আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আর নির্বাচনে যাব না: হিরো আলম
ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের বাইরে হামলার শিকার স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম জানিয়েছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে তিনি আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না।
হিরো আলম বলেন, 'এ সরকারের আমলে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনবার নির্বাচন করে মার খেয়েছি। প্রথমে ২০১৮ সালে, এরপর বগুড়ায় উপ-নির্বাচনে জিতেও ফল দেয়নি। আবার ঢাকায় উপ-নির্বাচন করতে এসে মার খেলাম। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আর নির্বাচনে যাব না।'
ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে হামলার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
গত সোমবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে বনানীর বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে একদল লোক হিরো আলমের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় মোট নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন-অর-রশিদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টার সাক্ষাৎ সম্পর্কে হিরো আলম বলেন, 'ঢাকা-১৭ আসনে উপ-নির্বাচনে আমার ওপর হামলায় কারা কারা জড়িত ছিল তাদের শনাক্তের জন্য আমাকে ডাকা হয়েছিল। আমি ডিবির প্রতি কৃতজ্ঞ তারা দ্রুত হামলাকারীদের ধরেছে, যা ভাবতেও পারিনি। আমি ভেবেছিলাম হামলাকারীরা ক্ষমতাসীন দলের লোক, তাদের হয়তো ধরবে না।'
হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে হিরো আলম বলেন, 'এ হামলায় আমি মারাও যেতে পারতাম।'
হিরো আলম বলেন, 'আমাকে পছন্দ না হলে আমাকে ভোট দেবেন না, কিন্তু আমাকে মারার অধিকার দেওয়া হয়নি। হামলাকারীরা আমাকে পাষণ্ডের মতো মেরেছে, মাটিতে পড়ে যাওয়ার পরও মেরেছে।'
হামলার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন হিরো আলম। তিনি বলেন, 'আমাকে যখন মারে তখন আমি কেন্দ্রের সামনে থাকা বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) গাড়ির কাছে গিয়েছিলাম। তারা কিন্তু গাড়ি থেকেই নামেননি। কেন্দ্রের ভেতরে থাকা পুলিশ সদস্যরা আমাকে মারার কথা জেনেও কেন বের হননি?' পুলিশ নির্বাচনের দিন তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে হিরো আলম আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার তদন্তের দাবি জানান।
হামলার ঘটনায় জড়িতদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, 'হামলাকারীদের গায়ে নৌকার সিল দেখেছিলাম। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের কিছু লোকজন ছিল, কিছু ভাড়া করা লোক ছিল। কিছু লোক আওয়ামী লীগের ব্যাজ পরা ছিল।'
হামলার ঘটনা সাজানো এমনও শোনা গেছে — এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, 'যাদের ধরে আনা হয়েছে তাদেরকে তো রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ডে তারা যদি বলে ওরা আমার লোক, তাহলে আমি তা মাথা পেতে নেব।'
আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার বিষয়ে হিরো আলম বলেন, নির্বাচন পরিস্থিতি এরকম হলে স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও আর নির্বাচনে অংশ নেবেন না। ঢাকা-১৭ উপ-নির্বাচনে জালভোটের দাবি করে হিরো আলম বলেন, 'আমার কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে। ১,০০০ করে টাকা ভোট কেন্দ্রে দেওয়া হয়েছে। ভোটার তালিকায় নাম না থাকা মানুষও সর্বোচ্চ ৫০টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন।'
বিদেশি কয়েকটি মিশনের হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানানোর বিষয়ে তিনি বলেন, 'তারা (বিদেশিরা) দেখছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তাই তারা কথাবার্তা বলেছে।'