ভাগনার বিদ্রোহের পর এই প্রথম প্রকাশ্যে সের্গেই সুরোভিকিন
রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদল ভাগনার গ্রুপের বিদ্রোহের পর জনসমক্ষে দেখা যাচ্ছিলো না রুশ জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনকে। এবার অনলাইনে প্রকাশিত একটি ছবিতে তাকে দেখা গেছে বলে খবর বিবিসির। গত মাসে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া ভাগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে মনে করা হয় সের্গেই সুরোভিকিনকে।
বিদ্রোহে জড়িত থাকার সন্দেহে জেনারেল সুরোভিকিনের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল। কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার সাবেক কমান্ডারের একটি ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়েছে।
রাশিয়ার সুপরিচিত গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব কেসেনিয়া সোবচাক সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে সুরোভিকিনের নতুন ছবিটি প্রকাশ করেন। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, "জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিন জীবিত ও সুস্থ আছেন। তিনি এখন নিজের পরিবারের সঙ্গে আছেন। ছবিটি আজকে তোলা।"
তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি স্বাধীনভাবে ছবিটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
ছবিতে দেখা যায়, সানগ্লাস ও ক্যাপ পরা এক ব্যক্তি হাঁটছেন, তার হাত ধরে পাশাপাশি হাঁটছেন লাল চুলের এক নারী, যিনি দেখতে সুরোভিকিনের স্ত্রী আন্নার মতো।
এদিকে, রুশ সাংবাদিক আলেক্সি ভেনেডিকতভও আলাদাভাবে টেলিগ্রামে লিখেছেন, "জেনারেল সুরোভিকিন তার পরিবারের সঙ্গে বাড়িতে আছেন। তিনি এখন ছুটিতে আছেন এবং রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত আছেন।"
গত ২৩ ও ২৪ জুন প্রিগোজিনের নেতৃত্বে পুতিনের নেতৃত্বাধীন রুশ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ভাগনার গ্রুপ এবং মস্কো অভিমুখে মার্চ করার হুমকি দেয়।
গত ২৩ আগস্ট মস্কোর কাছে এক বিমান দুর্ঘটনায় প্রিগোজিন এবং তার সফরসঙ্গী আরো নয়জন নিহত হন। এ ঘটনা নিয়ে এখনও নানা জল্পনা চলছে। ব্যর্থ বিদ্রোহের পরে রাশিয়ার অনেক পর্যবেক্ষকই প্রিগোজিনকে 'আ ডেড ম্যান ওয়াকিং' বলে অভিহিত করেছিলেন; অর্থাৎ প্রিগোজিনের হাতে যে আর বেশিদিন সময় নেই তা অনুমান করেছিলেন তারা।
জেনারেল সুরোভিকিনকে শেষবার প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল বিদ্রোহের সময়ের একটি ভিডিওতে, যেখানে তিনি ভাগনার বাহিনীর সৈন্যদের বিদ্রোহ থামানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন।
এর কয়েকদিন পরে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয় যে সুরোভিকিনকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু তিনি আসলে কোথায় আছেন সে সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য নিশ্চিত করা হয়নি।
সুরোভিকিন ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ইউক্রেনে যুদ্ধরত রুশ সামরিক ইউনিটের কমান্ডার ইন চিফের দায়িত্ব পালন করেন। এরপরে তাকে এই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
সিরিয়ায় রুশ অভিযানের সময় নিষ্ঠুরতার জন্য পরিচিতি পান সুরোভিকিন। সেখানে তিনি 'জেনারেল আর্মাগেদন' নামে পরিচিত ছিলেন।