টরন্টোর মেয়র পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা কে এই মলি?
কানাডার টরন্টোতে মেয়র বাছাইয়ের জন্য উপনির্বাচন হয়ে গেল সোমবার। নির্বাচনে জিতে মেয়র পদ নিশ্চিত করেছেন অলিভিয়া চাউ।
তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে টরন্টোর মেয়র নির্বাচন দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে অন্য একটি কারণে। এ নির্বাচনে মেয়র হওয়ার দৌড়ে শামিল হয়েছিল মলি নামের একটি কুকুরসহ মোট ১০২ জন প্রার্থী।
আসলে মেয়রপ্রার্থী হয়েছিলেন মলির মালিক টবি হিপস। তিনি বলেছিলেন, জয়লাভ করলে মলিকে তিনি প্রথম কুকুর হিসেবে টরন্টোর 'অনারারি মেয়র' নিযুক্ত করবেন।
কে এই মেয়রপ্রার্থী কুকুর টবি
মেয়র নির্বাচনে মলির মালিক টবি হিপস ভোট পেয়েছেন মাত্র ৬০০-র মতো। তাই আপাতত মলির মেয়র হওয়ার 'স্বপ্ন' স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। তবে জয়-পরাজয়ের চেয়েও বড় কথা হচ্ছে, এই নির্বাচন দেখিয়ে দিয়েছে যে গণতান্ত্রিক অধিকার শুধু মানুষ নয়, পশুর জন্যও বটে।
ছয় বছর বয়সী কুকুর নাম মলিকে মেয়র পদে বসানো প্রসঙ্গে টবি বলেছিলেন, 'আমি মনে করি, সিটি হলে যদি প্রতিনিধিদের পাশাপাশি একটি প্রাণী থাকে, তবে ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে।'
মলিকে সঙ্গে নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন টবি। তহবিলও তুলেছেন। এর মধ্যে ২০ হাজার ডলার অনুদান খোদ টবিই দিয়েছেন।
মলি আসলে রুশ রেসকিউ ডগ। রাশিয়ার সোচি শহর থেকে তাকে কানাডায় নিয়ে আসা হয়। তার প্রথম মালিক ছিলেন টবির প্রয়াত মা। ২০২১ সালে তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
টবি ও মলির লক্ষ্য ছিল টরন্টোকে আরও বেশি কুকুরবান্ধব শহর বানানো। টবি বলেছিলেন, শীতকালে টরন্টোর রাস্তায় লবণের অত্যধিক ব্যবহারের ফলে মলির মতো কোমল পায়ের কুকুরের পাঞ্জা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে রাস্তায় লবণের ব্যবহার বন্ধ করবেন।
এক শীতে লেক লেক অন্টারিওর রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে টবি লক্ষ করেন রাস্তার অতিরিক্ত লবণে মলির খুব অসুবিধা হচ্ছে। এরপরই তিনি ও মলি রাজনীতিতে নামতে উদ্বুদ্ধ হন।
এছাড়া টবির পরিকল্পনা ছিল, মেয়র নির্বাচিত হলে আবাসন খাতের অত্যাধিক খরচ কমাবেন, বিলিয়ন ডলারের ব্যবসার ওপর কর বাড়াবেন। এছাড়া নির্বাচিত হলে নতুন বাড়ি ও বাণিজ্যিক ভবনগুলোর হিটিং সিস্টেমে জীবাশ্ম-জ্বালানির ব্যবহারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।
টবির পরিবারের রাজনীতি করার ইতিহাস আছে। তার বাবা অ্যাড্রিয়ান হিপস ছিলেন স্কারবারো শহরের কাউন্সিলর। তার তার পরদাদা এ.এ. হিপস ছিলেন কো-অপারেটিভ কমনওয়েলথ ফেডারেশন নামক একটি সংগঠনের সহপ্রতিষ্ঠাতা। টবি নিজেও রালফ নাদেরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণা চালানোসহ নানা সময় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যুক্ত ছিলেন।
এবার জিততে না পারলেও মলির নির্বাচনে অংশগ্রহণই বড় সাড়া ফেলেছে। কে জানে, অদূর ভবিষ্যতে হয়তো মলির মতো কোনো পশু ঠিকই নির্বাচনে জিতে মেয়র হয়ে যাবে কোনো শহরের!