দুই দলের সমাবেশ: ঢাকার সব প্রবেশমুখে তল্লাশি, বাসের অপেক্ষায় যাত্রীরা
বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সমাবেশকে ঘিরে আজ (২৮ জুলাই) সড়কে গণপরিবহন কম থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন ঢাকার যাত্রীরা।
শুক্রবার হওয়াতে জরুরী কাজ ব্যতীত রাস্তায় লোকজন কম বের হলেও গণপরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে। যাত্রীরা দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থেকেও পাচ্ছে না গণপরিবহন।
মিরপুর-১০ গোল চত্বরে দেখা যায় অন্তত ১০০ জন যাত্রী দাড়িয়ে আছেন বাসের অপেক্ষায়।
শাহবাগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন মইনুল ইসলাম। তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "প্রায় ৩০ মিনিট দাঁড়িয়ে আছি কোনো বাস পাচ্ছিনা। ২/১ টি বাস আসলেও সেগুলো মানুষে পরিপূর্ণ। হাসপাতালে রোগী আছে তাই জরুরি যাওয়া দরকার।"
শিকড় পরিবহনের এক সহকারী টিবিএসকে বলেন, "আজকে সমাবেশ থাকায় অনেক গাড়ির মালিকই বাস বের করেনি। আমরা ২/১ টি বাস নিয়ে যারা বের হয়েছি তারা দুপুরের পরে আবার বন্ধ করে দিবো।"
অপেক্ষারত আর এক যাত্রী ইলিয়াস হোসেন টিবিএসকে বলেন, "রাস্তায় শুক্রবারও গাড়ি পাওয়া যাবে না এমনটা বুঝলে বের হতাম না। মহাখালী যাওয়ার জন্য কোনো বাস পাচ্ছি না প্রায় এক ঘণ্টা ধরে।"
আব্দুল্লাহপুরের অপেক্ষারত একজন যাত্রী সুমন বলেন, "আমি ডেমরা যাব। আসমানী পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু একটা গাড়িও পাচ্ছিনা।"
প্রতি শুক্রবারে কি এমন পরিবহন সংকট তৈরি হয়, জানতে চাইলে তিনি বলেন, "শুক্রবারেও পরিবহন স্বাভাবিক থাকে। তবে আজকে দুই দলের কর্মসূচির জন্যই পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে পরিবহন সংকট থাকায় বাইক ও সিএনজি চালকরা বেশি ভাড়া দাবি করছে।"
বেশি ভাড়া দাবি করার কথা স্বীকার করে রুবেল নামের একজন বাইক রাইড শেয়ার সার্ভিস প্রোভাইডার বলেন, "আসলে চারিদিকে পুলিশের চেকপোস্ট, এছাড়া কখন কী ঘটে একটা আতঙ্ক নিয়ে আজকে আমরা বাইক চালাচ্ছি। এইজন্য একটু ভাড়াটা বেশি দাবি করছি। তবে সবাই কিন্তু আমাদের দাবি করা ভাড়া দিচ্ছে না। দরদাম করেই ভাড়া করছে।"
গণপরিবহন সংকটে রাস্তায় বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার্থীরাও পড়েছেন ভোগান্তিতে। ২/১ টি বাস আসলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম
বেলা ১১:৩৫
ঢাকার প্রবেশমুখে যাত্রীদের ফোন চেক করছে পুলিশ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও আওয়ামী লীগের তিনটি সহযোগী সংগঠন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিশাল সমাবেশকে সামনে রেখে ঢাকার প্রবেশমুখে অনেক যাত্রীর মোবাইল ফোন চেক করতে দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রাত থেকে রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) সকালে আব্দুল্লাহপুর চেকপোস্ট থেকে ফকরুল হাসান নামে একজনকে আটক করা হয়।
তিনি টঙ্গী থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন। তার মোবাইল ফোনে বিএনপির সমাবেশের ছবি পাওয়া গেছে বিধায় আটক করা হয় তাকে। তবে তিনি ব্যবসার কাজে ঢাকা যাচ্ছিলেন বলে দাবি করেন।
এদিকে শুক্রবার সকালে শান্তিনগর মোড় থেকে পল্টন পর্যন্ত সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বেলা ১১:২৫
শান্তিনগর মোড় থেকে পল্টন পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ
শান্তিনগর মোড় থেকে পল্টন পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গাজীপুর থেকে আসা বাসগুলোকে ঘুরে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
সকাল ১০:৩০
রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছে পুলিশ
আজ (২৮ জুলাই) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিশাল সমাবেশকে সামনে রেখে রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতে তল্লাশি অভিযান জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শুক্রবার সকালে গাবতলীতে চেকপোস্ট বসায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সদস্যরা। ডিউটিতে থাকা র্যাব কর্মীরা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, যেকোন যানবাহনকে সন্দেহজনক মনে হলেই তারা সেটি থামিয়ে তল্লাশি করছেন।
