সুইডেন-তুরস্ক ইস্যুর পর এবার ইউক্রেনের সদস্যপদ নিয়ে সম্মেলনে বসছে ন্যাটো
সুইডেন-তুরস্ক ইস্যুর পর এবার ইউক্রেনের সদস্যপদ নিয়ে বিভেদ কাটিয়ে উঠতে সম্মেলনে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর নেতারা।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝেই আজ মঙ্গলবার (১১ জুলাই) শুরু হতে যাচ্ছে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলন। রুশ সীমান্তবর্তী দেশ লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে।
দুই দিন ব্যাপী এ সম্মেলনে একত্র হচ্ছেন ন্যাটোভুক্ত ৩০ সদস্যরাষ্ট্রসহ অন্তত ৪০ দেশের শীর্ষ নেতারা। ইতোমধ্যেই সুইডেনের সামরিক জোটটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া নিয়ে তুরস্কের যে বিরোধিতা ছিল, সেটির সমাধান হয়েছে।
এবার পুরো বিশ্বের আগ্রহ ইউক্রেনের সদস্যপদ নিয়ে। ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ প্রদানের বিষয়ে এই সম্মেলনে কার্যকরী আলোচনা হতে পারে।
এছাড়াও সম্মেলনে আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর ন্যাটোর এতটা সক্রিয়তা যেন এটাই প্রথম।
কূটনীতিবিদদের ধারণা, ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্যপদ গ্রহণে যে মতপার্থক্য ছিল, সেটা অনেকটা কমে আসছে। যুদ্ধ চলাকালীন ইউক্রেনকে যে ন্যাটোর সদস্যপদ প্রদান করা হবেনা, সেটা নিয়ে কমবেশি সকল দেশই একমত প্রকাশ করেছেন।
কিন্তু যুদ্ধ শেষ হলে ঠিক কবে নাগাদ এবং কোন শর্তাবলির ভিত্তিতে ইউক্রেনকে সদস্যপদ দেওয়া হবে সেটি নিয়ে সদস্যভুক্ত দেশগুলো এখনো ঐক্যে পৌঁছাতে পারেনি।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ন্যাটো সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
তিনি বহুদিন ধরেই ইউক্রেনের সদস্যপদ প্রাপ্তির বিষয়ে ন্যাটোর পরিকল্পনা জানতে চেয়ে জোটটিকে চাপ দিয়ে আসছেন। জেলেনস্কির পরিকল্পনা, যুদ্ধ শেষের পর যাতে কোনো বিলম্ব না করে দ্রুতই দেশটি সামরিক জোটটিতে যোগ দিতে পারে।
গত সোমবার এক টুইটে জেলেনস্কি বলেন, "আমরা মৌখিক সম্মতি পেয়েছি। তবে আমরা বুঝতে পেরেছি যে, ভবিষ্যতে আমরা জোটটিতে থাকবো।"
জেলেনস্কি জানান, দ্রুত ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের জন্য ইউক্রেনের পক্ষ থেকে পরিকল্পনামাফিফ কাজ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে ন্যাটোভুক্ত পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোও ইউক্রেনকে সামরিক জোটটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে সমর্থন দিয়েছে। দেশগুলো মনে করে, ন্যাটোর মতো শক্তিশালী সামরিক জোটের মধ্যে ইউক্রেনকে আনা হলে সুদূর ভবিষ্যতে রাশিয়া ফের দেশটিতে আক্রমণ করতে পারবে না। রাশিয়ার আক্রমণ থেকে দেশটিকে বাঁচাতে এটিই সর্বোত্তম উপায়।
মিত্র দেশগুলোতে সোভিয়েত আক্রমণের ঝুঁকি মোকাবেলার প্রাথমিক লক্ষ্য নিয়ে ১৯৪৯ সালে ন্যাটো গঠিত হয়।
তবে, কোনো পদক্ষেপের কারণে যাতে ন্যাটোর সাথে রাশিয়ার সরাসরি সংঘর্ষ না হয় সে বিষয়ে বরাবরই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানির মতো দেশগুলো। এমনটা হলে আরেকটি বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
কূটনীতিকরা বলেছেন, ন্যাটোতে যোগদানের জন্য ইউক্রেনকে কী শর্ত পূরণ করতে হবে এবং কীভাবে এর অগ্রগতি নিয়ে আগানো উচিত সেদিকটাও আলোচনার বিষয়বস্তুতে থাকছে।