করোনায় একদিনে আরও ৩৫ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ২,৪২৩ জন
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে প্রাণঘাতি এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৭৮১ জনে দাঁড়াল।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৪২৩ জনের শরীরে শনাক্ত হয়েছে ভাইরাসটি। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৭ হাজার ৫৬৩ জনে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান।
মৃত্যু বিশ্লেষণে পুরুষ ২৯ জন এবং নারী ৬ জন।
বিভাগ অনুযায়ী মৃতদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে- ঢাকা বিভাগে ২১ জন, চট্টগ্রামে ৯ জন, সিলেটে ২ জন, বরিশালে ১ জন, রাজশাহীতে ১ জন, খুলনায় ১ জন মারা গেছেন।
এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ২২ জন, বাড়িতে মারা গেছেন ১২ জন এবং ১ জনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে।
মৃত ৩৫ জনের বয়স:
- ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী: ৩ জন।
- ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী: ১ জন
- ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী: ৩ জন।
- ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী: ১৪ জন।
- ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সী: ১১ জন।
- ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়স: ১ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৩ হাজার ৭৮৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৪টি নমুনা। দেশের ৫০টি পরীক্ষাগারে এই নমুনাগুলো পরীক্ষা করা হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫৭১ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ১৬১ জন।
এপর্যন্ত শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ০৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ১৮ মার্চ।
এক নজরে বাংলাদেশের করোনাচিত্র:
- মোট আক্রান্ত: ৫৭ হাজার ৫৬৩ জন।
- মারা গেছেন: ৭৮১ জন।
- মোট সুস্থ: ১২ হাজার ১৬১ জন।
- মোট নমুনা পরীক্ষা: ৩ লক্ষ ৫৮ হাজার ২৭৭টি।
ব্রিফিং এ অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মাস্ক পরা অত্যাবশ্যক। সাধারণ কাপড়ের একটি মাস্ক দিয়েই জীবাণুযুক্ত হাঁচি-কাশি ও ড্রপলেট প্রতিরোধ করতে পারি। বাড়িতে তৈরি কাপড়ের মাস্ক পুনর্ব্যবহারযোগ্য, কোনোপ্রকার আকারের পরিবর্তন ছাড়াই এই মাস্কটি বারবার ভালো করে ধুয়ে ব্যবহার করা যায়।
যারা নিজেরা মাস্ক পরতে বা খুলতে পারেন না যেমন প্রতিবন্ধী বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী যারা, তারা ছাড়া সবাইকে মাস্ক পড়ার নির্দেশ দেন তিনি।
এছাড়াও বাড়িতে অবস্থান করছেন এমন ব্যক্তিরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। সেক্ষেত্রে বাইরে থেকে যেসব সদস্য বাড়িতে ফিরবেন তারা যেন ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে এবং মাস্ক পরে বয়স্ক সদস্যের সঙ্গে দেখা করেন- সে পরামর্শ দেন ডা. নাসিমা সুলতানা।
এছাড়াও তিনি জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তর 'সিডিসি-কেয়ার ফর অল' সেবা চালু করেছে। এই সেবার অধীনে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে তাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য সরকার ইতোমধ্যেই একটি বিশেষ ওয়েবসাইট (www.corona.gov.bd) চালু করেছে।
এদিকে, ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা পর্যন্ত বৈশ্বিক এ মহামারিতে সারা পৃথিবীতে ৬৫ লাখ ৭৫ হাজার ১৭৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৩ জন সুস্থ হয়ে উঠলেও প্রাণ গেছে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬০ জনের।
সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে যেসব দেশে:
- যুক্তরাষ্ট্র: ১ লাখ ৯ হাজার ১৪২ জন।
- যুক্তরাজ্য: ৩৯ হাজার ৭২৮ জন।
- ইতালি: ৩৩ হাজার ৬০১ জন।
- ব্রাজিল: ৩২ হাজার ৫৬৮ জন।
- ফ্রান্স: ২৯ হাজার ২১ জন।
- স্পেন: ২৭ হাজার ১২৮ জন।
- মেক্সিকো: ১১ হাজার ৭২৯ জন।
- বেলজিয়াম: ৯ হাজার ৫২২ জন।
- জার্মানি: ৮ হাজার ৬৯৯ জন।
- ইরান: ৮ হাজার ১২ জন।