মৃত্যুর আগে উইল করে যাননি স্ত্রী, বোর্হেসের সম্পদের মালিক এখন কে হবে!
আর্জেন্টিনার ২০ শতকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লেখক হিসেবে বিবেচিত হোর্হে লুইস বোর্হেসের লেখার স্বত্ব নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। গত মাসে ব্রেস্ট ক্যান্সারে ভুগে মারা যান বোর্হেসের বিধবা স্ত্রী। কিন্তু মৃত্যুর আগে তিনি কোনো উইল করেননি। এ কারণেই এ জটিলতা দেখা দিয়েছে। খবর এপি-র।
চলতি সপ্তাহেই এ তথ্য সামনে আসে। এতে বিস্মিত হয় আর্জেন্টিনার সাহিত্যিক মহলও। কারণ বোর্হেসের স্ত্রী মারিয়া কোদামা তার জীবনের বড় একটা অংশ ব্যয় করেছেন স্বামীর লেখা রক্ষায়।
লেখকের নামী একটি ফাউন্ডেশন স্থাপন করেছেন মারিয়া। কিন্তু তার মৃত্যুর পর ফাউন্ডেশনের কাজ কী হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলে যাননি।
বোর্হেসের কাজের ওপর গবেষণা করেছেন লেখক সান্তিয়াগো লাক। তিনি এপিকে বলেন, 'কোনো উইল না রেখে গেলে, ব্যাপারটা বিস্ময়কর হবে।'
তিনি জানান, মারিয়া কোদামার উইল রেখে না যাওয়ায় ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সর্বত্র ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বোর্হেস মারা যান ১৯৮৬ সালে, ৮৬ বছর বয়সে। ওই বছরই মারিয়া কোদামাকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। বোর্হেসের মৃত্যুর পর তার একমাত্র উত্তরাধিকারী হন কোদামা। তাদের কোনো সন্তান ছিল না। গত ২৬ মার্চ কোদামাও ৮৬ বছর বয়সে মারা যান।
কোদামার আইনজীবী ফার্নান্দো সোতো উইল রেখে না যাওয়ার তথ্য জানালে কোদামার পাঁচ ভাইপো আদালতে যান। কোদামার সব সম্পত্তির—বোর্হেসের সব কাজের স্বত্বসহ—উত্তরাধিকারীর অধিকার চেয়ে আবেদন করেন তারা।
সোতো বলেন, কোদামা উইল করে যাওয়ার ব্যাপারে কথা বলতে পছন্দ করতেন না।
সোতো একবার কোদামাকে প্রশ্ন করেছিলেন, তার মৃত্যুর পর বোর্হেসের কাজের স্বত্ব কার হবে। তখন কোদামা জানিয়েছিলেন, তিন সব ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
সোতো জানান, কোদামা বলেছিলেন, বোর্হসের 'লেখাগুলোর দেখাশোনা' করার দায়িত্ব তিনি জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেবেন। কিন্তু কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়কে দায়িত্ব দেবেন সেগুলোর নাম বলেননি তিনি। কোদামা অবশ্য প্রায়ই হার্ভার্ড ও টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিতেন বলে জানান তিনি।
বোর্হেসের স্ত্রী তার পরিবার থেকে আলাদা থাকতেন।
লাক বলেন, 'তিনি তার পরিবারের অস্তিত্ব স্বীকার করতেন না। আমার কয়েকজন লেখক বন্ধু তাকে [কোদামা] তার ভাইপোদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন। কিন্তু কোদামা তার কোনো ভাইপো আছে বলে স্বীকার করেননি।'
সোতো জানান, কোদামার ভাইপোদের খবর জানতে পেরে তিনি অবাকই হয়েছিলেন। তবে এ-ও বলেন যে, কোদামার আত্মীয়দের খবর জানতে পেয়ে তিনি বড় স্বস্তি পেয়েছেন। কারণ 'আমি চাইনি সবকিছু রাষ্ট্রের কাছে চলে যাক।'
আর্জেন্টিনার আইন অনুসারে, কোনো ব্যক্তি উইল বা পারিবারিক উত্তরাধিকারী রেখে না গেলে তার সব সম্পত্তি রাষ্ট্রের দখলে চলে যায়।
কেউ কেউ বলছেন, কোদামার উইল পাওয়াও যেতে পারে। যদিও সোতো সেই সম্ভাবনা প্রায় শূন্য বলে জানিয়েছেন।