খামারে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাবে হুমকির মুখে মানব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: গবেষণা
পশুর খামারে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের ফলে এমন কিছু ব্যাকটেরিয়ার উত্থান ঘটছে যা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্থাৎ ইমিউন সিস্টেম প্রতিরোধে সক্ষম। এমনই এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে উল্লেখিত গবেষণার তথ্য থেকে জানা গেছে, পশু-পাখির খাদ্য হিসেবে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল কোলিস্টিন ব্যবহারের ফলে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়ার এমনকিছু স্ট্রেইন তৈরি হয়েছে যা সহজেই মানব প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেমের প্রথম ধাপ এড়িয়ে যেতে সক্ষম।
প্রাণীদের বৃদ্ধি প্রভাবক হিসেবে পরিচিত অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল কোলিস্টিন মূলত শূকর ও মুরগিতে ব্যবহৃত হয়।
ইতোমধ্যেই পশুর খাদ্যে কোলিস্টিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে চীন।
গবেষণাটির নেতৃত্বে থাকা অধ্যাপক ক্রেগ ম্যাকলিন ব্যাখ্যা করে বলেন, "অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স বা প্রতিরোধের চেয়ে এটি অনেক বেশি বিপজ্জনক।"
"গবেষণাটি খামারে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের নির্বিচার ব্যবহারের ঝুঁকিপূর্ণ দিকটি তুলে ধরে। আমরা মোটাতাজা মুরগি পেতে যেয়ে আসলে আমাদের নিজস্ব প্রতিরোধ ব্যবস্থার সাথেই আপস করছি," বলেন তিনি।
১৯৮০-র দশক থেকে কোলিস্টিনের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে কোলিস্টিন প্রতিরোধী জিন বহনকারী ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়ার উত্থান হয় ও ধীরে ধীরে এর বিস্তার ঘটে।
গবেষণায় মানুষের রক্তের সিরামে রেজিস্টেন্স জিন MCR-1 বহনকারী ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়ার সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করা হয়।
প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়, রেজিস্টেন্স জিন বহনকারী ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া মানব রক্তের সিরামের বেলায় অন্তত দ্বিগুণ প্রতিরোধী ছিল।
ম্যাকলিন বলেন, "শঙ্কার বিষয় হলো, ব্যাকটেরিয়া যদি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল পেপটাইড (এএমপি) রেজিস্টেন্ট হয়ে যায়, তাহলে ব্যাকটেরিয়া আমাদের ইমিউন সিস্টেমের একটি স্তম্ভেরও রেজিস্টেন্ট হয়ে যাবে।"
তিনি আরো বলেন, "সামনে এএমপিগুলোর সম্ভাব্য পরিণতি বেশ নেতিবাচক।"
অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্সের ফলে যেখানে একটি মারাত্মক পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে; সেখানে জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে, সুপারবাগের কারণে ২০৫০ সাল নাগাদ ১০ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হতে পারে।