ভারতের কুনো জাতীয় উদ্যানে আরও এক চিতার মৃত্যু
ভারতের মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে আরও একটি চিতার মৃত্যু হয়েছে। গত এক মাসের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয় চিতা মারা গেল ভারতে। খবর বিবিসির।
প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, কার্ডিয়াক ফেইলিওরের কারণে চিতাটির মৃত্যু ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।
কুনো জাতীয় উদ্যানের কর্মকর্তারা ডাউন টু আর্থকে জানিয়েছেন, মৃত চিতার নাম ছিল 'উদয়'। মারা যাওয়ার আগে তার হাঁটাচলা করতে বেশ সমস্যা হচ্ছিল।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ১২টি চিতা ভারতে আনা হয়। গত রবিবার মারা যাওয়া 'উদয়' ছিল তাদেরই একটি।
ভারত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিতা বিলুপ্ত ঘোষণার ৭০ বছরেরও বেশি সময় পর, গত বছর দেশটিতে চিতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
নামিবিয়া থেকে আনা প্রথম ব্যাচের চিতাগুলোর মধ্যে একটি মেয়ে চিতা গত ২৭ মার্চ মারা যায়। ধারণা করা হয়, কিডনি রোগে চিতাটির মৃত্যু ঘটেছে।
ভারতে চিতা ফিরিয়ে আনা নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, ফলে চিতা সম্পর্কিত যেকোনো সংবাদই বড় শিরোনামে প্রকাশ করা হচ্ছে। গত বছর ব্যাপক ধুমধামের সাথে আটটি নামিবিয়ান চিতা (৫টি পুরুষ ও ৩টি মেয়ে) ভারতে স্থানান্তর করা হয়।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরও ১২টি চিতা ভারতে আনা হয়। বনে ছেড়ে দেওয়ার আগে সবগুলো প্রাণীকে প্রথমে কুনো পার্কের একটি নিয়ন্ত্রিত 'কোয়ারেন্টাইন জোনে' রাখা হয়েছিল। বন কর্মকর্তা এবং ডাক্তারদের একটি দল তাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখছে ও পর্যবেক্ষণ করছে।
গত ২৯ মার্চ ভারতে নতুন চারটি চিতাশাবক জন্ম নেয়। গত সেপ্টেম্বরে নামিবিয়া থেকে আসা মেয়ে চিতাগুলোর গর্ভে এই শাবকগুলোর জন্ম হয়।
ভারতের পরিবেশমন্ত্রী ভুপেন্দ্র যাদব এ অর্জনকে 'স্মরণীয় ঘটনা' বলে উল্লেখ করেছিলেন।
ভারতের অনেক লোককাহিনীতে চিতার কথা উল্লেখ রয়েছে বিধায় দেশটিতে এই প্রাণীটির গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকী মূল্য রয়েছে। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে এটিই একমাত্র বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণী যা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
চিতা শিকার, চিতাদের আবাসস্থল হ্রাস এবং তাদের জন্য পর্যাপ্ত শিকারের অভাব ভারতে চিতা বিলুপ্তির প্রধান কারণ। বৃটিশ শাসনামলে বাউন্টি হান্টিং এর মাধ্যমেও চিতাদের নির্মূল করা হয়েছিল, কারণ তারা গ্রামে ঢুকে গবাদি পশু হত্যা করত।
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা ভারতে প্রাণীটির পুনঃপ্রবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে কেউ কেউ চিতার অন্যান্য শিকারীদের হাতে পড়ার সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং পর্যাপ্ত শিকার না পাওয়ার বিষয়েও সতর্ক করেছেন।