২০২৩ অর্থবছরের মে মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি আবারও ৫০০ কোটি টাকা ছাড়ালো
২০২২-২৩ অর্থবছরের মে মাসে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সদ্য সমাপ্ত এই অর্থবছরে দ্বিতীয়বারের মতো ৫০০ কোটি টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, মে মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৫৫১ কোটি টাকার। এর আগে, এপ্রিলে ৫৮১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল। পরপর দুই মাস গ্রাহকরা সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর চেয়ে কিনেছেন বেশি।
এ সত্ত্বেও ২০২৩ অর্থবছরের ১১ মাসে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি ঋণাত্মকে ঠেকেছে। আলোচিত সময়ে (জুলাই-মে) সরকার ঋণ নিয়েছে ৭৪,৭০০ কোটি টাকা। আর এর বিপরীতে মুনাফা ও মূল বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৭৭,৭০০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ১১ মাসে যা বিনিয়োগ হয়েছে, তারচেয়ে ৩,০২৯ কোটি টাকা বেশি পরিশোধ করেছে সরকার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গত বছরের শেষ দিকে ব্যাংকিং খাত নিয়ে অনেক নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সে সময় ব্যাংকগুলো ডিপোজিট উঠিয়ে নেওয়ার (আমানত উত্তোলন) চাপের মুখে পড়েছিল। ওই পরিস্থিতিতে মানুষ সঞ্চয়পত্র কেনার দিকেই ঝুঁকেছিল বেশি।
এছাড়া, ব্যাংক আমানতের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার সামান্য বেশি হওয়ায় গ্রাহকরা সঞ্চয়পত্র কিনতেই বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন বলে জানান তিনি।
২০২৩ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র কেনার চেয়ে বেশি ভাঙানো হয়েছে উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, "ব্যাংক ঋণের তুলনায় সরকার সঞ্চয়পত্রের বিপরীতে উচ্চ হারে সুদ প্রদান করছে। তবে এখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পরামর্শ অনুযায়ী সুদ বাবদ খরচ কমাতে সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছে।"
২০২৩ অর্থবছরে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫,০০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল, যদিও পরবর্তীতে তা ২০,০০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, আলোচিত অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র সংক্রান্ত সুদ ব্যয় বাবদ প্রাথমিকভাবে ৪২,৬৭৫ কোটি টাকার হিসাব ধরা হয়েছিল, যা পরে সংশোধিত বাজেটে ৪৫,১০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সুযোগ সামনে আরও সংকুচিত হতে চলেছে; কারণ সরকার ২০২৪ অর্থবছরের জন্য এই খাত থেকে ঋণের লক্ষ্য ৪৯ শতাংশ কমিয়ে ১৮,০০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছে।