শীতলক্ষ্যা—আমার জন্মের নদী
শীতলক্ষ্যা—আমার জন্মের নদী। আমি নদীর সন্তান। আজও ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে সবার আগে আমি তার মুখটি দেখি। সে মুখ আজ বড়ই করুন, মলিন, মৃত্যুভয়ে আতঙ্কিত। অথচ এমনটি কি হওয়ার কথা ছিল? অথচ এই পবিত্র জলধারা জলেপ্রাণে কতটাই না সমৃদ্ধ ছিল। সে ছিল কৃষকের চোখের মণি, জেলেদের জীবিকার অবলম্বন, পথিকের পথ, বণিকের অবলম্বন। নিয়ত পালতোলা নৌকার সারি ঘুরে বেড়াত তার বুকে। গয়না নৌকায় বালিশ পেতে দূরদূরান্তে যেত মানুষ। পেটমোটা বালুর নাওয়ের মাঝিরা গুণ টেনে এগিয়ে যেত ভাটিয়ালি সুরে। জেলেদের বেল নাউ, কোষা আর ছিপ নৌকার নিয়ত চলাচল ছিল লক্ষ্যার বুকে। আর মাছের সমৃদ্ধি সে তো বলে কয়ে শেষ করার নয়। মাছ ধরার কত রকমের জাল ছিল। বেড় জাল, ঢোড় জাল, মই জল, খ্যাপ জাল, খড়া জাল আরও কত কী। শীতলক্ষ্যার রুপালি চাপিলা ছিল খুবই বিখ্যাত। বিশেষ জালের সাহায্যে বাজনা বাজিয়ে সেই চাপিলা ধরা হতো। পেশাদার বড়শেলরা গভীর জলে লড় বড়শি (হাজার ফুটের ওপর লম্বা সুতোতে বাঁধা শত শত বড়শি) পেতে রাখত। তাতে বাইম, রিঠা, ঘাউরা, শিলং, গুজি, বেউড়সহ নানান জাতের মাছ ধরা পড়ত। নদীর বুকে কইজাল পেতে ধরা হতো ট্যাকা মাছ, দেখতে অনেকটা রূপচাঁদার মতো, এর চাহিদা যেমন ছিল, মূল্যও ছিল চড়া। নজর কাড়া রানি মাছ প্রায়ই বেলজালে উঠে আসত। বর্ষাকালে বিশাল আকারের জোড়া ধনুকের মতো জাল ফাঁক করে পেতে রাখা হতো নদীর গভীরে। ইলিশের ঝাঁক জালে ঢুকে পড়লে রশিতে শব্দ হতো। আর সঙ্গে সঙ্গে জেলেরা রশি টেনে জাল তোলা শুরু করত। আহা লক্ষ্যার ইলিশ, সে কী স্বাদ ছিল তার! সেই গভীর পানির জালে মাঝেমধ্যে ধরা পড়ত অতিকায় কোরাল। অবশ্য বিশাল আকারের মাছ ধরার জাল ছিল একটু অন্য ধরনের; যার মাঝখানের ফাঁকগুলো ছিল অন্য জালের তুলনায় বেশ বড়। আড়াআড়িভাবে সেই জাল পেতে রাখা হতো নদীতে। এমন সব রুই, কাতল কিংবা বাগাড় ধরা পড়ত সেই জালে, যা এখন আর চোখেও পড়ে না। দুজন জেলে বাজারের উদ্দেশে ছুটছে, কাঁধে বাঁশ, তাতে ঝুলছে এত বিশাল টকটকে লাল রুই, যার লেজ মাটি ছুঁয়ে যাচ্ছে। এমন দৃশ্য আর কি দেখতে পাবে লক্ষ্যাপারের মানুষ?
আহা। শীতলক্ষ্যার বুকে ঘুরে বেড়ানো সেই সব দিন। বাবা আমাকে সঙ্গে করে নৌকা নিয়ে বুনো হাঁস শিকারে যেতেন। মাঝি দাঁড় বেয়ে সামনে এগিয়ে যেত। দুপাশের দৃশ্যে মন শীতল হয়ে যেত। একদিকে ভাওয়ালের উঁচু-নিচু জঙ্গুলে প্রান্তর, অন্য পাশে চরসিন্দুরের সবুজ চরাঞ্চল—গম, বাদাম, মিষ্টি আলু, কুমড়া, খিরা আরও কত ফসলের সমারোহ। এগিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়ত আরও বিচিত্র কত দৃশ্য। নদীর তীরে বসবাসকারী বেদে সম্প্রদায়ের কিছু মানুষকে মূর্তির মতো টেঁটা হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যেত নৌকার সামনে। ওরা চিতল শিকারি। চিতল মাছ যেখানে থাকে, সেখানে বেশ কিছুক্ষণ পরপর ওরা চিৎ হয়ে ভেসে ওঠে। দুর্দান্ত লক্ষ্যে শিকারি এই সুযোগটাই নিত। ভেসে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শিকারির টেঁটার আঘাতে আটকা পডত চিতল। আর এক শ্রেণির বড়শেলদের বসে থাকতে দেখা যেত কোষা নিয়ে, যাদের শিকার ছিল ডিমওয়ালা আইড়। সেই আইড় মাছ ধরার জন্য ওরা এক বিশেষ কৌশলের আশ্রয় নিত। আইড় মাছ নদীর তলদেশে গর্ত করে ডিম দেওয়ার জন্য। শিকারিরা বাঁশের লগির সাহায্যে সেই গর্ত খুঁজে বের করত। আইড় তার গর্তে কোনো ধরনের ময়লা আবর্জনার অস্তিত্ব পছন্দ করত না। পাতা কিংবা খড়কুটোর অস্তিত্ব টের পেলে, সে লেজ দিয়ে সেটাকে গর্তের বাইরে ফেলে দিত। শিকারিরা এখানেও সুযোগ নিত। গর্তের কাছাকাছি নৌকা বেঁধে ঝুমকো বড়শি ফেলে রাখা হতো গর্তের ভেতর। আইড় এসে ওটাকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে ময়লা-আবর্জনা মনে করে সরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ত। একের পর এক লেজের আঘাত পড়ত ঝুমকো বড়শিতে। আর ওদিকে ছিপ হাতে বসে থাকা শিকারির সামনের ফিতনায় অস্থির নাড়াচাড়া শুরু হয়ে যেত। আর তখনই সময় বুঝে শিকারি ছিপ হিট করত। সাথে সাথে ঝুমকোর এক বা একাধিক বড়শি আইড়ের লেজে বিদ্ধ হত। প্রচণ্ড ব্যথায় দৌড়ে চলত আইড়। এদিকে চালাক শিকারি হুইল থেকে সুতো ছেড়ে দেয়। আবার কিছুক্ষণ পর সুতো টেনে কাছে আনে। এভাবে খেলিয়ে খেলিয়ে দুর্বল করে একসময় তাকে কোষায় আনা হতো। এভাবে ডিমওয়ালা আইড় মাছ শিকার আমার কাছে অমানবিক লাগত। পরবর্তী সময়ে এ বিষয়টা রোধ করার চেষ্টা করেছি।
সাবানতলা তারাগঞ্জ পেরিয়ে আমাদের নৌকা এগিয়ে চলত লাখপুরের বালুচরের উদ্দেশে। ওখানকার চখাচখি আর বুনো রাজহাঁস ছিল বাবার প্রিয় শিকার। আমাদের সঙ্গে দুপুরের খাবার থাকলেও কোনো পানীয় জল থাকত না। দুপুরের খাবার খেয়ে মাঝিসহ আমরা সবাই শীতলক্ষ্যার সুমিষ্ট জল পান করতাম। সেই জলের স্বাদ আজও যেন ঠোঁটে লেগে আছে।
চলতি জলপথে মাঝেমধ্যে জেলেদের খেও কাটতে দেখা যেত। 'খেও' মাছ শিকারের এক বিশেষ পদ্ধতি। নদীর একটি বিশেষ অংশজুড়ে একের পর এক নৌকাভরে গাছের ডাল পালায এনে ফেলা হয়। কিছুদিন গেলে জলের নিচে সেই ডালপালাময় জায়গাটি হয়ে ওঠে নানা প্রজাতির মাছের নিরাপদ আশ্রয়। তারপর একসময় জেলেরা খুব সাবধানে গোটা জায়গাটিকে জাল দিয়ে ঘিরে ফেলে। একের পর এক ডালপালা তোলার পাশাপাশি জালের পরিধি ছোট করে আনা হয়। এভাবে একসময় সমস্ত মাছ তাদের জালের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এমন কোনো মাছ ছিল না, যা খেও-এ পাওয়া যেত না। বড় সাইজের মাছগুলোকে খেওয়ের পাশে খুটিতে বেঁধে জিইয়ে রাখা হতো। তখন বিশেষ ধরনের চিংড়ি পাওয়া যেত, যার একেকটার ওজন ছিল ২ কেজির মতো। স্থানীয় ভাষায় 'কুইয়ারী ইছা' বলত। সেই চিংড়ি বাবার খুব পছন্দ ছিল। তাই আমাদের নৌকা দেখলেই খেওকাটা জেলেরা চিংড়ি তুলে দিত। পরে ওরা বাবার চেম্বার থেকে টাকা নিয়ে যেত।
নৌকায় যেতে যেতে বাবা প্রায়ই আদি শীতলক্ষ্যার গল্প শোনাতেন, 'তুমি কি জানো, একসময় বর্ষাকালে লক্ষ্যায় কুমির আসত। একবার কাঁঠালিয়া ঘাট থেকে একটা ছেলেকে কুমির ধরে নিয়ে যায়। ঘটনাটা ১৯৪৩ সালের। পরে তোমার দাদা ওই কুমিরটাকে গুলি করে মারেন। তোমার ছোট কাকা একবার কুমিরের হাতে প্রায় মরতে বসেছিল, পাড়ের ওপর থেকে শুকনো কাঠের মতো কুমিরটাকে ভেসে আসতে দেখে একজন। সাথে সাথে সে চিৎকার করে উঠলে তোমার ছোট কাকা দ্রুত জল ছেড়ে উঠে আসে। আমি তখন ক্লাস টেনের ছাত্র। খবর পেয়ে সাথে সাথে বন্দুক হাতে নদীর পাড়ে গিয়ে হাজির হয়েছিলাম। তবে কুমিরটাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। নদীতে তখন আরও আসত করাত মাছ। করাতের মতো ঠোঁট দিয়ে নদীতে গোসল করতে নামা মানুষের পা কেটে ফেলত। এসব কারণে নদীর অনেক জায়গায় বাঁশের বেড়া দিয়ে মানুষ গোসল করত। বা-ই হোক, নামে আশ্চর্য এক মাছ ছিল শীতলক্ষ্যায়। গভীর রাতে সে চরের ফসল খেতে উঠে আসত খাদ্যের সন্ধানে। খিরা, শসা, হলুদ, সরিষা ছিল তার খুবই প্রিয় খাদ্য। খাদ্যের সন্ধানে নদী থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে পর্যন্ত চলে যেত সে। কোনো কারণে রেগে গেলে সাপের মত ফোঁসফোঁস শব্দ করে উঠত। এরা খুবই শক্তিশালী ছিল। লক্ষ্যায় চাই পেতে মাছ ধরার বাতিক ছিল আমার, বা হোক, তখন চাইয়ে ঢুকে মাছ খেয়ে চাই ভেঙে বেরিয়ে যেত। এতেই বোঝা যেত কতটা শক্তি ওদের শরীরে।' বাবার বলা এসব কাহিনি আমাকে এক স্বপ্নের জগতে নিয়ে যেত।
আমাদের নৌকা নাখপুরের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় দুপাশে প্রায়ই দুটি বিশেষ প্রাণীকে ভেসে উঠতে দেখা যেত। একজন শীতলক্ষ্যার কিংবদন্তি পাতাল নাগিনী, তিরের ফলার মতো তার চিকন মাথাটা একটু পরপর জলের ওপর ভেসে উঠত। জেলেদের কাছে সে ছিল মা মনসার প্রতিনিধি, পবিত্র এক সাপ। জালে উঠে এলেও এদের কেউ আঘাত করত না কিংবা মারত না। জেলেরা বিশ্বাস করত, এদের কেউ আঘাত করলে গলায় রক্ত উঠে মারা পড়বে। পাতাল নাগিনীর পাশাপাশি নৌকার কাছে প্রায়ই ভেসে উঠত শুশুক বা শিশু। দেশের মিঠাপানির একমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণী। সোজা হয়ে ভেসে উঠে বাঁকা হয়ে ডুবে যাওয়ার সময় এরা 'হুম' বা 'হুস' শব্দ করে নিশ্বাস নিত। এ জন্য অনেকের কাছে ওরা পরিচিত ছিল হুমমাছ নামে।
বাবাকে আমি জিজ্ঞেস করতাম, 'এই নদীর নাম শীতলক্ষ্যা কেন হলো?' তিনি বলতেন, 'শীতলক্ষ্যার নামকরণ নিয়ে নানা কাহিনি রয়েছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, গ্রীষ্ম বর্ষা সব ঋতুতেই এই নদীর পানি থাকে শীতল। তাই এর নাম শীতলক্ষ্যা।'
আমাদের নৌকা তখন লাখপুরের বিখ্যাত ডাকবাংলোর কাছ দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল। লর্ড লিটন একবার এই বাংলা পরিদর্শনে এসেছিলেন। নদীতীর থেকে ডাকবাংলো পর্যন্ত লালগালিচা বিছিয়ে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। নদীর দুপাশে তখন হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল বিখ্যাত ইংরেজ শাসককে একনজর দেখার জন্য।
লাখপুর বাজারকে একদিকে রেখে আমাদের নৌকা ভিড়ল বালুচরের পাশে। এই লাখপুর বাজার একসময় বিখ্যাত ছিল পাট বেচাকেনার জন্য। শত শত পাটবোঝাই নৌকা বাঁধা থাকত ঘাটে। একটু পরপর গাছ ছেড়ে রওনা দিত নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে। তখন মূলত পাট ব্যবসায়ীরাই ছিল এ অঞ্চলের প্রধান ধনী ব্যক্তি।
চরে নেমে বাবা ব্যস্ত হয়ে পড়লেন শিকারের সন্ধানে। তার চোখ দুটি বাজপাখির মতো শিকার খুঁজে চলল। কিন্তু বুনো রাজহাঁস সেদিন তার ভাগ্যে মিলল না। দুটো চখা আর কিছু সরালি শিকার শেষে আমরা নৌকায় উঠে আবার বাড়ির পথ ধরলাম। নৌকার গতির সঙ্গে যেন পাল্লা দিয়ে সূর্য তখন অস্তমিত হতে চলেছে ভাওয়াল গড়ের পশ্চিমে। আরও পরে, আঁধার যখন ঘনিয়ে এল, আমরা তখন বাড়ির খুব কাছাকাছি। জেলে রমণীরা তখন ঘাটে এসে হাজির হয়েছে অঞ্জলি দিতে। একের পর এক প্রদীপ ভাসিয়ে দিল নদীর বুকে। ঢেউয়ের দোলায় নাচতে থাকা অগ্নিশিখাগুলোকে অদ্ভুত সুন্দর লাগছিল। নদী ওদের কাছে মায়ের মতো, নদী দেবী, নদী জীবিকার অবলম্বন। তাই তো রোজ সন্ধ্যায় ছুটে আছে তাকে সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে।
আহা! কোথায় আজ সেই স্বচ্ছ সলীলা স্রোতোস্বিনী। অথচ আমি আজও তার পাশে ঘুমাই। গভীর রাতে ঘুমের ঘোরে ডুকরে কেঁদে ওঠা শীতলক্ষ্যার কান্নার আওয়াজ টের পাই। তার বুকের জল আজ রূপান্তরিত হয়েছে বিষেল তরলে। ঘোলা জলের ছোবলে একের পর এক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে তার সন্তানেরা। মাতৃরূপী শীতলক্ষ্যা আজ মৃত্যু আর ধ্বংসের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। কিন্তু কেন?
শীতলক্ষ্যা নদীর জন্ম মূলত গাজীপুর জেলার টোক নামক স্থানে। সেখানে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উৎপন্ন হয়ে 'বানার' নামে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে লাখপুর নামক স্থানে শীতলক্ষ্যা নাম ধারণ করেছে। এরপর গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ—এই তিন জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কলাগাছিয়ার কাছে ধলেশ্বরী নদীতে পড়েছে।
কৃষিসভ্যতার বিলয়, নগর ও শিল্পসভ্যতার আগ্রাসন এবং সম্প্রসারণ নদীদূষণের মূল কারণ। প্রাণের নদী শীতলক্ষ্যা এভাবেই আক্রান্ত হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে দূষণের শিকার সে। মালামাল পরিবহনের সুবিধার্থে দেশের বেশির ভাগ শিল্পকারখানায়ই গড়ে উঠেছে নদীর তীরে। শীতলক্ষ্যার দুপাড় জুড়েও রয়েছে শত শত শিল্পকারখানা। রাসায়নিক শিল্পবর্জ্য সরাসরি ফেলা হচ্ছে নদীতে। কেউ ফেলে রাতের আঁধারে, কেউ দিনের আলোতে। এদের কারও কারও জল শোধনাগার অর্থাৎ ইটিপি প্লান্ট থাকলেও সঠিক ব্যবহার নেই।
এ ছাড়া ঢাকা এবং গাজীপুর জেলার বিপুল পরিমাণ শিল্প এবং আবাসিক তরলবর্জ্য বিভিন্ন ড্রেনলাইন এবং খালের মাধ্যমে শীতলক্ষ্যায় এসে পড়ে।
এসবের ফলে শীতলক্ষ্যা আজ মরতে বসেছে। নদীদূষণ সবচেয়ে তীব্র হয়ে ওঠে গ্রীষ্মের সময়। তখন নদীতে পানি কম থাকে, সহজেই আক্রান্ত হয় বিভিন্ন মাছ এবং জলজ প্রাণী। প্রতিবছরের এ সময়টাতে শীতলক্ষ্যার বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ মড়ক দেখা দেয়। যেটুকু অবশিষ্ট আছে, তা থেকেই নানা জাতের মাছ আর জলজ প্রাণীর মৃতদেহ ভেসে ওঠে। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, বিষাক্ত জল কেড়ে নেবে সকল প্রাণ। তবে এখনো সময় আছে, নদীদূষণ রোধে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি দরকার জনসচেতনতা। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। অর্থাৎ বাংলাদেশের মা হচ্ছে নদী। আর মা যদি দুর্বল হয়ে পড়ে, তাহলে তার সন্তানের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসা সময়ের ব্যাপার মাত্র। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত, নিজেদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে নদীদূষণ রোধে এগিয়ে আসা।