রামের মেঠো পথে, ক্ষেতে হেলেদুলে বেড়াচ্ছে এক চিতা!
গ্রামবাসী জানিয়েছে, চিতাটি গ্রামের দুটি গরু শিকার করেছে। বিকাল ৫টা পর্যন্ত গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দাই আতংকে নিজেদের ঘরবন্দী করে রেখেছিলেন, অনেকে আবার ঘর থেকে চিতাটিকে ছাদে রাখা তাদের পশুপাখি শিকার করতে দেখেন। তবে গ্রামবাসীরা থেকেছে একেবারে অক্ষত।
চিতাবাঘের লোকালয়ে প্রবেশের খবরে কুনো ন্যাশনাল পার্কের কর্মকর্তারা সেখানে ছুটে যান। একজন বলেন, "উপযুক্ত শিকারের সন্ধানে চষে বেড়ানো যেকোন প্রাণীরই সহজাত বৈশিষ্ট্য। চিতাটিও তাই অনুসন্ধানে বেরিয়ে পড়েছিল। কিন্তু পছন্দসই শিকার না পেয়ে আর মানুষের উপস্থিতিতে বিরক্ত হয়ে এটি শীঘ্রই জঙ্গলে ফিরে যাবে।"
হয়েছেও তাই! কারো কোনো ক্ষতি না করে ওভান নিজেই বনে ফিরে গেছে।
প্রসঙ্গত, দেশে চিতার অস্তিত্ব ফিরিয়ে আনতে কয়েক দশক ধরেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গতবছর নামিবিয়া থেকে মোট ৮টি চিতা এনেছিল দেশটি। একইসাথে সাউথ আফ্রিকার সাথেও চুক্তি করে গত মাসে ১২টি চিতা এনেছে ভারত।
নামিবিয়া থেকে আনা চিতাগুলোর একটি 'সিয়ায়া' আবার গত মাসে চারটি শাবকের জন্ম দেয়। মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে মুক্ত পরিবেশে শাবকগুলোকে রাখা হয়েছে।