খুমেক শিক্ষার্থী-ঔষধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ: ধর্মঘট করে দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষার্থীদের সাথে ঔষধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ধর্মঘট পালন করে দু'পক্ষ পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেছে।
বুধবার বেলা এগারোটা থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সকল শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একই সময় হাসপাতালের সামনের ব্লু স্কোয়ার মার্কেটের ওষুধ দোকানদাররা বিক্ষোভ শুরু করেন।
এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, "বহিরাগতরা বলপূর্বক আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। হামলার পর পুলিশ ঘোষণা দিয়েছিল রাত বারোটার মধ্যে সকল আসামিদের গ্রেফতার করা হবে। ঘটনার পরের দিন আমরা থানায় মামলার এজাহার নিয়ে গেলেও পুলিশ তা গ্রহণ করে নি। আমরা সুষ্ঠু বিচার নেওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরব না।"
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে বেলা ১২টার দিকে সাক্ষাৎ করেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ।
উপস্থিত হয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, "হামলার পর থেকে তোমাদের সাথে আমরা আছি। তোমাদেরকে চিকিৎসা করিয়েছি। থানায় মামলা করার জন্য তোমাদের সাথে ছিলাম। পরবর্তীতে তোমরা যেভাবে আমাদেরকে চাইবে সেভাবে তোমাদের সাথে থাকবো।"
গত সোমবার রাত ৯টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সামনে অবস্থিত ব্লু স্কোয়ার মার্কেটে শিক্ষার্থীদের সাথে ঔষধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, ওই মার্কেটের মেসার্স বিপ্লব মেডিসিন কর্ণার নামের একটি ওষুধের দোকানে ব্যাচ কে-৩১ এর এক শিক্ষার্থী ঔষধ কিনতে গিয়েছিলেন। তবে দোকানদার অতিরিক্ত মূল্য চাওয়ায় তিনি প্রতিবাদ করেন। তখন ওই শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করা হয়। পরবর্তীতে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে দোকানদাররা জড়ো হয়ে তাদের উপর হামলা করেন। তাতে ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।
অন্যদিকে ওষুধ বিক্রেতারা দাবি করেন, ওই শিক্ষার্থী ৭০ টাকার ওষুধ কেনার পর তিনি মোট দামের উপর ১০ শতাংশ কমিশন চেয়েছিলেন। তবে দোকানদার ওই কমিশন দিতে রাজি না হলে দু'জন বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে মেডিকেল কলেজের হল থেকে শিক্ষার্থীরা এসে ওই দোকানে ভাঙচুর চালায়।
ওষুধ ব্যবসায়ীদের সাথে শিক্ষার্থীদের কয়েক দফায় সংঘর্ষ চলার পর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এদিকে ঘটনার পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন।
ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক ডা. জ্যোতির্ময় বৈরাগী বলেন, "আমাদের উপর যারা হামলা করেছে তারা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে।"
অন্যদিকে হামলার পর আপাতত দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাসপাতালে সামনের ওষুধ ব্যবসায়ীরা।
সেখানে দোকান রয়েছে ঔষধ ব্যবসায় সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক জিল্লুর রহমান জুয়েলের। তিনি বলেন, "হামলার ঘটনায় আমাদের নয়জন ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা একটি দোকানের অভ্যন্তরে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। অন্যান্য দোকানের শাটার ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তারা থানায় মামলা করলে আমরাও পাল্টা মামলা দায়ের করব।"
তিনি আরও বলেন, "যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়ানোর জন্য আমাদের দোকানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আজ বিকেলে এই ঘটনাটি নিয়ে আলোচনায় বসতে চেয়েছেন। সেখানে বসে আমরা মীমাংসার চেষ্টা করব।"