সরবরাহ ব্যাহত, ইউরোপে গ্যাসের দাম ফের বাড়ছে
সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় ইউরোপে আবারো বাড়ছে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম। গত কয়েক মাসে দাম কমতে থাকলেও কয়েকটি উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধের ঘোষণায় জুনে দফায় দফায় তা বাড়ছে। তবে পর্যাপ্ত গ্যাস মজুদ থাকায় এখনই বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখছেন না গবেষকরা।
ইন্ডিপেনডেন্ট কমোডিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের (আইসিআইএস) তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের শুরু থেকে গ্যাসের দাম ৫২ শতাংশ বেড়েছে। এ ধারা সামনেও অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নরওয়ের মূল গ্যাস উৎপাদন কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সময় লাগায় দাম বাড়ছে।
চলতি বছর গ্যাসের দাম বাড়তে থাকলেও তা গত বছরের গ্রীষ্মের তুলনায় অনেক কম। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর ইউরোপে জ্বালানি সংকট দেখা দেয়। এ সময় গ্যাসের দাম বাড়তে থাকে। তবে সরবরাহ ব্যাহত হলেই দেশগুলো কতটা ঝুঁকিতে পড়ছে, তা দেখিয়ে দিচ্ছে সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতি।
নরওয়ের গ্যাস নেটওয়ার্ক অপারেটর গ্যাসকো তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, গ্যাস প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত একটি কেন্দ্র আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এটি ২১ জুন থেকে কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিল। প্রক্রিয়াকরণ সমস্যার কারণে আরও দুটি গ্যাস প্লান্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।
ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে গ্যাস সরবরাহে রাশিয়াকে হটিয়ে শীর্ষস্থান দখল করে নরওয়ে। ইউরোপে এখন মোট ২৪ শতাংশ গ্যাস যায় নরওয়ে থেকে। আর রাশিয়া সরবরাহ করে ১৫ শতাংশ।
এদিকে আরও একটি গ্যাসের উৎস হারাতে হতে পারে ইউরোপকে। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) প্রকাশিত খবরে বলা হয়, অক্টোবর থেকে নেদারল্যান্ডসের গ্রোনিনজেন গ্যাস ফিল্ড স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হতে পারে। এ খবরের পর থেকেই গ্যাসের দাম বাড়তে থাকে।
তবে ডাচ সরকারের এক মুখপাত্র শুক্রবার (১৬ জুন) জানান, গ্রোনিনজেন গ্যাস ফিল্ড নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
একসময় ইউরোপের বাজারে সর্বোচ্চ গ্যাস সরবরাহকারীদের একটি ছিল নেদারল্যান্ডস। তবে ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে দেশটিতে উৎপাদন কমিয়ে আনা হচ্ছে।
উৎপাদন নিয়ে শঙ্কার মধ্যে দাম বাড়লেও ভরসা দিচ্ছে গ্যাস মজুতের পরিমাণ। ইউরোপের গ্যাস স্টোরেজগুলো ৭৩ শতাংশ পর্যন্ত পরিপূর্ণ। যেখানে গত পাঁচ বছরে এমন সময়ে গড়ে ৫৬ শতাংশ পূর্ণ থাকত।
কনসালটেন্সি উড ম্যাকেঞ্জি-র সিনিয়র গ্যাস গবেষক ম্যাসিমো ডি ওডোয়ার্ডো বলেন, 'গত গ্রীষ্মে যে আতঙ্কের মধ্য দিয়ে আমরা গেছি, এমনটা হওয়ার শঙ্কা এবার খুবই কম। তবে অপরিকল্পিতভাবে সরবরাহ ব্যাহত হলে দাম বাড়তে থাকবে।'