কিডনি থেকে সবচেয়ে বড় পাথর অপসারণের রেকর্ড!
শ্রীলঙ্কায় এক রোগীর কিডনি থেকে সবচেয়ে বড় পাথর অপসারণের রেকর্ড করেছে দেশটির একদল চিকিৎসক। পাথরটির আকার অনেকটা জাম্বুরার মতো, লম্বায় কলার সমান এবং ওজনের দিক থেকে চারটি হ্যামস্টারের সমান।
গত ১ জুন শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনীর চিকিৎসকরা কিডনি থেকে পাথরটি অস্ত্রপচারের মাধ্যমে সফলভাবে অপসারণ করেছে। গত মঙ্গলবার দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের হিসেব মতে, ১৩.৩৭২ সেন্টিমিটার লম্বা ও ৮০১ গ্রাম ভারী পাথরটি মোট দুটি বিশ্বরেকর্ড ভেঙেছে।
এর আগে কিডনি থেকে সবচেয়ে বড় পাথর অপসারণের রেকর্ড ছিল ভারতের চিকিৎসকদের দখলে। ২০০৮ সালে অপসারণ করা ঐ পাথরটি ছিল লম্বায় ১৩ সেন্টিমিটার।
অন্যদিকে কিডনি থেকে সবচেয়ে ভারী পাথর অপসারণের রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের চিকিৎসকদের দখলে। ২০০৮ সালে অপসারণ করা পাথরটির ওজন ছিল ৬২০ গ্রাম।
গিনেস কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে, সম্প্রতি কলম্বোর আর্মি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসারণ করা পাথরটি লম্বায় ও ওজনের দিক থেকে দুটি রেকর্ডই ভেঙেছে।
কিডনির পাথর মূলত কঠিন পদার্থের একটি টুকরা যা কিডনি, মূত্রনালী কিংবা মূত্রাশয়ে তৈরি হতে পারে। জিনগত কিংবা আচরণগত ফ্যাক্টরের কারণে মূলত এ অবস্থার তৈরি হয়।
কিডনিতে পাথর হওয়া খুব সাধারণ ঘটনা। শতকরা ১০ ভাগ মানুষই জীবনের কোনো এক পর্যায়ে এ সমস্যায় ভুগতে পারেন। কিছু গবেষণায় দেখা যায়, সময়ের সাথে সাথে এর প্রবণতা যেন আরও বাড়ছে।
দেহে নিয়মিত পানির চাহিদা পূরণের মাধ্যমে এবং সোডিয়ামের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে কিডনির পাথরের বিড়ম্বনা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা যেতে পারে।
মায়ো ক্লিনিকের মতে, দৈনিক ১.৮৯ লিটার থেকে ২.৮ লিটার পানি পানের মাধ্যমে মুত্রতন্ত্র অনেকটা পরিষ্কার থাকে। এতে করে ৩ মিলিমিটার ব্যাসের চেয়ে ছোট পাথরগুলো দেহ থেকে অপসারিত হয়ে যায়।
তবে দেহ থেকে তিন মিলিমিটার ব্যাসের বড় কিডনির পাথর অপসারণে অস্ত্রপচারের মতো জটিল চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে অপসারণের কাজটি একজন রোগীর জন্য বেশ পীড়াদায়ক।
চিকিৎসায় শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে কিডনির পাথর ভেঙে ফেলা হয়। কিংবা পিঠের নিচের দিকে ছোট ছিদ্র করেও অস্ত্রপচারের মাধ্যমে পাথর অপসারণ করা হয়।
২০১৮ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, নারী ও পুরুষের উভয়েরই কিডনিতে পাথরের প্রবণতা বাড়ছে।
বর্তমানে কিডনিতে পাথর থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হতে চিকিৎসকেরা মূলত আলট্রাসাউন্ড কিংবা সিটি স্ক্যানের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকেন।
গত ৩০ বছরে চিকিৎসাক্ষেত্রে সর্বোপরি সিটি স্ক্যান প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে করে পূর্বের তুলনায় দেহে বেশি পরিমাণে কিডনির পাথর শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে।