আনসার বাহিনীকে অপরাধী আটকের ক্ষমতা দিয়ে সংসদে বিল উত্থাপন
'আনসার ব্যাটালিয়ন বিল, ২০২৩'- এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে অপরাধীকে আটক করার ক্ষমতা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে আনসার সদস্যদের। বিলটি নিয়ে বিরোধীরা আপত্তি করলেও, সেটি জাতীয় সংসদে তোলা হয়েছে।
বিলটি পাস হলে জাতীয় নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের সময় নতুন ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ পাবেন আনসার সদস্যরা।
আজ সোমবার (২৩ অক্টোবর) সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিলটি উত্থাপনের অনুমতি চাইলে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম আপত্তি জানান। তবে তাঁর আপত্তি কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
ফখরুল ইমাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তার জন্য আনসার বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু, এই বিলের সাত ও আট ধারা অনুযায়ী, পুলিশ যা করে, আনসার বাহিনীও তা করতে পারবে। পুলিশের মত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা দেওয়া আছে। বিলটা এভাবে পাস হলে পুলিশের সমান্তরাল ফোর্স হয়ে যাবে আনসার বাহিনী। তিনি পুলিশ ও আনসারকে মুখোমুখি না করে পাশাপাশি রাখার অনুরোধ করে বলেন…নাহলে সমূহ বিপদ।
জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ এলে আনসার বাহিনীর সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। সামনে নির্বাচন, এতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করতে হলে– পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যদেরও মোতায়েন করতে হবে। নির্বাচনের সময় যে পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য প্রয়োজন, পুলিশ বাহিনীতে এত সদস্য নেই। এপর্যন্ত ৬ লাখ আনসার নিয়োগ করতে হয়েছে। নির্বাচনের সময় সমপরিমাণ আনসার বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের সমান্তরাল বাহিনী হিসেবে আনসারকে তৈরির পরিকল্পনা সরকারের নেই। সেনাবাহিনীকে সহযোগিতার জন্য পাহাড়ে আনসার রয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বাহিনী তৈরির ইচ্ছে নেই। আনসার বাহিনী অনেক কাজ করছে, তাদের পরিচালনার জন্যই আইন করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বিলে কোনো সাংঘর্ষিক বিধান থাকলে তা সংসদীয় কমিটিতে সংশোধনও হবে বলে জানান মন্ত্রী।
পরে কন্ঠভোটে ফখরুল ইমামের আপত্তি নাকচ হয়ে যায়। ধারনা করা হচ্ছে, বিলটি চলতি অধিবেশনেই পাস হবে। কারণ বিলটি মাত্র তিন দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
বিলটিতে আনসার বাহিনীর ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিদ্রোহের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
প্রস্তাবিত 'আনসার ব্যাটালিয়ন বিল, ২০২৩' এর ৮ ধারায় বলা হয়েছে, 'কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে অপরাধীকে আটক করে অবিলম্বে পুলিশের কাছে সোপর্দ করবে এবং ক্ষেত্রমতো জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে আটক ব্যক্তির দেহ তল্লাশি; কোনো স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি এবং মালামাল জব্দ করতে পারবে।'