আগামী ১ মাস বান্দরবানের রুমা’র বগালেক ভ্রমণ করা যাবে সপ্তাহে কেবল ৩ দিন
বান্দরবানের রুমায় বেড়াতে যাওয়া পর্যটকেরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপাত্তায় সপ্তাহে তিনদিন ভ্রমণ করতে পারবেন। সকল পর্যটককে সকাল দশটায় গিয়ে বিকেল সাড়ে তিনটার মধ্যে উপজেলা সদরে ফিরে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর রুমা জোন কমান্ডার লেফটেনেন্ট কর্নেল শাহরিয়ার ইকবাল।
রোববার (১৬ জুলাই) সকালে রুমা জোনের মাল্টিপারপাস হলে পর্যটকদের ভ্রমণসংক্রান্ত সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
গত বছর অক্টোবর থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি ও আলীকদম উপজেলায় দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি পর্যায়ক্রমে রোয়াংছড়ি ছাড়া অন্য তিন উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর ভ্রমণসংক্রান্ত একটি সমন্বয় সভায় আয়োজন করে সেনাবাহিনীর রুমা জোন।
সভায় লেফটেন্টে কর্নেল শাহরিয়ার ইকবাল বলেন, 'পর্যটকেরা বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার রুমা সদর থেকে সকাল দশটায় শুধু বগালেক ভ্রমণে যেতে পারবেন। বিকেল সাড়ে তিনটার মধ্যে তাদেরকে উপজেলা সদরে ফিরতে হবে। এভাবে আগামী ১৬ আগষ্ট পর্যন্ত এক মাস চলবে। পরবর্তীসময়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কেওক্রাডং পাহাড় ও অন্যান্য সকল পর্যটন স্পটে ভ্রমণ করা যাবে।'
এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএএনএফ) এবং অন্য দুষ্কৃতিকারীদের তথ্য দিয়ে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।
সমন্বয় সভায় আরও বক্তব্য দেন রুমা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান শৈবং মারমা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাম্পুই বম, ট্যুারিষ্ট গাইড সজীব দাশ ও ব্যবসয়ী নাছির উল্লাহ।
পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলায় সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ওরফে 'বম পার্টি' অর্থের বিনিময়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন 'জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া'-এর সদস্যদেরকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয় বলে গত বছর অক্টোবর মাসে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানায় র্যাব।
এরপর ওই বছরের ১৭ অক্টোবর থেকে জঙ্গি ও কেএনএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার অভিযান অব্যাহত রেখেছে র্যাব ও সেনা সদস্যের যৌথ বাহিনী।
তখন থেকে রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় অনিদির্ষ্টকালের জন্য স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন। পরবর্তীসময়ে অভিযান চালানো হয় থানচি উপজেলাতেও।
এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের কারণে কয়েক দফা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়ে থানচি ও আলীকদম উপজেলাতেও পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পরে আলীকদম উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। পর্যায়ক্রমে ১৪ জুলাই রুমা ও থানচি দুই উপজেলা থেকেও পর্যটক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।