চিকিৎসায় ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছেন ডা. জাফরুল্লাহ
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার চিকিৎসায় ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। গতকাল তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
'ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর রক্তে ইনফেকশন পাওয়া গেছে। এর জন্য দেওয়া ওষুধে ইতিবাচক সাড়া মিলছে,' জানিয়েছেন অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মামুন মোস্তাফী (অব)।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ২টা ১৫ মিনিট থেকে ডা. জাফরুল্লাহর কিডনির ডায়ালাইসিস শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে চলছে অন্যান্য চিকিৎসা। তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে এখনো ভেন্টিলেশনে আছেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিন মেডিসিনের অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ, নিউরোলজির অধ্যাপক কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, এবং অধ্যাপক আলী আহসানসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মেডিকেল বোর্ডের সভা হয়।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক আলতাফুন্নেছা সংস্থার সকল কর্মী, সংগঠক ও স্বেচ্ছাসেবকদের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্য প্রার্থনা ও ভালোবাসা অব্যাহত রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
গত ৭ এপ্রিল মারাত্মক অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর ধানমন্ডির নগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতার পাশাপাশি গত কয়েকদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানান জটিলতায়ও ভুগছেন তিনি।
চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য কর্মী হিসেবে ডা. জাফরুল্লাহ বাংলাদেশে সুপরিচিত। ১৯৬৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস শেষ করেন তিনি; এরপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৭১ সালে দেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি লন্ডনে অস্ত্রোপচারের ওপর প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। এরপর দেশে ফিরে যুদ্ধে আহতদের চিকিৎসার জন্য সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন ডা. জাফরুল্লাহ।
বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৮৫ সালে তিনি বাংলাদেশের নতুন ওষুধ নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় কমিউনিটি লিডারশিপ ক্যাটাগরিতে র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার পান।
ডা. জাফরুল্লাহ সারাজীবন বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং বাংলাদেশে মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে কথা বলেছেন। জনস্বাস্থ্য ও সামাজিক কল্যাণে অবদানের জন্য তিনি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।