ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগের প্রভাব সেন্টমার্টিনে, বইছে ঝড়ো হাওয়া
সেন্টমার্টিনে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হয়েছে। সকাল ৭ টা থেকে বৃষ্টির সঙ্গে বইছে ঝড়ো হাওয়া; দ্বীপের কাছাকাছি সাগর উত্তাল রয়েছে।
সকাল ৮টায় দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এসব বিষয় জানিয়েছেন সেন্টমার্টিনের ৪ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাজির হোছেন।
তিনি বলেন, "রাতে আশ্রয় কেন্দ্র ও হোটেলে আশ্রয় নেওয়া লোকজন সকালে বাইরে বেরিয়ে এসেছেন। আমরা তাদের খাবার তৈরি করে দিয়ে আবারও নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে যেতে বলছি।"
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, কক্সবাজার জেলার ৬৩৬ টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ২৮ হাজার ২৫ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তার মধ্যে সেন্টমার্টিনের ৩৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৬ হাজার জন অবস্থান করছে।
সেন্টমার্টিনের ৬ ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইয়ামিন টিবিএসকে বলেন, মানুষ রাতে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকলেও সকাল থেকে বাড়ি ফিরছে। অনেকে গবাদি পশুগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।
"মানুষ ঝড়ের চাইতে জলোচ্ছ্বাসকে বেশি ভয় পাচ্ছেন। কারণ এখানে দুই থেকে তিনফুট জলোচ্ছ্বাস হলেই দ্বীপের অনেকটা তলিয়ে যাবে," যোগ করেন তিনি।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন অতিপ্রবল এই ঘূর্ণিঝড়ে প্রথম ও শক্তিশালী আঘাতটি হানবে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে। মাত্র ৩.৬ মিটার দ্বীপটির গড় উচ্চতা এই দ্বীপে ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসেরও শঙ্কা করা হচ্ছে। যেখানে এই মুহূর্তে জীবন শঙ্কা নিয়ে অবস্থান করছেন নারী-শিশুসহ প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মানুষ।
এর আগে শনিবার (১৩ মে) মধ্যরাতে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৭ নম্বর বুলেটিনে বলা হয়, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও আরও ঘনীভূত হয়ে আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।