খুলনায় সর্বোচ্চ গরমের দিনে ধারাবাহিকভাবে ৮ বার লোডশেডিং
গত ২৩ বছরের মধ্যে খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্র রেকর্ড করা হয়েছে রোববার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে। এ দিন খুলনা শহরে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অন্তত আটবার লোডশেডিং হয়েছে। যার প্রত্যেকটির ব্যাপ্তি ছিল ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের খুলনা কার্যালয়ের তথ্যমতে, রোববার দুপুরে খুলনা শহরের তাপমাত্র ছিল ৪১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
খুলনা শহরে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো)।
ওজোপাডিকো সূত্র জানায়, দুপুরে খুলনা শহরে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৮০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে বিদ্যুৎ পাওয়া গেছে ১৪০ মেগাওয়াট। বাকি ৪০ মেগাওয়াটের লোডশেডিং ছিল শহরে।
ওজোপাডিকো'র প্রধান প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, খুলনা শহরের জন্য দিনের বেলা প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে। ফলে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার শহরে, ৩৭টি পৌরসভায়, দুটি সিটি কর্পোরেশনে এবং ২১টি উপজেলায় বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্ব ওজোপাডিকো'র। খুলনা শহরের মতো অন্যান্য জেলায়ও ধারাবাহিকভাবে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে।
ওজোপাডিকো'র কন্ট্রোল রুম থেকে জানা গেছে, রোববার দুপুরে তাদের মোট বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৬৬৯ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে বিদ্যুত পাওয়া গেছে ৬০৯ মেগাওয়াট। বাকি ৬০ মেগাওয়াটের লোডশেডিং ছিল বিভিন্ন এলাকায়। এছাড়া শনিবার (১৫ এপ্রিল) বেলা তিনটায় বাকি ওজোপাডিকো'র আওতাধীন এলাকায় ৯৭ মেগাওয়াটের লোডশেডিং ছিল।
খুলনা শহরের শেখপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবুল হাসান বলেন, 'খবরে দেখছি দেশে রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তাহলে এ তীব্র গরমে এত বেশি লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে কেন?'
গত ১৩ এপ্রিল দেশ রেকর্ড ১৫ হাজার ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাইলফলক অতিক্রম করে। তবে শনিবার সামগ্রিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ফের ১৫ হাজার মেগাওয়াটের নিচে নেমে এসেছে।
তীব্র দাবদাহে সকলকে সচেতন হতে আহ্বান জানিয়েছেন খুলনা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ।
তিনি বলেন, 'বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো। ইফতার ও সেহরিতে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে এবং ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করতে হবে।'
হিট স্ট্রোক হতে বাঁচতে ঠান্ডা পরিবেশে থাকার চেষ্টা করার পরামর্শ দেন তিনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের খুলনা কার্যালয়ের সিনিয়র আবহাওয়া কর্মকর্তা আমিরুল আজাদ বলেন, বাংলাদেশে সাধারণত এপ্রিল মাসে বেশি গরম পড়ে। ২০১৪ সালেও এপ্রিল মাসে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্র রেকর্ড করা হয়েছে।
এ আবহাওয়া কর্মকর্তা বলেন, 'আরও তিন দিন এ রকম তীব্র গরম থাকার পর তাপমাত্র কমবে। তবে আবহাওয়া শুষ্ক থাকার কারণে গরমের অস্বস্তি অনুভূত হবে।'