ঘি না অলিভ অয়েল? উপমহাদেশের খাবার রান্নায় কোনটা ভালো?
আমরা রান্নাঘরে বিভিন্ন কাজে তেল ব্যবহার করি: ভাজি থেকে শুরু করে গ্রিজিং বা বেকিংয়েও। তবে ভারতীয় উপমহাদেশে তেলের পরিবর্তে ঘি-ও ব্যবহার করা হয়, কেবল খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্যই নয়, বরং ঘি-এর স্বাস্থ্যগত উপকারিতার কারণেও। তবে এর মানে এই না যে তেল মাত্রই অস্বাস্থ্যকর, এটি নির্ভর করে আপনি কী তেল ব্যবহার করছেন এবং কীভাবে সেটি ব্যাবহার করছেন। আমরা প্রায়ই অলিভ অয়েলের অনেক উপকারিতার কথা শুনে থাকি। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে অলিভ অয়েল ব্যবহার না করাই ভালো।
ঘি বনাম অলিভ অয়েল: কোনটি ভালো?
পুষ্টিবিদ নমামি আগরওয়ালের মতে, "অধিকাংশ তেলের তুলনায় ঘি-এর স্মোক পয়েন্ট বেশি থাকে। এর অর্থ হলো: উচ্চতাপে এই যৌগ ভেঙে গিয়ে অন্য ক্ষতিকারক যৌগ তৈরি করার আগেই একে অনেক বেশি তাপমাত্রায় গরম করা যেতে পারে। ফলে ভাজি বা সটিং-এর মতো যে রান্নায় অনেক বেশি তাপ প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে ঘি একটি ভালো বিকল্প। এ কারণে দেশীয় খাবার রান্না করার জন্য তুলনামূলকভাবে ঘি-ই আদর্শ। অন্যদিকে অলিভ অয়েলের স্মোক পয়েন্ট কম হওয়ায় একে বেশি গরম করা যায় না। আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন কেন অলিভ অয়েল সালাদ ড্রেসিংয়েও ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়? কারণ সালাদ তৈরির সময় একে একটুও গরম করা হবে না। তাই উচ্চ তাপমাত্রায় খাবার রান্না করতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়। আপনি অন্যান্য উপায়ে এর পুষ্টি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির সুবিধা নিতে পারেন।
ঘি এর উপকারিতা
আপনার খাদ্যতালিকায় ঘি অন্তর্ভুক্ত করার আরও বেশ কিছু ভালো কারণ রয়েছে:
১। শক্তি বৃদ্ধি করে: ঘিতে মিডিয়াম এবং শর্ট-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা আপনার শরীরে শক্তির একটি স্বাস্থ্যকর মাত্রা ধরে রাখে। এ কারণে ঠান্ডা আবহাওয়ায় ঘি খাওয়া আপনার শরীরকে গরম রাখতে পারে ।
২। পরিপাকতন্ত্রকে সুরক্ষা দেয়: ঘিতে বিউটারিক অ্যাসিড থাকে, যা পাকস্থলীতে থাকা প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার জন্য ভালো। এই অ্যাসিড অন্ত্রকে সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে। ঘি পুরো পরিপাকতন্ত্রকে পরিষ্কার করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতেও সাহায্য করে।
৩। ত্বকের জন্য উপকারী: ঘিতে থাকা ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-ই একে একটি ত্বক-বান্ধব খাবার বানিয়েছে। খাওয়া ছাড়াও ত্বককে কোমল করতেও বাহ্যিকভাবে ঘি প্রয়োগ করা যায়।
৪। হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী: ঘি খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে, প্রদাহ কমাতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তবে এর সম্পূর্ণ উপকার পেতে একে পরিমিতভাবে খাওয়া উচিত। ঘি এর স্যাচুরেটেড ফ্যাট উপাদানও কারো কারো জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই আপনার যদি বিদ্যমান কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকে, তবে আগে একজন বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া উচিত।
৫। ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে: ঘিতে রয়েছে কনজুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিড, এক ধরনের ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা আপনাকে পেটের চর্বি পোড়াতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও ঘি চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ।
সূত্র: এনডিটিভি