ব্রিটিশ রাজপরিবারের ‘করোনেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন আলমগীর
৫০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যের ওয়েলসে চলে গিয়েছিলেন মোহাম্মদ আলমগীর আহমেদের পরিবার। সম্প্রতি কার্ডিফের বাসিন্দা আলমগীর স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের জন্য 'করোনেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড' পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
মোহাম্মদ আলমগীরের বাবা সামসু মিয়া বরাবরই ব্রিটিশ রাজপরিবারের ভক্ত ছিলেন। ছেলের এ অর্জনে তিনি 'ভীষণ গর্বিত' বলে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।
৬৭ বছর বয়সী সামসু মিয়া মঙ্গলবার বাকিংহাম প্যালেসে আয়োজিত গার্ডেন পার্টিতে অংশ নেবেন।
রাজপরিবারের আমন্ত্রণ নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সামসু মিয়া বলেন, "আমি অনেক বেশি খুশি ও উচ্ছ্বসিত। আমি কখনো ভাবিনি যে সরাসরি রাজাকে দেখতে পারবো।"
বাংলাদেশের এক ছোট গ্রাম থেকে উঠে আসা সামসু মিয়া ১৯৬৯ সালে কার্ডিফে চলে যান। একই বছরে বর্তমান রাজা চার্লস ওয়েলসের প্রিন্স হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন।
সেই সময়ের কথা স্মরণ করে সামসু মিয়া বলেন, "আমি তখন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও ওয়েলসের প্রিন্স চার্লসকে দেখেছিলাম। তারা আমাকে দেখে বলেছিল, 'হ্যালো, কেমন আছো?' আমি তখন খুব গর্বিত বোধ করেছিলাম। আমি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও রাজা চার্লস, দুইজনকেই দেখেছি।"
অন্যদিকে অ্যাওয়ার্ডজয়ী মোহাম্মদ আলমগীর জানান, শৈশব থেকেই বাড়ির দেয়ালে নিজেদের ছবির পাশাপাশি ব্রিটিশ রাজপরিবারের ছবি দেখেছেন তিনি।
৪২ বছর বয়সী আলমগীরের একটি টেকনোলজি রিক্রুটমেন্ট কোম্পানি রয়েছে। তিনি ছাড়াও আরও ৫০০ জন করোনেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছেন।
সামাজিক নানা কাজে অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে শিশুদের সাথে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করায় মোহাম্মদ আলমগীরকে করোনেশন অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়েছে।
নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, "এটা আমার জন্য খুব সম্মানের বিষয়। আমি পুরস্কারটি পেয়ে খুবই গর্বিত বোধ করছি। এটা অনেক বড় পদক্ষেপ কেননা কৃষ্ণাঙ্গ ও জাতিগতভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা সচরাচর এমন অ্যাওয়ার্ড পান না।"
মোহাম্মদ আলমগীর আরও বলেন, "গার্ডেন পার্টিতে আমি এবং আমার বাবা উপস্থিত থাকবো। এটা দারুণ একটা অভিজ্ঞতা হবে। আমদের যদি সাথে রাজার দেখা নাও হয়, তবুও বেশ উপভোগ করবো।"
সামসু মিয়ার আরেক ছেলে ড. আবদুল-আজিম আহমেদের সাথেও ব্রিটিশ রাজপরিবারের যোগাযোগ রয়েছে। তিনি ওয়েলস মুসলিম কাউন্সিলের জেনারেল সেক্রেটারি। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর সময় বর্তমান রাজা চার্লস ওয়েলসে আসার পর হাতেগোনা যে কয়েকজন মানুষ রাজা চার্লসের সাথে দেখা করতে পেরেছিলেন, তিনি তাদের একজন।
নিজের দুই সন্তান সম্পর্কে সামসু মিয়া বলেন, "আমার এক ছেলে রাজার সাথে দেখা করতে গিয়েছেন এবং আরেক ছেলে অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করতে যাচ্ছে। আমি খুবই আনন্দিত। আমি মনে করি যে এটা খুব চমৎকার একটা ব্যাপার।"