"আমরা সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এখানে একটি চেকপোস্ট বসিয়েছি। কোনো যানবাহন সন্দেহজনক মনে হলে সেটি থামিয়ে তল্লাশি করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। সকাল থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। কোনো বিস্ফোরক বা মাদক আছে কিনা তা আমরা খতিয়ে দেখছি। এটি কাউকে হয়রানি বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়," বলেন তিনি।
রাজধানীর আবদুল্লাহপুরেও পুলিশকে বাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করতে দেখা গেছে।
এছাড়া কিছু পুলিশ সদস্যকে সাধারণ মানুষের মোবাইল চেক করতেও দেখা গেছে। মোবাইলে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া গেলে তা জব্দ করা হচ্ছে।
আব্দুল্লাহপুর চেকপোস্ট থেকে ফকরুল হাসান নামে একজনকে আটক করা হয়। টঙ্গী থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন তিনি। তার মোবাইল ফোনে বিএনপির সমাবেশের ছবি পাওয়া গেছে। তবে তিনি ব্যবসার কাজে ঢাকা যাচ্ছিলেন বলে দাবি করেন।
পরে আরও দুজনকে আটক করা হয়। তারাও বিএনপির কর্মসূচিতে যোগ দেবেন না বলে দাবি করেন। তাদের অভিযোগ, বিএনপির কর্মসূচির ছবি তাদের মোবাইলে পেয়ে পুলিশ তাদেরকে আটক করে।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উত্তরা পূর্ব থানার ওসি নাসির বলেন, এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া সেলকে জানানো হবে।
বিষয়টি নিয়ে পুলিশের মিডিয়া বডির সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রাত ৯টা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মধ্য দিয়ে রাজধানীর প্রবেশদ্বার আমিনবাজারে জোরদার তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। এর ফলে ঢাকাগামী লেনে যানবাহন চলাচল ধীরগতির হয়ে পড়ে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সাভারের আমিনবাজারে ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের বাইরে হাই অ্যালার্টে ছিলেন জেলা পুলিশ সদস্যরা। পরে রাতে পুলিশ ঢাকাগামী লেনে ব্যারিকেড বসিয়ে যানবাহন তল্লাশি শুরু করে।
সন্দেহজনক যাত্রীদের ব্যাগ চেক করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা গেছে পুলিশকে।
আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত আমিনবাজার ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ভেতরে ৬০ জনেরও বেশি মানুষকে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। পরে সাভার থানায় যাওয়ার পথে আটকদের প্রিজন ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশির পর আমিনবাজার ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ভেতর আটক হওয়া বেশ কয়েকজনের সাথে টিবিএস কথা বলে।
সেখানে আটক থাকা ফজলুল হক নামে এক ব্যক্তি বলেন, "আমরা দুইজন সকালে ব্যবসার কাজে মালামাল কিনতে চন্দ্রা থেকে একটি হাইয়েস মাইক্রোবাসে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। গাড়ি চেকপোস্টে আসলে পুলিশ থামিয়ে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।"
"পুলিশ পরে মোবাইল চেক করে আমার ফেসবুকে বিএনপির সমাবেশের একটি ছবি পাওয়ায় আমাদের দুজনকে এখানে আটকে রেখেছে, কোথাও যেতে দিচ্ছে না। মোবাইলও নিয়ে গিয়েছে," বলেন তিনি।
রংপুর থেকে ঢাকায় পথে যাওয়ার পথে চেকপোস্ট থেকে আটক হওয়া সোহেল নামে এক ব্যক্তি বলেন, "ব্র্যাকে একটি ট্রেনিং থাকায় আমরা দুই বন্ধু একটি বাসে রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হই। সকালে চেকপোস্টে আসলে পুলিশ কোথায় যাচ্ছি জানতে চায়। পরে আমার কাছে পরিচয়পত্র না থাকায় পুলিশ আমাকে আটক করে। আমার সাথে থাকা ব্যক্তির কাছে ব্র্যাকের কার্ড থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।"