খালেদা জিয়ার বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ যুক্তিসংগত নয়: কাদের
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি, তার চিকিৎসা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ বুধবার (১৪ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সড়ক নিরাপত্তা-বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'খালেদা জিয়ার ব্যাপারটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে দেশের বাইরে কোনো হস্তক্ষেপ যুক্তিসংগত নয়।'
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলকে একটি চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের বিষয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এবিষয়ে আজ ওবায়দুল কাদেরকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।
গত সোমবার (১২ জুন) পাঠানো ওই চিঠিতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের হাই- রিপ্রেজেন্টেটিভকে গণতান্ত্রিক সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
হাই- রিপ্রেজেন্টেটিভ জোসেপ বোরেলকে তারা একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। একইসঙ্গে, খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সরকারের সঙ্গে বিএনপিসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সরকারের আলোচনার উদ্যোগ নিতেও বলেছেন।
এবিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এখন বেগম জিয়ার ব্যাপারে তাঁর অসুস্থতা নিয়ে যতটা তাদের উদ্বেগ, তার চেয়ে মনে হয়, তাঁকে নিয়ে রাজনীতি করাটাই এযাবৎ তাদের বড় চর্চা বলে মনে করি।' খালেদা জিয়্যার মুক্তির বিষয়ে আইনমন্ত্রীই ভালো বলতে পারবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির দাবির বিষয়ে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, "আওয়ামী লীগ বেগম জিয়াকে জেলে রেখেছে, তত্ত্বাবধায়ক বাদ দিয়েছে- বিএনপির দুটি অভিযোগই মিথ্যা। সবার আগে বিএনপি নেতৃত্বের টপ টু বটম পদত্যাগ করা দরকার। দৃশ্যমান কোনো আন্দোলন তারা করতে পারেনি। বিএনপির ভেতরে গণতন্ত্রের চর্চা নেই, দেশের গণতন্ত্র আনবে কীভাবে।"
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির আলোকে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কাদের বলেন, বাস্তবে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। "যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্রের নামে যা হয়েছে গতা আমরা দেখেছি। ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেননি। তাদের গণতন্ত্রও ত্রুটিমুক্ত নয়। আমাদের গণতন্ত্রও সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত বলছি না। ত্রুটিমুক্ত করার চেষ্টা করছি। নির্বাচন কমিশনকে আইন করে স্বাধীন করা হয়েছে।
এর আগে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের (পরিবহন) প্র্যাকটিস ম্যানেজার ফেই ডেং। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান।
অনুষ্ঠানের প্রথম অংশে সড়কের নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (অপরাধ ও অপারেশন) মো. আতিকুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন।