গৃহবন্দি খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আওয়ামী লীগ সরকার গৃহবন্দী করে রেখেছে এবং তিনি এখন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির পদযাত্রার আগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
"সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা দিয়ে এই সরকার আমাদের বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে আটকে রেখেছিল। এখন ঘরে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে," বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, "বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখন অত্যন্ত অসুস্থ। তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।"
"আমাদের নেতা তারেক রহমানকে বিদেশে নির্বাসিত করে রেখেছে সরকার। আমাদের এমন নেতা নেই যার বিরুদ্ধে একের অধিক মামলা নেই," বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, "মার্কিন ভিসানীতিতে সরকার বেকায়দায় পরে গেছে। তাই তারা পাচার করা টাকা রেমিট্যান্স হিসেবে আনছে। আবার সেই টাকায় আড়াই পার্সেন্ট ইনসেনটিভ দিতে হচ্ছে।"
"এখন টাকা পাচারকারীদের পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়েছে। এখন চুরি করেও পুরস্কার পাওয়া যায়," বলেন তিনি।
বিদ্যুতের অসহনীয় ও নজিরবিহীন লোডশেডিং, বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির পদযাত্রা করে।
এছাড়াও পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জারিফ তুহিন, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক প্রমুখ।
সরকারকে হুশিয়ার করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, "নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। নইলে পালাবার পথ টুকুও পাবেন না। এখন তো আবার আমেরিকা পালাবার পথ বন্ধ করে দিয়েছে।"
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, "আসুন না; রাস্তায়, পুলিশ, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরকে ছাড়া। দেখবেন কার কত সাহস। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন, দেখবেন কার কত সাহস আর শক্তি।"
"এ দেশটা কারো বাবার নয়, এটা আপনার আমার সবার। সবাই মুক্তিযুদ্ধ করে এ দেশটাকে আমরা স্বাধীন করেছি। কিন্তু সেই দেশে কোন কথা বলার অধিকার নেই। নিরাপত্তা নেই," বলেন তিনি,
ফখরুল বলেন, "আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিচার বিভাগকে হাতে নিয়ে সব কুট কৌশল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করলো। কারণ তারা বুঝতে পারলো নির্বাচনে গেলে জনগণ তাদেরকে ভোট দিবে না।"
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আব্দুস সালাম বলেন, "আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমাদের নেতাদের গ্রেপ্তার করেছে এই সরকার। এরা আদালতের নির্দেশ পর্যন্ত মানছে না। তারা কি ভেবেছে আমাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করলেও আন্দোলন বন্ধ হবে? হবে না।"
"স্বয়ং আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মজিবুর রহমান বুঝতে পেরেছিলেন, এই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে আর চায় না। তিনি জানতেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বাটপার, চোর, লুণ্ঠনকারি। তাই তিনি আওয়ামী লীগ কে বিলুপ্ত করেছিলেন," বলেন ফখরুল।